somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণ কায়েমে স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির

১৯ শে জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের নীল নকশা তৈরী করেছে। সারাদেশে জরুরী অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে সব রকম রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও চট্টগ্রামের স্কুল-কলজেগুলো ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়মের তোয়াক্কা করছে না ছাত্র শিবিরের নেতা কর্মীরা। সাবেক ক্ষমতাসীন চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে বিএনপিকে পুজিঁ করেই শিবিরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিশন এতোই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে ছাত্রদলকেও কোণঠাঁসা করে ফেলেছিল। রগকাটা পার্টি হিসেবে পরিচিত শিবির ইতিমধ্যেই নগরীর স্কুলগুলোতে শক্ত ভিত তৈরীতেও সক্ষম হয়েছে। স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে দুনিয়া থেকেই জান্নাতের টিকেট দিয়ে দেয়ার কথা বলে মগজ ধোলাই অভিযানে অন্তর্ভুুক্ত করে সমর্থক বানায় এবং তাদের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করে।
‘আল্লাহর এই জমিনে সকল প্রকার জুলুম ও নির্যাতনের মূলোচ্ছেদ করে আল কোরআন ও আল হাদীসের আলোকে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ন্যায়ের সৌধের উপর এক আদর্শ ইসলামী সমাজ গড়ে তোলার মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির। চমক লাগানো সাময়িক কোনো উদ্দেশ্য হাসিল এর লক্ষ্য নয়। ইসলামী ছাত্র শিবিরের লক্ষ্য চিরন্তন ও শ্বাশত সমাজের প্রতিটি অন্যায়ের পাহেলিয়াত ও খোদা দ্রোহীতার বিরুদ্ধে রয়েছে এর বলিষ্ঠ ভূমিকা। একটা আন্দোলন বা সংগঠনের সফলতার জন্য প্রয়োজন এর কর্মশক্তি, জনশক্তি এবং জন সমর্থনের সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার। ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীর যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, চিন্তাশক্তি, জনসমর্থন সবকিছু আল্লাহ প্রদত্ত আমানত। এই সমস্ত কর্মকান্ড হলো শিবিরের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্মসূচি ও কার্য পদ্ধতি।” - সাংগঠনিক নির্দেশমতে এ ধরণের হাজারো ধর্মীয় নীতিমালা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচির কথা বলে সাধারণ ছাত্রদের শিবিরের সদস্য হওয়ার জন্য উদ্বদ্ধু করে। জামাত তাদের ভয়ংকর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য শিবিরের মাধ্যমে অবিরাম কাজ করে চলছে। প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে ছাত্রদের শিবিরের বিভিন্ন্ কার্যক্রমের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কলেজ রোডস্থ ‘ফুলকুঁড়ির আসর’ এর মহানগরী শাখা অনেকখানি এগিয়ে। এছাড়া অত্যন্ত সক্রিয় ও সুসংগঠিতভাবে শিবির পরিচালিত সংগঠন ‘অংকুর’ তিনটি জোনে যথাক্রমে চলন্তিকা, পাহাড়িকা ও কর্ণফুলীতে বিভক্ত হয়ে সদস্য বৃদ্ধির তৎপরতা চালাচ্ছে। শিশু কিশোরদের আকৃষ্ট করতে রচনা, কুইজ, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এসব শিশু-কিশোরদের শিবির আদর্শে বিশ্বাসী হতে বাহারী স্টিকার, পোস্টার, ক্যালেন্ডার, কলমসহ বিভিন্ন লোভনীয় জিনিস তুলে দেয়া হচ্ছে। স্কুল ছাত্রদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে তাদের সমর্থক ফরম পূরণের মাধ্যমেই প্রথম ধাপ অতিক্রান্ত হয়। চট্টগ্রামের প্রতিটি সরকারী স্কুলই শিবিরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তন্মধ্যে সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় শিবিরের শক্তিশালী ঘাঁটিতে রূপান্তরিত হয়েছিল স্বয়ং স্কুলের কয়েকজন শিবির সমর্থক শিক্ষকের সহযোগিতায়। এ স্কুলে ক্লাস শুরুর আগেই শ্রেণী কক্ষে ছাত্রদের রাজনৈতিক দীক্ষা দেয়ার জন্য ‘বিশেষ পাঠ’ নামে নিজস্ব আদর্শ প্রচারের এক অভিনব ব্যবস্থাও চালু করেছিল। এই বিশেষ পাঠদানের নামে চলতো রাজনৈতিক বক্তৃতা ও মগজ ধোলাইয়ের কাজ। ছাত্রদের দেয়া হতো শিবিরের নিজস্ব প্রকাশনাসহ গোলাম আযমের বই। নগরীর বিভিন্ন স্কুলের দেয়ালে শোভা পায় শিবিরের বিভিন্নœ পোস্টার, স্লোগান, দেয়ালিকা, স্টিকার। প্রায় প্রতিটি স্কুলেই শিবিরের নেতাদের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বন্টন করে দেয়া হয়- যাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব হলো শিবিরের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে ছাত্রদের বুঝানো, বায়তুল মাল সংগ্রহ করা এবং শিবিরের শিশু-কিশোর পত্রিকা ‘কিশোর কন্ঠ’ সহ বিভিন্ন ইসলামী ধারার প্রকাশনা বিক্রি করা।
