সকাল থেকে খাবার খুজতেছি , কিছুই পেলামনা । বার দুয়েক ড্রেনের পানি খাবার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলামনা । ড্রেনের পানির মধ্যেও মানুষ এখন কি যে ফালাইয়া রাখে বুঝলামনা । আগেতো এমন ছিলনা । যাই হোক , আমি মোঃপুর থেকে ধানমন্ডি আসলাম একটু ভাল খাবার পাবার আশায় । এখানে নাকি ভাল খাবার খাওয়া ভাল মানুষ থাকে । ভাবছিলাম এখানে আরো বড়ো কসাইয়ের দোকান পাবো, মোঃপুর থেকে বড়ো । মোঃপুরেতো একটু পরপর কসাইয়ের দোকান পাইতাম । আগের মতো হাড় যদিও পাইনা তবুও মাংসের গন্ধে আমার পেট একটু হলেও ভরতো । কিছু দোকানদার দেখলে এমন ভাব করতো যে ওদের ব্যবসা নস্ট করতে আমরা আসি । আরে ভাই , আমরা তো সলিড পিস চাইনা । কিছুদিন আগের কথা তো আরো ভয়ংকর , আমি রাস্তার এক কোনায় শুয়ে ছিলাম । হঠাত এক লুঙ্গি পরা লোক আমাকে লাঠি দিয়ে বেদম বাড়ি মারল। পা আমার ভেঙ্গে গেলো , লোকটা আমার ভাঙ্গা পায়ের গোংগানি শুনে খুব মজা পাইল। কয়েকদিন ভাঙ্গা পা নিয়ে খুব কষ্টো করলাম , তাও লোকটাকে কখনো বদদোয়া করিনি । মানুষ বিনা কারনে মানুষকে মারে আর আমিতো নেড়ী কুত্তা । আমাকে না মারলে মারবে কাকে ?? ঢাকায় আমার রাত কিন্তু ভালই কাটতো । একটু আরামে ডাস্টবিন ঘাটতে পারতাম , রাস্তার টোকাইগুলা থাকতোনা । ওরা অনেকটা আমার মতই, ওদেরকে আমি নিজের থেকে কখনো আলাদা করতে পারিনি,কিছু সময় আমার চেয়ে অনেক করুণ হয় ওদের পরিনতি। হরতাল চলার সময়তো একদিন আমি আর একটা টোকাই পাশাপাশি শুয়ে ছিলাম, একটা মোটা পুলিশ আরো মোটা লাঠি দিয়ে ওকে বাড়ি দিলো। আমি কিন্তু বেচে গেলাম। বেচে গেলাম কারন আমি মানুষ নই। রাতের ঢাকায় একটা মজার ব্যাপার দেখলাম, মোঃপুরে যতোই ভাঙ্গাচুরা বাড়ীই হোক বা দারুন বাড়ি হোক রাতে সব বাসায় লাইট জলে। কিন্তু ধানমন্ডির অনেক বাসা রাতে ফাকা পরে থাকে , একটা বাসায় ও লাইট জলতে দেখিনা । কদিন আগেই ফুটপাতে কিছু লোককে বেশ কস্টে থাকতে দেখলাম, ওদেরকেতো ধানমন্ডির ফাকা বাশাগুলায় রাখা যেতো ।আরো মজার জিনিষ দেখলাম সাত-মসজিদ রোডে একটা গাড়ির মধ্যে খুব সুন্দর মেয়ে ভিনদেশী কুকুরকে আদর করতেছে।আমদের আদর করলে, ভালো খাবার দিলে আমরাও অমন সুন্দর হইতাম ।আমরা কি কম প্রভুভক্ত? মানুষ বড়ই আজব প্রানি । আমরাতো কারন ছাড়া কাওকে কামড় দেইনা। তোমরা কামড়াও। এখন খুব ভয়ে থাকি, কখন যে মানুষ আমাক কামড় দেয়।
জগতের শ্রেষ্ট প্রানি বইলা কথা ।