somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামালপুরের লুটেরা কামারুজ্জামান

১৪ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নানা কৌশল অবলম্বন করেও গ্রেপ্তার এড়াতে পারলেন না জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামালপুরে আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিলেন। তখন তিনি জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার নেতা ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কামারুজ্জামানের স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতা ও যুদ্ধাপরাধের বিবরণসহ তৎকালীন সংবাদপত্র, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ ও নির্যাতিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে। তিনি সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সম্পাদক ও জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক।

১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, ‘পাকিসৱানের ২৫তম আজাদি দিবস উপলক্ষে মোমেনশাহী আলবদর বাহিনীর উদ্যোগে মিছিল ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করেন আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক কামারুজ্জামান। জামালপুরের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হিসেবে আলবদর বাহিনী গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত নেতৃত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারে যে, ছাত্র সংঘকে তারা সশস্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সাধারণ তৎপরতা চালানো ছাড়াও বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য বিশেষ স্কোয়াড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। পরীক্ষামূলকভাবে সারা ময়মনসিংহ জেলার ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মীদের আলবদর বাহিনী হিসেবে সংগঠিত করে সশস্ত্র ট্রেনিং দেয়া হয়। এ সাংগাঠনিক কার্যক্রমের পরিচালক ছিলেন কামারুজ্জামান। কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে মাসখানেকের মধ্যেই ময়মনসিংহ জেলার সব ছাত্রসংঘ কর্মীকে আলবদর বাহিনীর অনৱর্ভুক্ত করা হয়।’

শেরপুরের একজন শহীদের পিতা ফজলুল হক যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কিত গণতদনৱ কমিশনকে জানিয়েছেন, তার ছেলে শহীদ বদিউজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের একদিন কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল ধরে নিয়ে গিয়ে পাকিসৱানি বাহিনীর ক্যাম্পে হত্যা করে। স্বাধীনতার পর শহীদের বড় ভাই হাসানুজ্জামানের দায়ের করা মামলায় কামারুজ্জামান অন্যতম আসামি ছিলেন।

শেরপুরের শহীদ গোলাম মোসৱফার ভাই শাহজাহান তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের ২৪ আগস্ট আলবদররা গোলাম মোসৱফাকে শেরপুর শহরের সড়ক থেকে ধরে নিয়ে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। শেরপুর শহরের সুরেন্দ্রমোহন সাহার বাড়িটি দখল করে আলবদররা তাদের ক্যাম্প বানিয়েছিল। সে ক্যাম্পে গোলাম মোসৱফাকে ধরে নিয়ে আলবদর তার গায়ের মাংস ও রগ কেটে, হাত বেঁধে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় শেরী ব্রিজের নিচে। সেখানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কামারুজ্জামানের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল।

শেরপুরের জাতীয় পার্টির নেতা এমদাদুল হক হীরা জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকেই কামারুজ্জামানের সহায়তায় পাকিসৱানিরা তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেখানে তারা পাঁচটি বাঙ্কার বানিয়েছিল। অপর একজন প্রতক্ষদর্শী মুশফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, ৭১ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে কামরুজ্জামানের নির্দেশ ও উপস্থিতিতে তিনআনি বাজারের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো লুট হয়।

শেরপুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিসৱানি সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আলবদরদের দিয়ে নিরীহ লোকজনদের ধরে আনা এবং তাদের লাশ বহন করতে ব্যবহৃত ট্রাকগুলোর একজন চালক জানিয়েছেন, কামারুজ্জামান নকলার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার বাড়ি পোড়ানোর জন্য পাকিসৱানি বাহিনীকে রাসৱা দেখিয়ে নিয়ে যান। তখন হত্যার বাড়ি থেকে কামারুজ্জামান প্রায় একশ মণ চালও লুট করেন। এ ছাড়া কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আলবদররা সাধারণ মানুষের গরু, ছাগল ধরে নিয়ে আসত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তিসহ অন্যান্য জমি-সম্পত্তি জোর কর দখল করতেন বলে জানিয়েছেন এ ট্রাক চালক। কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে সে সময় ডাকাতির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামালপুরে আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিলেন। তখন তিনি জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার নেতা ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কামারুজ্জামানের স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতা ও যুদ্ধাপরাধের বিবরণসহ তৎকালীন সংবাদপত্র, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ ও নির্যাতিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে। তিনি সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সম্পাদক ও জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক।