নিয়মিত একাডেমিক কোচিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চট্টগ্রামে শিবির নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার। নিয়মিত একাডেমিক কোচিংয়ের জন্য ‘প্রবাহ’ উল্লেখযোগ্য। যা মূলত: শিক্ষার পাশাপশি ইসলামী ধ্যান ধারণায় উদ্বদ্ধুকরণসহ শিবির সদস্য তৈরীর অন্যতম কারখানা। ইতিমধ্যে ‘প্রবাহ’ নগরীতে আরো কয়েকটি শাখার মাধ্যমে কার্যক্রমে পরিধি বৃদ্ধি করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য রয়েছে ‘ইনডেক্স’। মেডিকেল কোচিং সেন্টার রেটিনাও শিবির কর্মী সংগ্রহের অন্যতম প্রতিষ্ঠান। শিবির নেতাদের সুপারিশে এসব কোচিং সেন্টারে দরিদ্র ছাত্ররা অর্ধেক টাকা দিয়ে ভর্তি হতে পারে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে এসব ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়া হয় শিবিরের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের দায়িত্ব এবং শিবির নেতারাই তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার। আর এই কোচিং সেন্টারগুলো বেশীরভাগই শিবির অধ্যুষিত চকবাজার এলাকায়। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি টিচার্স মিডিয়া সেন্টার, যাদের নিয়ন্ত্রকও শিবির। এখান থেকেও শিবির তাদের সদস্যও সংগ্রহ করে। এসব কোচিং সেন্টার ও টিচার্স মিডিয়া সেন্টার হতে শিবির বছরে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করে যার বেশির ভাগই ব্যয় হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে।
নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় শিবিরের শক্ত ঘাঁটি গড়ে উঠেছে। চকবাজার হতে আন্দরকিল্লা সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে মেস ভিত্তিক ভাড়া নিয়ে শবির কর্মীরা চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসীন কলেজ কেন্দ্রীক সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। ২নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় চট্টগ্রাম পলিটেকনিক কলেজ কেন্দ্রীক এবং ফতেয়াবাদ, হাটহাজারী, অক্সিজেন সংলগ্ন এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্বববিদ্যালয় কেন্দ্রীক সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব মেসভিত্তিক বাসাগুলোকে বিভিন্নভাবে দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডারদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, সরকারী মুসলিম হাই স্কুল, মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল, সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারী ল্যাবরেটারী উচ্চ বিদ্যালয়, নাসিরাবাদ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, কাজেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, আগ্রাবাদ সরকারী কলেনী উচ্চ বিদ্যালয়, রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রেলওয়ে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুলগুলো কতিপয় জামাত সমর্থক শিক্ষকদের সহযোগিতায় নির্দ্বিধায় নিয়ন্ত্রণ করছে শিবির। প্রতিটি ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের নিকট নানা কৌশলে ও অভিনব কায়দায় বায়তুল মাল তথা অর্থ সংগ্রহ করছে।
বায়তুল মাল আদায় করতে শিবির নিচ্ছে বেশ কিছু অভিনব পন্থা। ২০০৬ সালের সরকারি চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে প্রসপেক্টাসের নামে ফরম প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল। আদায়কৃত এ অর্থ ছাত্র শিবিরের বায়তুল মাল ফান্ডে জমা হয়েছে বলে জানা যায়। এমনকি এ বছরও চট্টগ্রাম কলেজ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক শিবিরের নিয়ম নীতি ও আদর্শ সম্বলিত একটি প্রসপেক্টাস ২০টাকা মূল্য দিয়ে কিনতে হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের অবস্থানের ফলে বর্তমানে নির্জীব হয়ে আছে ক্ষমতাসীন ছাত্রদল। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো মাথা চাঙ্গা দিয়েও উঠতে পারছে না। জরুরী অবস্থাকে তোয়াক্কা না করে ছাত্র শিবিরের নেতা কর্মীরা গোপনে আলোচনা সভা, শব্বেদারী, গ্র“প দাওয়াতী কাজ, হল ও কটেজগুলোতে সিট নিয়ন্ত্রণ ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে দল বেঁধে শো-ডাউন করা কোন কিছুই বাদ দিচ্ছে না।
২০০১ সালের অক্টোবরে ক্ষমতাসীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে শুরু হয় ঘাতক জামাত শিবিরের ত্রাসের রাজত্ব। মূলত: শিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপ্রবেশ ঘটে ১৯৮১ সালে প্রফেসর এম এ আজিজ খান উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই। তখনই শিবির তাদের কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধিতে কার্যক্রম শুরু করে। স্বাধীনতা বিরোধী এ অপশক্তি সর্বপ্রথম রক্ত ঝরানো রাজনীতির অশুভ সূচনা করে ’৮৬ সালে ২৬ নভেম্বর। সেদিন বেলা আড়াইটার দিকে ছাত্র নেতা আব্দুল হামিদের দু’পায়ের রগ, দু’ হাতের কব্জিগুলো কেটে নিয়ে ক্যাম্পাসে বর্বর মিছিল করে ও হামিদের বন্ধু জসিমকে আলাওল হলের সামনে পাষবিক নির্যাতন চালায় ছাত্র শিবির ক্যাডাররা। ’৯০তে ছাত্র মৈত্রীর নেতা ফারুককে