somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

kotonoha no niwa - অসম ভালবাসার নান্দনিক প্রকাশ

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
A faint clap of thunder
Clouded skies, perhaps rain comes
Will you stay here with me?



আমার পূর্বের কোন এক লেখায় একজন আমার লেখার ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে গিয়ে বলেছিলেন; আমি কোন কিছু দেখার সাথে সাথে সেটা নিয়ে লেখতে বসে যাই; এবং সেই কারণে অধিক আবেগে অনেক কিছুকেই অভাররেটেড করে ফেলি। উনার কথাকে গুরুত্তের সাথে নিয়েই দেখার বেশ অনেক দিন পর kotonoha no niwa নিয়ে লিখতে বসলাম।

মাকোতো শিনকাই নামটা জাপানের এনিম ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ জোরেসোরেই উচ্চারিত হয় তার ভিজুয়ালি সাউন্ড মুভিগুলোর জন্য। ২০০৭ এ তার প্রথম কাজ 5 centimeter per second দিয়ে আমারও এনিম মুভি দেখার যাত্রা শুরু। তার মুভিতে অসম্ভব সুন্দর এবং ডিটেইলড ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে ইমোশনাল এবং খানিকটা ট্রাজিক কিন্তু রোমান্টিক গল্পের চমৎকার সমন্বয় দেখা যায়।

Kotonoha no niwa কি এই ক্যাটাগরিতে পড়ে? হুম; অবশ্যই। বরং অন্য মুভিগুলোর চেয়ে খানিকটা বেশিই। তবে আপনি যদি একটা খুব সুন্দর গল্প আশা করে থাকেন; তবে আপনাকে হয়ত খানিকটা হতাশই হতে হবে। এই মুভি তার ভিজুয়াল এফেক্ট বা আর্ট এর প্রতি যতটা গুরুত্ব দিয়েছে; একটা অসাধারণ গল্পের অসাধারণ সমাপ্তির কথাটাকে ততটাই অবহেলা করেছে।



১৫ বছর বয়সী এক হাই স্কুল ছাত্র তাকাও এবং ২৭ বছর বয়সী ইউকিনোর ভালবাসাই গল্পের মুল উপজীব্য । তাকাও; যার জীবনের লক্ষ এবং উদ্দেশ্য জুতো বানানোর কারিগর হওয়া; সুন্দর সুন্দর জুতার ডিজাইন করা; নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই অনিশ্চিত। ইউকিনো নিজের সমাজে; নিজের পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারে না এবং নিজেকে খুজে ফেরার তাগিদে পার্কে বসে সময় কাটায়। তাদের জীবনের এই অনিশ্চয়তা; একাকীত্ব; অসহায়তা-ই তাদেরকে পরস্পরের কাছে এনে দেয়।



চিরাচরিত ৮-১০টা মুভি প্লট থেকে একদমই আলাদা এবং বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হওয়া এই গল্পের শেষটা হয় খানিকটা হিন্দি সিনেমার মেলোড্রামাটিক স্টাইলে। গল্পে মুল চরিত্র দুজনের আবেগ অনুভুতির জগতে খুব কমই প্রবেশ করা হয়েছে। একজন নিরপেক্ষ দর্শকের দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে; তাদের দেখা হল; তারা কথা বলল; একে অপরকে ভালবেসে ফেলল !!! কিন্তু কেন? সেই সম্পর্কের ভিত্তিটাই বা কি আর গভীরতাটাই বা কতটুকু? ঠিক কি কি ফ্যাক্টর গল্পের শেষ দিকে তাদের সম্পর্ককে এতটা তীব্র করে তুলেছে? এইরকম অনেকগুলো প্রশ্নেরই উত্তর দেয় না এই মুভিটি।



এখন তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে; এই মুভিটার সফলতাটা তাহলে কোথায়? প্রথম যেই জিনিসটা মাথায় আসে সেটা হল; সংলাপ। এক কথায় অসাধারণ। সংলাপে কি বলা হচ্ছে তার চেয়ে চমকপ্রদ বিষয় কি বলা হচ্ছে না সেটা। এর সংলাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খুব সহজ; সীমিত এবং চরিত্রগুলোর দৈনন্দিন স্বাভাবিক একঘেয়ে আলাপচারিতায় সীমাবদ্ধ। কিন্তু এই মুভি কোন কিছু বলার চেয়ে তা দেখানোতেই বেশি বিশ্বাস রেখেছে। তাকাওর খাতায় একের পর এক স্কেচ দেখে আমরা বুঝতে পারি; তার প্যাশন কি। অল্প দু’চারটে কথায় আমরা তাকাওর ফ্যামিলির পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া খুব সহজেই বুঝে যাই। একান্তই যখন সংলাপের প্রয়োজন তখন খুব সহজ এবং স্নিগ্ধ সংলাপ এবং সেই সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক; ঝি ঝি পোকার ডাক; সংলাপের মাঝে খানিক নিরবতা; বৃষ্টি – আমাদেরকে পুরো পরিবেশটার সাথে একাত্ম করে ফেলে।

ভিজুয়াল পারস্পেক্টিভ থেকে “kotonoha no niwa” একটা মাস্টারপিস। যারা 5 centimeter per second দেখেছেন তারা এর সাথে অনেকটাই পরিচিত থাকার কথা। মুভির অন্যতম মুল থিম হচ্ছে বৃষ্টি। সাধারণত গল্পে বৃষ্টি একাকীত্ব প্রকাশ করে। কিন্তু এখানে বৃষ্টিকে সুখ এবং মানসিক প্রশান্তির প্রতীক হিসেবে অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সাথে ব্যাবহার করা হয়েছে।



মুলত পিয়ানোর সাথে প্রাকৃতিক শব্দ; বৃষ্টি আর ঝি ঝি পোকা – এক মাতাল করা অনুভুতির সাথে পরিচয় করে দেবে এই মুভিটি।


সুতরাং; এক বাক্যে যদি সাম আপ করতে হয়; তবে বলা যায় – অসম্ভব সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হওয়া কিন্তু শেষ দিকে খানিক ব্যর্থ গল্পের এই মুভিটি চোখ এবং কানের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা !!!


শুরু করেছিলাম; তিনটে লাইন দিয়ে; তাকাওকে ইউকিনোর জিজ্ঞেস করা তিনটে লাইন। শেষ করি প্রশ্নের জবাবে তাকাওর উত্তর দিয়ে -

A faint clap of thunder
Even if the rain comes not,
I will stay here, together with you


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×