somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবীর মহাকাশ ভ্রমন

০৯ ই জুলাই, ২০১০ ভোর ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নবীজীবনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মি'রাজের সময় পরম প্রভুর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ পর্বে নামাযের পরিমাণসহ তৎকালীন ও অনাগত দিনের মনুষ্য সমাজের জন্যে আল্লাহতায়ালা তাঁর হাবীবকে বিশেষ বিশেষ সামাজিক বিধান প্রদান করেন। মি'রাজ উত্তরকালে মদীনাকেন্দ্রিক একটি পূর্ণাঙ্গ কল্যাণ রাষ্ট্র, তার প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামো ঐ বিধানসমূহের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হয়।
সূরা বনী ইসরাঈলে বর্ণিত এ চৌদ্দটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতির গুরুত্ব সর্বকালের সর্বযুগের জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য। যাঁর মাধ্যমে নবুওত ধারার পরিসমাপ্তি ঘটবে, তাঁর দ্বারা যেমন গোটা মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ বিধান প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত হওয়াই স্বাভাবিক, তেমনি এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব অর্পণকালে দায়িত্বদাতা কর্তৃক মানবজাতির এ মহান নেতাকে তাঁর কাছে ডেকে নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়াটাই যুক্তিযুক্ত। বড় রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান তাঁর রাষ্ট্রীয়গুরুত্বপূর্ণ কোনো নির্দেশ প্রদানকালে সেখানে টেলিফোনে কথা না বলে আঞ্চলিক শাসনকর্তাকে কাছে ডেকে নিয়েই কথা বলেন, তাকে নির্দেশ প্রদান করেন ও আদিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব বুঝিয়ে দেন! শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট নির্দেশনাটির গুরুত্বের প্রেক্ষিতে এর প্রয়োগের দ্বারা জাতির কল্যাণ ও এর প্রতি উপেক্ষা অবজ্ঞার ফলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে কি কি খারাপ প্রতিক্রিয়া হবে, সে সম্পর্কেও আভাস দিয়ে থাকেন। তাই উক্ত বিধানটির প্রচারের গুরুত্ব, তার অনুসরণে সুযোগ-সুবিধা ও অমান্যকারীদের কি কি মারাত্মক শাস্তি হতে পারে, সে সম্পর্কেও দায়িত্ব-দাতা সুপ্রীম অথরিটি তাগিদ-তাম্বি করে থাকেন।
মহাপ্রভুর সান্নিধ্য লাভের শুভলগ্নে আল্লাহর শেষ নবীকে আল্লাহতায়ালা এজন্যেই তাঁর বিধানের অনুসারী ও অস্বীকারকারীদের পরিণতিসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেখিয়েছিলেন। বেহেশত ও দোজখ আল্লাহর রসূল সরাসরি দেখেছেন। কোন পাপকর্মের শাস্তি, কোন পুণ্যের কি পুরস্কার তাকে তা দেখানো হয়।
মি'রাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রসঙ্গে: প্রত্যেক নবী-রসূলের জীবনেই কিছু কিছু মু'জিযা বা অলৌকিক ঘটনা থাকে। শেষ নবী (সাঃ)-এর জীবনের মু'জিযাসমূহের মধ্যে মি'রাজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মু'জিযা বললেও যথেষ্ট নয়। কাজেই মি'রাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজতে যাওয়া একটি অবান্তর চিন্তা। মি'রাজ নবী-জীবনের এমন একটি ঘটনা, যার সাথে রয়েছে ঈমানের গভীরতম সম্পর্ক। এ সম্পর্কের কারণেই এ ঘটনা শোনা মাত্র কোন কোন সাহাবী কিছুটা ইতস্তত করতে থাকলেও হযরত আবুবকর (রাঃ) নির্দ্বিধায় বলে উঠলেন: আল্লাহর রসূল যদি একথা বলে থাকেন, তাহলে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বস্তুত ঈমানের এই কামালিয়াতের পরিচয় দিতে পেরেছিলেন বলেই তিনি ‘সিদ্দীক-ই-আকবর' রূপে চিরদিন অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেনও।
যুক্তি কোনদিনই ঈমানের ভিত্তি নয়- ঈমানই হচ্ছে যুক্তির ভিত্তি। বরং যুক্তির ক্ষমতা যেখানে শেষ ঈমানের যাত্রা সেখান থেকেই শুরু। তারপরও কোন কোন মহৎ ব্যক্তির এ ব্যাপারে যুক্তির অবতারণা সেটা শুধু ঈমানের স্বাদ অনুভব করার জন্যই। যেমন আল্লাহ কর্তৃক মৃতকে জীবিত করার ব্যাপারে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর পূর্ণ ঈমান থাকা সত্ত্বেও নিজের স্পৃহা দমন ও মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের উদ্দেশ্যে তার বাস্তব দৃশ্য দেখার জন্যে তিনি আল্লাহর কাছে আবদার করেছিলেন। আর আল্লাহও তাঁর সেই আবদার পূরণ করেছিলেন।
মি'রাজের ব্যাপারে মনের এরূপ স্বাভাবিক জিজ্ঞাসা ও তার সম্ভাব্যতার বাস্তবরূপ সম্পর্কে মনের সান্ত্বনা লাভের ইচ্ছা জাগতে পারে যে, জীবদেহ কি করে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করতে পারে? আজকের এই বৈজ্ঞানিক যুগে যেখানে মানুষ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্তর অতিক্রম করে একাধিকবার বিভিন্ন গ্রহণ ঘুরে আসে, সেখানে খোদ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্রষ্টার নির্দেশে তাঁরই বিশেষ মহান অতিথি শেষনবীর জন্য তিনি কি সেই ব্যবস্থা করবেন না? হযরত ইবরাহীম (আঃ)-কে সম্রাট নমরূদ কর্তৃক যেই অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, ইবরাহীম (আঃ)-কে সম্রাট নমরূদ কর্তৃক যেই অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, সেই আগুনের দাহন শক্তি হরণ করে ইবরাহীম নবীকে যিনি রক্ষা করেছিলেন, তিনিই মহানবীর জন্যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্তর ভেদ করার ব্যবস্থা করেছিলেন।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×