somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধূমপান!!- কেন?

১২ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিউমার্কেট থেকে আসার পথে ট্রাফিক জ্যাম এ আটকা পড়ে বসে ছিলাম রিকশায়- উদাস চোখে তাকাচ্ছিলাম চারদিকে আর নানান এলোমেলো ভাবনার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম। হঠাৎ উল্টোদিকের রাস্তায় রিকশায় বসা একটা ছেলের দিকে চোখ যেতেই চিন্তার সুতোটা ছিড়েঁ গেল। নেহায়েত ষোল-সতের (আরো কম হতে পারে কিন্তু বেশি নয়) বছরের এক কলেজ ইউনিফর্ম পরা বালক পরম আনন্দে সিগ্রেট ফুকঁছে, মেজাজটা খিচঁড়ে গেলX(। হয়তো খুবই সাধারণ একটা দৃশ্য, অন্য অনেকের মতো আমিও প্রায়শই দেখি কিন্তু ভাবনায় আসে না কখনো। আজ মনে হয় জ্যাম এ অলস বসে থাকার কারণেই দৃশ্যটা কিছুতেই যাচ্ছিল না মাথা থেকে, 'কেন এই বাচ্চা ছেলেগুলো ধূমপান করে?' - এই প্রশ্নের উত্তর খুজঁছিলাম।
কয়েকজন সহকর্মীর সাথে ব্যাপারটা শেয়ার করার পর ওই বয়সে সিগ্রেট খাওয়ার পেছনে যে কারণগুলো উদ্ধার করতে পারলাম (আসলে সবাই জানে মনে হয়, আমিই একটু দেরীতে ভাবছি/:))
১। এস এস সি পাশের পর বা স্কুলের উপরের ক্লাশে পড়া অবস্থায় teen aged এই ছেলেগুলো হঠাৎই নিজেদের বড় ভাবতে শুরু করে আর ভাবে এই বড় বড় ভাবের বহিঃপ্রকাশ হয় সিগ্রেট খাওয়ার মাধ্যমে:-/
২। সিগ্রেট খাওয়া না কি খুবই smartness এর ব্যাপার, ওই বয়েসী মেয়েরা না কি ভাবে সিগ্রেট না খেলে সে পুরুষ(!)ই না। তাই মেয়েদের চোরা মুগ্ধ চাহনীর লোভে সিগ্রেটের সহায়তা গ্রহণ করে অনেকে।(নিজেকে একবার কাল্পনিক টাইম মেশিনে করে teen age এ নিয়ে গিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম- আসলে আমি কি সিগ্রেট খাওয়া ছেলে কে handsome ভাবতাম? নাহ্‌! যে চেহারা দেখলাম তা কোন অদৃশ্য গন্ধে নাক কুচঁকিয়ে বিরক্ত চোখে তাকানো একটা মেয়ের X(()
৩। শেষ কারন বোধ হয় নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ। এর পেছনের যুক্তি টা তাও বোঝা যায়।
সেই শুরু- তারপর কি এর শেষ আছে? কারো কারো শেষ হয় তো হয় মাদকে আর তারপরেই সব শেষ। কী এমন আকর্ষণ এই বস্তুতে যে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আর নিতান্ত অপচয় জেনেও মানুষ এর নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না!সিগ্রেট তো এমন কোন সুস্বাদু খাদ্যবস্তু না যে তা না খেলে চলবে না। আমার ক্লাশের ছেলেগুলো সিগ্রেট ধরালেই আমি আড্ডা থেকে উঠে যেতাম বলে ওরা খুব convince করার চেষ্টা করত - তুই একবার খেয়ে দেখ, তাহলে বুঝবি কী জিনিষ। চ্যালেঞ্জ দিয়ে কয়েকবার ফুঁকেও দেখেছি- ভালো লাগা তো দূরে থাক বিচ্ছিরি এক গন্ধে মনে হলো আমার পুরা ভেতরটা দুর্গন্ধ হয়ে গেল, কয়েকবার দাঁত ব্রাশ করেও স্বস্তি হয় নি, ওতে লাভ হয়েছে এই- ওরা আর এখন আমাকে সিগ্রেট ফুঁকে দেখতে বলে না, মানে মানে দূরে গিয়ে বসে।

থাক যে কথা বলছিলাম, আমার প্রশ্ন ছিল বড় হয়ে যখন ছেলেগুলো বোঝে যে সিগ্রেট খাওয়াটা আসলে কোন বাহাদুরির ব্যাপার না, তখন কি তারা ওই পথ থেকে ফিরে আসে? উহুঁ , ফেরা আর মনে হয় হয় না। অনেকে বোধ হয় তার আগেই আরো মারাত্মক নেশার কবলে পড়ে যায়, মৃত্যু ছাড়া যেখান থেকে ফেরার আর কোন রাস্তা নেই হয় তো। আমার মামাতো ভাইকে অনেক রকমভাবে চেষ্টা করেও মামা-মামী নেশার কবল থেকে ফেরাতে পারছে না, মাঝে মাঝে তার নিজেরই বোধোদয় হয় কিন্তু তার নিজের উপর তো আর নিজের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।
লেখাটা যখন শুরু করেছি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, শেষ করা কষ্ট হবে- নেশার মতোই এর শুরু আছে, শেষ নেই। শুধু একটা ব্যাপারই আমি বুঝতে পারি না- খুব ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা কপচাই আমরা, কিন্তু যা পান করলে (হোক ধূম্র বা মাদক) মানুষের নিজের চিন্তা-ভাবনার স্বাধীনতা থাকে না, নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না তা কীভাবে পান করা সম্ভব! আমি মানুষ হলাম কীসের যদি নিজেকে নেশার কাছেই বিকিয়ে দিতে হয়!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:৩১
১৪টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×