somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাটা আঙুল, ভাঙ্গা পা...;)

২২ শে জুন, ২০১০ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সকালে ঘুম চোখে কিচেনে ঢুকলাম। ক্লিফের জন্য লাঞ্চ ও ব্রেকফাস্ট বানাব। ঘুমের ঘোড়ে তখনও। রাতে ঘুম ভেঙ্গে ছিলো স্বপ্ন ভুতের ভয়ে। তার পর কিছুক্ষন ঘুমুতে পারিনি তাই সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি আর তার সাথে কিচেনে দেরি।

কি লাঞ্চ বানাব বুঝতে পারছিনা। যাই হোক হাতড়ে হাতড়ে চোখ খোলা বোজা নিয়ে প্রচুর স্পিন্যাচ, ভেজিটেবল ও মাস্টার্ড দিয়ে স্যান্ডউইচ বানালাম। ঘুমের ঘোড়ে তখনও, ..... ক্লিং র‌্যাপ দিয়ে স্যান্ডউইচ মুড়িয়ে যেইনা ক্লিং র‌্যাপ কাটতে গেছি কাটার দিয়ে আমার আঙুল টিই কেটে দিলাম ঘেচাং করে। আহ ..... ঘুম গেল চলে। আঙুল বেয়ে টপাটপ লাল রং ঝরছে।

ক্লিফ দেখে বলল "ইউ আর সাচ এ বেবি, কান্ট লেট ইউ ডু এনিথিং" X((X((X(( , ভাল করে ব্যান্ডেজ বেধে দিল।

অনেক দিন পরে নিজের শরীরে ব্যান্ডেজ দেখলাম। আমার হাত পা সহজে ছোট খাটো রকমের কাটেনা। তাই কেমন আদ্ভূত লাগল।

আমার কাটা আঙুল নিয়ে ব্লগে বসলাম। সাথে সাথে আমাদের ব্লগার পারভিন আপার কথা মনে পরল।

আমি যখন এবার ঢাকা গেছিলাম তখন পারভিন আপা পায়ের আঙুল ভেঙ্গে পায়ে বিশাল প্লাস্টার নিয়ে বাড়িতে পরে। বেচারা একা একা সময় কাটাচ্ছিল বাড়িতে তার ক্রাচের সাথে। হাটা চলা সব বন্ধ....তাই বলে তার সামু আর ফেস বুক? উহু ওটা বন্ধ ছিল না :D:D

ঠিক করলাম উনার বাড়ি গিয়ে উনাকে দেখে আসব। এই সদা হাস্যময়ী মানুষটিকে আমার খুবই পছন্দ!!! দেখে মনে হয় সারাক্ষন মহা আনন্দে সে মেতে আছে !!! জিবনটি যেন তার কাছে চলমান এন্টারটেইনমেন্ট!! খুব ভাল লাগে আমার এমন মানুষদের।


শনিবারে বিকেলে পারভিন আপার দেয়া বাড়ির ঠিকানা খুজে গিয়ে হাজির হলাম সেখানে। আমাকে উনার বেডরুমে যেতে হলো কারন উনার হাটা একেবারেই বারন, বেডরুমটিই উনার পৃথিবী। বিশাল প্লাসটার পায়ে, প্রান জুড়ানো মিষ্টি হাসি দিয়ে আমাকে অভর্থনা জানালেন। বিছানার পাশেই ছোট্ট টেবিল আর তাতে তার ল্যাপটপ। আর সেই খানেই উনার সদাহাস্যময়ী চঞ্চল জীবন বন্দি সামু আর ফেসবুকের সাথে। সামু আর ফেসবুকই ঐ সময় তাকে পৌছে দিয়েছে উনার সব বন্ধুদের কাছে। মুক্তি দিয়েছে একাকিত্ব থেকে।


আমি বসতেই চলে এলো কালোজাম.....B-)B-)B-)B-) ওটা যে আমার কি প্রিয়!!!! :P


চলল আমাদের আড্ডা। আর তার সাথে পারভিন আপা ফেসবুকে দিয়ে চললেন আমাদের চলমান আড্ডার বর্ননা। একটু পর পরই উনি আড্ডার আপডেট দিচ্ছেন আড্ডার ফাকে ফাকে।


আমার জন্য উনি একটা চমৎকার উপহার কিনিয়ে রেখেছিলেন উনার বোনকে দিয়ে। চমৎকার একটি লেদারের জুয়েলারি বক্স!!! এত পছন্দ হলো জিনিসটি আমার!! অসাধারন!!!

এখন ওতে আমার জুয়েলারি গুলো আরামে ঘুমোয়। অনেক ধন্যবাদ পারভিন আপু চমৎকার জিনিসটির জন্য।


এর পর এলো চিকেন কাবাব আর পরোটা। উমম কিযে তার ইয়াম্মি গন্ধ ও স্বাদ!!! এখনও আমার মুখে সেই স্বাদ লেগে আছে।

দেখা হলো উনার ছেলের সাথে। খুব ভদ্র, বুদ্ধিমান ও কাজের ছেলে। সে ই সঙ্গদেয় তার মাকে এই একাকি সময়টিতে, যতটা পারে সাহায্য করে মুভ করতে। কর্তা মানুষটি সকালে ব্রেকফাস্ট বানিয়ে খাইয়ে দিয়ে গেছেন। দুপুরে ছোটা কাজের হেল্পার আসে আর সন্ধ্যায় ছেলের সাহায্য উনার দিন কাটছে।


দুজনে ছবি তোলা ও গল্পে চমৎকার বিকেলটি কাটলো। সদাহাসয়ময়ী, অতিথি ও বন্ধুপরায়ন মুক্তচিন্তার মানুষটিকে ভিষন ভাল লেগে গেল আমার। এমন মানুষের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করে সময় কাটান যায়। সব কিছুকেই উনি এত পজিটিভ ভাবে দেখেন যা উনার খুবই চমৎকার একটি দিক।

সন্ধ্যা হয়ে গেল বের হতে পারভিন আপার বাসা থেকে। মনে হচ্ছিল আরো কিছুক্ষন থাকি, কিন্তু আমি একা ছিলাম আর সন্ধ্যার পরে ছিনতাইয়ের ভয়ে ফেরার কথা ভাবতেই হলো। পারভিন আপা উনার গাড়ি দিয়ে আমাকে সি এন জি পর্যন্ত পৌছে দিলেন। ফেরার পথে এই চমৎকার মানুষটির কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে গন্তব্যে পৌছে গেলাম.....

আজ আমার কাটা আঙুল নিয়ে যখন ফেসবুক আর ব্লগে বসলাম পারভিন আপার কথা মনে হলো খুব। কেমন আছেন পারভিন আপা?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:২৬
৮০টি মন্তব্য ৮১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×