মানব দেহঃ বিষ্ময়কর যন্ত্র
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
পৃথিবীর সবচেয়ে বিষ্ময়কর যন্ত্র হল মহান সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি মানব শরীর যার ক্ষমতার পরিধি আজও বের করা সম্ভব হয়নি। ঠান্ডা গরম অনুভুতি, এক পলকের একটু দেখা সারা জীবনে স্বরনে রাখা। মানব শরীরের কয়েকটি নিদর্শন নিয়ে আরও কিছু কথা হোক।
Brain এর কিছু কথা:-
আমাদের Brain দশহাজার কোটি Neuronনামক Cell দ্বারা গঠিত যার একটি Cell আর একটি Cellএর সাথে যুক্ত থাকে প্রায় একশো কোটি Glia দ্বারা। Brain এ কোন কোন Chemical reaction ঘটতে সময় লাগে ১ সেকেন্ড দশ লক্ষভাগের এক ভাগের চেয়েও কম সময়। øায়ুতন্ত্রের ভিতর যে Impulse বা সংকেত চলে তার গতি ঘন্টায় ১৮০ মাইলেরও বেশী ।
আঠারো বছর বয়সের পর Brain প্রতিদিন কিছু কিছু করে কোষ হারায় যার কারনে এর ওজন কমতে থাকে।
আমাদের Brain এর ওজন প্রায় ১৫০০ গ্রাম এর মত কিছু CSF নামক তরল পদার্থে Brainথাকার কারণে এর ওজন অনুভূত হয় মাত্র ৫০০ গ্রাম। তা না হলে যা বয়ে নিয়ে বেড়ানো আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হতো।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল সকল অনুভব , অনুভূতি Brainদ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও Brainএর কোন Nerve ending না থাকায় Neurosurgery তে কোন রকম অ্যানস্থেসিয়া ছাড়াই কাটা ছেড়া করা যায় ।
চোখের ভাষা:-
কোন সাহায্য ছাড়া স্বাভাবিক আলোতে দুটি চোখ এক কোটি ভিন্ন ভিন্ন রঙ্গের তল আলাদা করে সনাক্ত করতে পারে। যেখানে ফটো ইলেকট্রিক স্পেকট্রোফটোমিটার এ ক্ষমতা চোখের দক্ষতার শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ ।
চোখের রেটিনায় রয়েছে ১০ টি লেয়ার, চোখের photoreceptor cell এর সংখ্যা প্রায় ১২৭ঢ১০৬ প্রত্যেক চোখে। এতে দুই ধরনের cell থাকে যা অল্প ও অধিক আলোয় দেখতে সাহায্য করে ।
চোখের জলের হয়না কোন রং-
চোখের জল যা অশ্র“ নামে পরিচিত এক বিষ্ময়কর পদার্থ যা প্রত্যেকবার পলক ফেলার সাথে সাথে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকারী অবস্থান নেয়। উত্তেজিত মানুষেরা চোখের পানিতে শতকরা ২৪ ভাগ প্রোটিন থাকে। অশ্র“তে সামান্য পরিমান প্রোল্যাকটিন হরমোন থাকে যা মহিলাদের স্তনে দুগ্ধ আনায়নে উদ্দীপনা যোগায়।
নাক:-
নাকের শে¬ষ্মা ঝিলল্লি লক্ষ লক্ষ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে শে¬ষ্মার রাসায়নিক পদার্থের বিরুদ্ধে। পুষ্পরেনু প্রতিরোধে রয়েছে নাকের স্বতন্ত্র প্রতিরোধ কৌশল। কোন ধুলাবালি বা কোন ক্ষুদ্র বস্তু নাক দিয়ে প্রবেশ করলে শে¬ষ্মার সংস্পর্শে আসামাত্র চুলকানি অনুভূত হয় যার ফলে হয় হাঁচি।
হাঁচিতে যে বেগে বাতাস বের হয় তা প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১০০ মাইল ।
নাকের ভিতরে যে আবরণ রয়েছে তাতে ব্রাশের মত যে বস্তু আছে তা সর্বদা ঢেউ আকারে চলমান যার মাধ্যমেও অনেক ধুলিকনা বা একই জাতীয় বস্তুু বাইরে বেরিয়ে আসে ।
কানা কানি:-
মানুষ ২০ হার্জ থেকে ২০,০০০ হার্জ পর্যন্ত শব্দ শুনতে পায়। এত অল্প কম্পাংকের শব্দ শুনতে পেলেও কানের পাশ দিয়ে যে রক্ত ধারা প্রবাহিত হয় তার শব্দ শুনতে পায় না। কানের আছে তিনটি অংশ। কানের প্রধান কাজ হল শব্দ শোনা কিন্তু কান আরও একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ করে তা হলো সাম্যাবস্থা নিয়ন্ত্রন করা। কানের ভিতরে যে পর্দা আছে তা মূলত শুনতে সাহায্য করে। এই পর্দার কম্পনের কারনেই আমরা শুনতে পাই ।
অত্যাধিক শব্দ কানের জন্য ক্ষতিকর। ১৫০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ সার্বক্ষনিক শুনলে শ্রবন ক্ষমতা স্থায়ীভাবে বিনষ্ট হতে পারে। ২০০ডেসিবেল বা এ বেশী মাত্রার শব্দ মৃত্যুর কারণ হতে পারে ।
এজমা রোগাক্রান্ত শিশুদের শ্রবন ক্ষমতার উচ্চসীমা ৩০.০০০হার্জ পর্যন্ত হতে পারে ।
মানুষ তার নিজের উচ্চারিত যে শব্দ শুনতে পায় তা প্রবাহিত হয় হাড়ের মাধ্যমে।
এত খাবার যায় কোথায়?
মানব শরীরের আরেকটি বিষ্ময়কর বস্তু হল পাকস্থলী। এর খাবার ধারনক্ষমতা প্রায় দেড় কেজি। এর ভিতরে থাকে হাজার হাজার নিউমেরাস ফোল্ড যা এর র্সাফেস এরিয়া বাড়ায় কয়েকগুন। এতে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম ক্ষতিকর HCL এসিড। যা লোহা পর্যন্ত গলাতে পারে কিন্তু পাকস্থলীকে গলাতে পারে না কারন পাকস্থলীতে আছে মিউসিন নামক লালা জাতীয় পদার্থ। এতে আছে হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া। খাবার মুখে থেকে পেটে গেলেই কার্যকরী হয়ে যায় সকল গ্রন্থি যার মাধ্যমে খাবার প্রথমে চূর্ন হয়, এর পর হয় শোষন। যার মাধ্যমে শরীর তার সর্বশক্তি পেয়ে থাকে।
এতো গেল মানব শরীর নিয়ে সামান্য আলোচনা। আরও আছে কঙ্কাল তন্ত্র লসিকা গ্রন্থি, মূত্রনালী সংক্রান্ত বংশগতি সংক্রান্ত ইত্যাদি।
এরপরও কি মনে হয় না যে পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল যন্ত্র হল আমাদের তথা মানুষের শরীর।
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন