somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাপ্নিক মনের উদাসী পাগলামী!

১২ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দোস্ত কয়ডা বাজেরে?
এই তো হবায় ৮ টা বাইজা ১৩ মিনিট!
হায় হায় !!! ঈডা কছ কি?
তুই আমারে আরেট্টু আগে ডাইকা দেস নাই কেন? কাইল রাইতে না কইলাম! সকাল সকাল বাড়ী যাইতে অইবু! পুরা সপ্তার বাজার সদাই, পুকুরে মাছের খাবার দাবার, আর কলা ক্ষেতের নিড়ানি সব পইরা আছে! রীতিমত তালগোল পাকাইয়া যাইবরে!!

আরে দোছ! তোর খালি কাম আর কাম! আইচ্ছা এট্টা কতা ক- দিনি! বিয়া করস নাই! আর বিয়া করোনের নাকি চিন্তা ভাবনা ও নাই! এত্ত কাম কইরা করবি ডা কি?
আইচ্ছা! যা ! এইবার তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে আয়! বুয়া নাস্তা বানাইছে! আগে পেডে কিছু পড়ুক! তারপর না হয় আসমান জমিন ফিতা দিয়া মাইপা দেখুম!
.
.
নারে দোছ! আইজকা মনডা ভালা না! বাড়ীত যামুনা! চল শহরের এই গ্যাঞ্জাম ছাইড়া দূরে কোথাও ঘুইরা আহি!
ঠিকাছে! চল!! !


স্থান: ফুলবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড! টিকেট কাউন্টার! ভাই মাওয়া ফেরীঘাট দুইডা টিকিট দেন দিনি?
বেলা ১০টা শনিবার! রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই বলা চলে!! বাস এগিয়ে চলল কেরানিগঞ্জ পার হয়ে মাওয়া (ফেরীঘাট) এর পথে! বাহ! ডেভেলপার কোম্পানীগূলোর সৌজন্যে রাস্তার দুধারে উত্তোলিত বালির চরে জায়গাটা তো দারুন লাগছে! হাবিবি- হাবিবি বাংলা প্যারোডী গানটা বোধয় এদিকটার কোথাও শ্যুটিং করা হইছিল!
রাস্তার দু পাশ ঘিরে শিল কড়ই এর সবুজে দুরের গাছপালা! জ্যাম নেই কোথাও। বাহ! কি এক ক্ষনিকের পলকেই যেন চলে এলাম মাওয়া! আহ! ঢাকার রাস্তাঘাটগুলোও যদি এমন হত!

সবে মাত্র ঘড়ির কাটায় ১১ টা! ঘন্টা খানেকের জন্য একটা রিক্সাভাড়া দরদাম করে উঠে পরলাম উদ্দেশ্য বিহীন! কিছু পথ যেতেই একটা ভ্যানে কিছু ডাব নিয়ে ঠায় দাড়িয়ে ডাব বিক্রেতা!
মামা ডাবে শরবতের ল্যাহান মিষ্টি পানি অইবুতো ? নাকি পদ্মার পানি সিরিঞ্জ দি ঢুকাই লই আইছেন বেচতে!! আশে পাশে তেমন ডাব গাছ দেক্তেছিনা?

হায়! হায়! মামা! ঈগুলা কনকি? হবায় মাত্র গাছত্তেন পাইরা আনছি! কোনডা লইবেন লন! একদম কঢ়া!

তো মামু! দাম কত?

মামা আফনেরা রসিক মানুষ! আফনেগোত্তেন বেশি লমু না! ৪০ ট্যায়া কইরা লন!
ছোবানাল্লা! আফনের দিহি ডাব যবাই করোনের আগে আমাগো জবাই দিবার খায়েস জাগছে!
ঠিকাছে ২৫ কইরা রাহেন আমাগো দুইজনরে দুইখান আর রিস্কাআলা ভাইগনারে একখানা দেন!


কিছুটা নিচু হলেও গায়ের বুক ধরে একেবেকে দুরের পথে হারিয়ে যাওয়া হরেক প্রজাতির গাছে-ঢাকা কাচা-পাকা রাস্তাগুলো, পানিতে হাবুডুবু নিচু জমিতে কচুরিপানা শ্যাওলা আরও নাম না জানা দুরের গ্যারাম! একটু পরপর ছোট ছোট মসজিদ! না মনটা আসলেই জুরিয়ে গেল। ফিরার পথে রিক্সাআলা ভাইগনার উপহার স্বরূপ এক ওয়াকফ এস্টেটের জায়গায় পালিত হরিণের পাল দেখার নিমন্ত্রন উল্লেখ না করলে আসলেই অকৃতজ্ঞতা হবে!
ভাবছি উদরপুর্তিও কথা! মাওয়া ফেরীঘাটের রূপালী ইলিশ ভাজার কথা কত্ত শুনেছি! মিছ করলে কি চলে? দরদাম করে একটা মাঝারি সাইজের ইলিশ ৪৮০ টাকায় ঠিক করলাম! রিক্সাআলা ভাইগনার কাছে তুলে দিলাম রান্নার বন্দোনস্ত করতে! জোহর নামাজ পড়ে অচেনা মেজবানের বাড়ি গেলাম খেতে! ওমা! ভাইগনার মা (খোদেজা আপা! স্বামীহারা) তো দেহি হরেক রকম ভর্তা, ভাজি, ছালুন! ইলিশের কয়েক আইটেম ! বিশাল আয়োজন করে বসে আছে! ”রিক্সানাবিলাস” রিক্সা+রসনাবিলাস শেষে ফেরীঘাটে ফিরতে ফিরতে বেলা ৪.৩০ টা!
উঠে বসলাম শাহ মাখদুম ফেরীর ছাদে! আকাশ, নীল, ঘোলাটে জলরাশি, মেঘের গর্জন, মোশলধারে বৃষ্টি, চর, পদ্মার বুক, ওপারের সবুজ পেরিয়ে ১.২৮ মিনিটে পৌছুল কাওরাকান্দি ঘাটে! আর মানসিক ক্লান্তি ভূলে আমরাও পেলাম সবুজ নয়া প্রকৃতির অবগাহন!
আসর নামাজান্তে আবারো যখন নতুন এলাকার নব প্রকৃতিকে ছোয়ার ইচ্ছে ঘুরপাক খাচ্ছে মনে ভিমরী খেলাম ঠিক তখনই! শিবচরে কোন রিক্সা নাই! অগত্যা ভ্যানেই চরে বসলাম! যেদিকে খুশি চালাও! শুধু ৭ টার আগে ফিরিয়ে দিও ঠিক এখানেই!
..
.
.
.রাত এখন ৯ টা! চারিদিকে অন্ধকার ঝাপটে ধরেছে সেই কখন! এবার নিঢ়ে ফেরার পালা!
পদ্মায় এসে ঘুড়ে যাব আর স্পিডবোটে চরবনা? এতটা অবিবেচকতো আমি নই! (এত্ত অল্প পথ! ভাড়াটা যদিও বেশিই মনে হয়েছে!) উত্তাল ঢেউয়ের তালে তালে হৃদয়ও যেন নেচে উঠে হিন্দি গানের ছন্দের মত করে! ;) ;)
এপার এসে সোজা বি আর টি সি তে চড়ে বসা! আর নাক ডেকে এক ঘুম!
মামা ! নামেন! বাস ঘুরামু!! বাসায় যাইয়া ঘুমান!

আহ! অফিস, বাসা, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, এত্তগ্যাঞ্জামের ভীরে আবার কবে বেড়োনোর সুযোগ পাব! এমন করে প্রকৃতিকে ছুতে! আকাশ, নদী, ফুল পাখি দেখতে ?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:৫১
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×