আটকের নির্দেশ পাওয়ার পর আদালতে হাজির হয়ে গ্রেপ্তার এড়ালেন আইন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মজিবুর রহমান।
Published : 19 May 2013, 09:50 AM
রোববার দুপুরে গ্রেপ্তারের আদেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের বেঞ্চে হাজির হন তিনি।
তার পক্ষে আইনজীবীরা জানান, যথাসময়ে আদেশ হাতে না পাওয়ায় তিনি আসতে পারেননি। আদেশ শোনার সঙ্গে সঙ্গেই এসেছেন।
আদালত অবমাননার কোনো অভিপ্রায় ছিলো না- সহকারী সচিবের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে গ্রেপ্তারের আদেশটি প্রত্যাহার করে নেন বিচারকদ্বয়।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সহকারী জজ আদালত বরিশাল শহর থেকে মেহেন্দিগঞ্জে স্থানান্তর নিয়ে একটি রিট আবেদনের শুনানিতে সকালে মুজিবুরকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট বেঞ্চ।
তাকে গ্রেপ্তার করে তাকে আগামী ২৭ মে’র মধ্যে আদালতে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিলো স্বরাষ্ট্র সচিবকে, যা পরে প্রত্যাহার হয়।
তলবের পরও সকালে মজিবুরকে না দেখে আদালত তার কারণ জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায় বলেন, এই কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছেন।
জবাবে আদালত বলে, প্রধানমন্ত্রী তো দেশে নেই। সেখানে কেন গেছেন তিনি।
মেহেন্দিগঞ্জের সহকারী জজ আদালত বরিশাল শহর থেকে মেহেন্দিগঞ্জে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে জারি করা গেজেটে সই করেন মজিবুর রহমান।
ওই গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করলে রুল জারি করা হয়। গত ৬ মে তার শুনানিতেই সহকারী আইন সচিবকে তলবের আদেশ হয়।
আদালত মজিবুর রহমানের বক্তব্য শোনার পর জিজ্ঞাসা করে, আদালত স্থানান্তরের আদেশ কীভাবে দিয়েছিলেন? সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া এটা করা যায় না। ফাইলে দেখছি, একজন রাজনীতিকের সুপারিশে এটা করা হয়েছে।
জবাবে আইন মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত আছে।
কীসের ভিত্তিতে মেহেন্দিগঞ্জে আদালত স্থানান্তর হয়েছে, তার কাগজপত্র এভিডেভিট আকারে নিয়ে সহকারী সচিবকে আগামী ২৭ মে আবার আদালতে আসতে বলেছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি না নিয়ে ওই আদালত স্থানান্তরে সরকারের উদ্যোগ ইতোমধ্যে স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।
সেই সঙ্গে রুলে ওই আদালত স্থানান্তর কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার, পূর্ত বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলীকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সিভিল কোর্ট অ্যাক্ট-১৮৮৭’র ১৪ ধারা অনুসারে গত ৫ মার্চ বরিশালের সহকারী জজ আদালত মেহেন্দিগঞ্জে স্থানান্তরে গেজেট প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির বাদল। বাদলের পক্ষে শুনানি করে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
নিম্ন আদালতগুলোতে থানাগুলোর জন্য পৃথক এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ আদালত থাকে। তবে তাদের অবস্থান থাকে জেলাতেই। স্থানান্তরের আদেশের মাধ্যমে ওই আদালতটিই থানা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত বরিশালের সর্বপূর্বের উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জ চারদিক থেকেই নদী দিয়ে ঘেরা।