চট্টগ্রাম, জুলাই ২৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া তাড়াহুড়ো করে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনা সরকারের উচিত হবে না বলে মনে করেন আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন। (বিস্তারিত)
দেশের সংবিধানের অন্যতম এই প্রণেতা বলেন, "সংবিধান একটি পবিত্র দলিল। এতে হঠাৎ করে কিছু করা ঠিক হবে না। সামরিক শাসনামলে হঠাৎ করে সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী আনা হয়েছিল বলেই জনমত এর বিরুদ্ধে গেছে এবং আদালতও তা বাতিল করেছে।"
শনিবার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে ইণ্টারন্যাশনাল বিজেনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ আয়োজিত 'সিটি গভর্ন্যান্স ও বেসরকারি খাতের উন্নয়ন' শীর্ষক এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, "পঞ্চম সংশোধনীর বিষয়ে আদালতের এই রায়ের ফলে সংবিধানের বিতর্কিত বিষয়গুলো ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। ফলে সংবিধানে সম্পূরক কিছু পরিবর্তন আনতে হলে তা সতর্কতা অবলম্বন করে এবং অবশ্যই জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করে আনা দরকার।"
সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়ায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপিরও সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন গণফোরাম সভাপতি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এটি একটি জাতীয় ইস্যু, এটি আদালতের রায়। একে দলীয়ভাবে না নিয়ে, কোনো প্রতিযোগিতা তৈরি না করে রাজনৈতিক দল হিসেবে এই প্রক্রিয়ায় বিএনপির অংশগ্রহণ করা উচিত।"
সংবিধানে বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে কিনা- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, বিসমিল্লাহ যে থাকবে সে সম্পর্কে ইতোমধ্যে সরকারই ঘোষণা দিয়েছে। আর রাষ্ট্রধর্ম অষ্টম সংশোধনীর ব্যাপার। এ সংশোধনীর ব্যাপারে আদালত কী নির্দেশনা দিয়েছে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।
তিনি বলেন, একাত্তরে ধর্মের নামে রাজনীতির অপব্যবহার হয়েছিল। সে ধরনের রাজনীতি আবারো দেশে চালু হোক তা দেশের জনগণ চায় না।
সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটিকে স্বাগত জানান ড. কামাল।
"এ কমিটি নিয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা করে একে বিতর্কিত করা ঠিক হবে না। সংবিধান সংশোধনে আদালতের রায়কে গুরুত্ব দেওয়া উচিত," বলেন তিনি।
বিজনেস ফোরামের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম. মনজুর আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান এবং চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ সালাম।
কর্মশালায় সংগঠনের পক্ষ থেকে সিটি কর্পোরেশনগুলোকে কার্যকর স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান, মেয়রের পদমর্যাদা মন্ত্রীর সমপর্যায়ে উন্নীত করা এবং ২০০৯ সালের সিটি কর্পোরেশন আইনে ফৌজদারি অপরাধে মেয়র ও কাউন্সিলদের বরখাস্ত করার জন্য যে বিধান রাখা হয়েছে তা বাতিলসহ ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএডি/এমসি/ডিডি/এইচএ/১৯৫৩ ঘ.