সাভারে ভবন ধসে হতাহতের ঘটনার পর জিএসপি সুবিধার জন্য কর্ম পরিবেশ ভালো করার উদ্যোগের বিষয়টি অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে সক্ষম হতে হবে বলে মনে করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা।
Published : 18 May 2013, 02:08 PM
পাশাপাশি শ্রমিকদের সংগঠন না থাকায় সাভারে ভবন ধসের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে ‘পোশাক শ্রমিকদের নিরাপদ কর্ম পরিবেশঃ অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক গণশুনানিতে মজিনা এসব বলেন।
শুনানিতে শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. ইসরাফিল আলম জানতে চান তৈরি পোশাক কারাখানার পরিবেশ ও শ্রমিকদের যে অবস্থা, সেটা কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধার (জিএসপি) ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না।
গত ২৪ এপ্রিল সাভারে ভবনধসের ঘটনায় হতাহতের পরিপ্রেক্ষিতে সংশয়ের মুখে পড়ে বাংলাদেশের জিএসপি-ভাগ্য। ঘটনার পরদিন মজিনা বলেছিলেন, এ ঘটনা জিএসপির ভাগ্যনির্ধারণীতে প্রভাব ফেলবে।
একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে রপ্তানির প্রধান পণ্য তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি বা শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা পায় না।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, ২০১১-১২ অর্থবছরের বাংলাদেশ মোট রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে মোট রপ্তানির ২১ শতাংশ (৫০০ কোটি ডলার)।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপির সুবিধায় বাংলাদেশ ২ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। এ সুবিধায় রপ্তানি হয়েছিল তামাকজাত পণ্য, খেলাধুলা সামগ্রী, কিচেন সামগ্রী ও প্লাস্টিক পণ্য।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ওই গণশুনানির আয়োজন করে। গণশুনানিতে গার্মেন্ট শ্রমিক, মালিক, ক্রেতা প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
মজিনা বলেন, শ্রমিকদের সংগঠন থাকলে সাভারে ফাটল ধরা ভবনে জোর করে তাদের ঢোকানো যেত না। শ্রমিকদের সংগঠনের অধিকার না থাকলে তারা স্বোচ্চার হতে পারবে না।
শ্রমিকরা সংগঠিত হলে শ্রম মানের উন্নয়ন হবে বলেও মনে করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, “কারখানার সনদ দেয়ার জন্য সরকার-ক্রেতা-মালিকদের সমন্বয়ে একটি পদ্ধতি তৈরি করতে হবে। আর এই প্রক্রিয়া হতে হবে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন। সনদ না থাকলে রপ্তানির অধিকার থাকবে না, এমন নিয়ম চালু করা উচিত।”
আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শ্রম আইন করে শ্রমিকের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়ে মজিনা বলেন, “বাংলাদেশে যে শ্রম আইন হচ্ছে তাতে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত হতে হবে।”