somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জঙ্গী ছাত্রলীগরে জা, বি তান্ডবঃ সহকারি প্রক্টরসহ আহত ৫০।

০৬ ই জুলাই, ২০১০ সকাল ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গতকাল সোমবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরসহ কমপক্ষে অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়। গুরুত্বর আহতদের রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে এক ছাত্র নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সকাল দশটায় আল বেরুনী হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি নির্ঝর আলম সাম্য গ্রুপ সমর্থিত এনায়েত কবির এমিল গ্রুপ সভাপতি সমর্থিত কাজী মোস্তফা মনোয়ার সজিব’র ওপর হামলা চালায়। তাকে হলের সামনে রড, লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমিল গ্রুপের কর্মীরা আবারও সেখানে গিয়ে রামদা দিয়ে সজিবকে কুপিয়ে জখম করে। কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সরা তাদের বাধা দিলে এমিল গ্রুপ তাদেরও লাঞ্ছিত করে। এসময় সজিব গ্রুপের জয়ন্তও গুরুত্বর আহত হয়। খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিনসহ তার গ্রুপের নেতাকর্মীরা মেডিকেলের সামনে জরো হয়। এখবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ আল বেরুনী হলের সামনে অবস্থান নেয়। সভাপতি শাফিনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা এসময় আল বেরুনী হলে ঢোকার চেষ্টা চালায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির। ভিসি ও প্রক্টর তাদের হলে ঢুকতে বাধা দিলে নির্দেশ অমান্য করে নেতাকর্মীরা রড, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হলের তালা ভেঙ্গে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ভেতরে প্রবেশ করে। সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা হলের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে এমিল গ্রুপের নেতাকর্মীদের খুঁজতে থাকে। চারতলার বিভিন্ন কক্ষে এমিলসহ তার গ্রুপের নেতাকর্মীসহ অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকে। এসময় ঐ কক্ষগুলো ভেঙ্গে তাদের বেধড়ক মারধর করে চারতলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তারা নিচে পড়ে থাকলে সেখানে এমিলসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের আবারও মারধর করা হয়। মুর্মূর্ষু অবস্থায় তারা হলের নিচে পড়ে থাকে। হল প্রশাসন এসময় নিরব ভূমিকা পালন করে। সভাপতি গ্রুপ হল দখলে নেয়। এসময় হলের চারপাশ ও বিভিন্ন কক্ষ থেকে আহত অবস্থায় প্রায় ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মীকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহতরা হলেন, রিয়েল, আবিদ, সোহেল, আমজাদ, এমিল, তনয়, মুন্না, শফিক ও বিজয়। আহতদের ভীড়ে ও আর্তনাদে মেডিকেল সেন্টার ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। সেক্রেটারি গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসময় রড, লাঠি ও রামদা নিয়ে আল বেরুনী হলের সামনে আসে। উভয় গ্রুপের মধ্যে তখন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে সেক্রেটারি গ্রুপ পালিয়ে যায়। সহকারী প্রক্টর আসম ফিরোজ উল হাসান গুরুতর আহত এমিলকে মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার ওপর আবারও হামলা চালায়। হামলায় সহকারী প্রক্টর আহত হন।

দুপুর ১২ টায় সেক্রেটারি গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে সভাপতি গ্রুপের নিয়ন্ত্রাণাধীন শহীদ সালাম বরকত হল দখল নিতে যায়। তারা এসময় হলে ঢুকতে না পেরে হল প্রভোস্ট কক্ষসহ কমপক্ষে ২০টি কক্ষ ভাংচুর করে। উভয় গ্রুপের মধ্যে তখন গোলাগুলি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সালাম বরকত হলের সভাপতি গ্রুপের শিমুল ও সেক্রেটারি গ্রুপের আফম কামালউদ্দিন হলের উজ্জল গুলিবিদ্ধ হয়।

এঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উভয় গ্রুপের নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ নিয়ন্ত্রণাধীন হলে সশস্ত্র মহড়া দিতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, দীর্ঘ চার বছর পর গত ১৯ মে জাবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটিতে মূল ধারার অনেক নেতা-কর্মী পদবঞ্চিত হয়। আবার কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কারও কারও বিরুদ্ধে ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ রয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় এ সংঘর্ষ ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাবি ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন বলেন, আমি হামলা চালাতে নয় মারামারি ঠেকাতে গিয়েছিলাম। সেক্রেটারি নির্ঝর আলম সাম্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির নেতৃত্বে এ ধরনের হামলা হবে ভাবতেও পারিনি। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরজু মিয়া জানান, আমরা সভা আহবান করেছি। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারী কমিটি ও সিন্ডিকেটের সভা চলছিল।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×