১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, ‘পাকিসৱানের ২৫তম আজাদি দিবস উপলক্ষে মোমেনশাহী আলবদর বাহিনীর উদ্যোগে মিছিল ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করেন আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক কামারুজ্জামান। জামালপুরের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হিসেবে আলবদর বাহিনী গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত নেতৃত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারে যে, ছাত্র সংঘকে তারা সশস্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সাধারণ তৎপরতা চালানো ছাড়াও বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য বিশেষ স্কোয়াড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। পরীক্ষামূলকভাবে সারা ময়মনসিংহ জেলার ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মীদের আলবদর বাহিনী হিসেবে সংগঠিত করে সশস্ত্র ট্রেনিং দেয়া হয়। এ সাংগাঠনিক কার্যক্রমের পরিচালক ছিলেন কামারুজ্জামান। কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে মাসখানেকের মধ্যেই ময়মনসিংহ জেলার সব ছাত্রসংঘ কর্মীকে আলবদর বাহিনীর অনৱর্ভুক্ত করা হয়।’

শেরপুরের একজন শহীদের পিতা ফজলুল হক যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কিত গণতদনৱ কমিশনকে জানিয়েছেন, তার ছেলে শহীদ বদিউজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের একদিন কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল ধরে নিয়ে গিয়ে পাকিসৱানি বাহিনীর ক্যাম্পে হত্যা করে। স্বাধীনতার পর শহীদের বড় ভাই হাসানুজ্জামানের দায়ের করা মামলায় কামারুজ্জামান অন্যতম আসামি ছিলেন।

শেরপুরের শহীদ গোলাম মোসৱফার ভাই শাহজাহান তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের ২৪ আগস্ট আলবদররা গোলাম মোসৱফাকে শেরপুর শহরের সড়ক থেকে ধরে নিয়ে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। শেরপুর শহরের সুরেন্দ্রমোহন সাহার বাড়িটি দখল করে আলবদররা তাদের ক্যাম্প বানিয়েছিল। সে ক্যাম্পে গোলাম মোসৱফাকে ধরে নিয়ে আলবদর তার গায়ের মাংস ও রগ কেটে, হাত বেঁধে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় শেরী ব্রিজের নিচে। সেখানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কামারুজ্জামানের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল।

শেরপুরের জাতীয় পার্টির নেতা এমদাদুল হক হীরা জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকেই কামারুজ্জামানের সহায়তায় পাকিসৱানিরা তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেখানে তারা পাঁচটি বাঙ্কার বানিয়েছিল। অপর একজন প্রতক্ষদর্শী মুশফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, ৭১ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে কামরুজ্জামানের নির্দেশ ও উপস্থিতিতে তিনআনি বাজারের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো লুট হয়।

শেরপুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিসৱানি সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আলবদরদের দিয়ে নিরীহ লোকজনদের ধরে আনা এবং তাদের লাশ বহন করতে ব্যবহৃত ট্রাকগুলোর একজন চালক জানিয়েছেন, কামারুজ্জামান নকলার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার বাড়ি পোড়ানোর জন্য পাকিসৱানি বাহিনীকে রাসৱা দেখিয়ে নিয়ে যান। তখন হত্যার বাড়ি থেকে কামারুজ্জামান প্রায় একশ মণ চালও লুট করেন। এ ছাড়া কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে আলবদররা সাধারণ মানুষের গরু, ছাগল ধরে নিয়ে আসত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তিসহ অন্যান্য জমি-সম্পত্তি জোর কর দখল করতেন বলে জানিয়েছেন এ ট্রাক চালক। কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে সে সময় ডাকাতির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
(আমাদের সময়)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×