গুলি করে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামী এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী আজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে বহাল তবিয়তে আছেন। ১৯৯৪ এর ২৭ অক্টোবর তারা ছাত্রদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষকপুত্র নুরুল হুদা মুসাকে গুরুতরভাবে জখম করে। মৃত্যুর সাথে দীর্ঘ ১ সপ্তাহ পাঞ্জা লড়ে মৃত্যুবরণ করে। ১৯৯৭ সালের ৩সেপ্টেম্বর গুলি করে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম বকুলকে। ’৯৮সালের ৬মে শিবির ক্যাডার নাছির ও তার ভাগিনা রমজান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু আইয়ুব আলীকে হত্যা করে। ’৯৮তেই শহরগামী একটি বাসে গুলি করে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেক শিক্ষক পুত্র মুকফিকুস সালেহীনকে এবং একই বছরে তারা চারুকলা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র সঞ্জয় তলা পাত্রকে হকিষ্টিক, লোহার রড ও রিক্সার চেন দিয়ে পিটিয়ে বটতলী রেলস্টেশনে ফেলে দিয়ে যায়। দু’দিন পরে সঞ্জয় তলাপাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আর ’৮১ তে অনুপ্রবেশকারী শিবিরের সেই প্রধান লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয় ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ছাত্রলীগ নেতা আলী মতুর্জাকে হত্যা করার মধ্য দিয়েই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ও দখল করে ফেলে শিবির। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায়ও সক্ষম হয়েছে শিবির। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মাত্রা বর্তমানে চরমে। সূত্রে জানা যায়, জোট শাসনামলে নিয়োগ প্রাপ্ত দু’শতাধিক শিক্ষকের মধ্যে প্রায় ১৩০ জনই জামাত শিবির সমর্থক। নানা অনিয়মের মাধ্যমে তারা এখন রামরাজত্ব চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৮টি হলের মধ্যে অধিকাংশ হলের প্রভোস্ট পদগুলোও এখন শিবিরের দখলে। হলগুলোতে চলে শিবিরের নৈরাজ্য, চলে শিবিরের স্ব-ঘোষিত আইন। শিবির ক্যাডারদের ইশারায় শিক্ষার্থীদের দৈনিক রুটিন তেরী হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠা, টিভি দেখা, পেপার পড়া ও ঘুমানো সবই শিবির ক্যাডারদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। হলগুলোতে চাঁদাবাজি ও সিট দখল বাণিজ্য নিত্যদিনের ঘটনা। কোন শিক্ষার্থী শিবির ফান্ড তথা বায়তুল মাল না দিলে তার উপর চলে অমানবিক অত্যাচার। ইসলামী রাজনীতি সক্রিয় রাখতে শিবির অমুসলিম শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও হাতিয়েয় নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রতি বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিবিরের আয় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। প্রায় প্রতিটি হলই শিবিরের টর্চারিং সেলে পরিণত হয়েছে। সামান্য অপরাধে শিক্ষার্থীদের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। সামান্য এদিক সেদিক হলেই সিট হারাতে হয় শিক্ষার্থীদের। ব্যাপক চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে শিবির নেতারা মোটর সাইকেল হাকিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। ছাত্রলীগও বাম সংগঠন সমর্থন করার অপরাধে অনেক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়কে বাধ্য করেছে শিবির।
সংস্কৃতিঙ্গানেও বাধা সৃষ্টি করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্টকারী শিবির। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোন অনুষ্ঠান করতে হলে অনুমতি নিতে হবে শিবিরের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গত বছর প্রথমবারের মতো আয়াজন করেছিল বৈশাখী উৎসবের। কিন্তু শিবির ক্যাডাররা ঐদিন ক্যাম্পাসে বিনা অজুহাতে ধর্মঘট ডেকে বৈশাখী উৎসব বন্ধ করার অপতৎপরতা চালিয়েছিল, কিন্তু শিক্ষার্থীরা নগরীর ষোলশহর রেল স্টেশনে পালন করেছিল এই উৎসব।
নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিবিরের কার্যক্রমের আধিপত্য বিস্তারের ফলে অভিভাবক মহল শংকিত হয়ে পড়েছে। স্কুল জীবনেই রাজনীতির কালো থাবার কবলে পড়ছে ছাত্ররা। এদের মধ্য থেকেই ভবিষ্যতে ক্যাডার বানানোর নীল নকশা তৈরী ও সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে শিবির। ইতিমধ্যে দেশের জঙ্গী সংগঠনগুলোর সাথে শিবিরের সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে। সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে ইসলামী মনোভাব সৃষ্টি করে জঙ্গি তৈরীরও আভাস পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রভাব বিস্তারের যে প্ল্যান নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে- তা শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে বলে সচেতন অভিভাবক মহল ধারণা করেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×