somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীব ও জীবনের রহস্য - (অমরত্বের হাত ছানি)

১৭ ই জুন, ২০১০ সকাল ৭:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৃত্যুকে যদি আমরা জিন গত বৈশিষ্ট্য হয়, তবে এর প্রতিকার সম্ভব আর এর ফলে মানুষ পেতে পারে অমরত্বের স্বাদ। যেহেতু জীবের প্রতিটি জৈবিক কার্যকলাপ জীন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেহেতু মৃত্যুর জন্যও কোন না কোন জীন দায়ি। লীথ্যাল জীন বা মারণ জীন ইতিমধ্যে বিভিন্ন জীবে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। লীথ্যাল জীন বিশেষ কোন জীন নয়, খুব সাধারন একটি জীন; যা মৃত্যুকে ত্বরাণিত করে ঘটায় অসাধারণ একটি ঘটনা। লীথ্যাল জীন যদি কোন জীবে ডমিনেন্ট হয় তবে ঐ জীবটি ভ্রুন অবস্থাতেই মারা যাবে। তাই লীথ্যাল জীন শুধুমাত্র রিশেসিভ (অধিকাংশ হেটারোজাইগোটিক) অবস্থাতেই পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়। লীথ্যাল জীন প্রায়ই কিছু না কিছু ফেনোটাইপিক (যা সহযে সনাক্ত করা যায়, বাহ্যিক) বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন Drosophila এর চোখের বিশেষ রং এর জন্য দায়ি জীন রিশেসিভ লীথ্যাল হিসাবে কাজ করে, এছাড়াও ইদুরের গায়ের রং হলুদ হবার জন্য দায়ি জীন লীথ্যাল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে লীথ্যাল জীন অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গের বিকৃতি ঘটায়। যেমন, Drosophila এর একটি লীথ্যাল জীন, তার পাখা ছোট করে দেয়; আবার মুরগীর লীথ্যাল জীনের জন্য, পা ছোট ও বাকানো হয়। গরুর পাঁচটি পা সৃষ্টি হয়। মানুষের ক্ষেত্রে আঙ্গুলে দুটি গীটের সৃষ্টি হয়, এই রোগকে বলে Brachyphalangy. কখনো কখনো অসম্পূর্ণ ডমিন্যান্স লীথ্যাল জীনের উপস্থিতি হেটারোজাইগাস অবস্থায় প্রকাশিত হয়। এসমস্ত লীথ্যাল জীনকে খুব সহজেই বর্জণ করা যায় বার বার fertilization ঘটিয়ে। আবার কিছু কিছু জীন আছে যারা লীথ্যাল হিসাবে কাজ করে; জীবের পূর্নঙ্গ অবস্থায়। এসমস্ত জীনের প্রভাবে জীব ভ্রুণ অবস্থায় মারা যায় না; কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন জীন বহনকারি জীব তার জনন সম্পন্ন করতে পারে। এধরনের জীনের ক্ষেত্রে যদি ৫০% এর বেশী সংখ্যক জীব মারা যায় তবে তাকে সেমি লীথ্যাল আর কম মারা গেলে তাকে সাব-ভাইটাল জীন বলে।

এখন কথা হচ্ছে লীথ্যাল জীন বর্জন করলেই কিন্তু কোন জীব অমর হয় না। লীথ্যাল জীন বর্জন করলে জন্মগত বিকলঙ্গতা রোধ করা যায়; এবং এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে শিশুটি দৈহিক বিকলঙ্গতার জন্য মারা যাবে না। যা বর্তমানে চেকেৎসা হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কিন্তু অমরত্ব লাভ করতে হলে কি করতে হবে? প্রথম কথা হল স্বাভাবিক মৃত্যু রোধ করতে হবে। সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ইমিিউনো সিস্টেমে জং ধরতে লাগে, যা রোধ করতে হবে। ইমিউনো সিস্টেম ঠিক রাখতে হলে নিয়মিত ডায়েট, শারিরীক পরিচর্যা করতে হবে, সেই সাথে কেমিক্যাল যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। (কঠিন ব্যাপার) এতো গেল প্রাথমিক কথা, এরপর যা দরকার, তা দেবে বায়োটেকনোলোজি।
মানুষের গ্রোথ হরমন চিরকাল নি:সরণ হয় না। শিশু অবস্থায় এর নি:সরণ বেশি থাকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা আবার কমতে থাকে। ১৮-২৩ বছর বয়সের পর মানুষের উচ্চতা স্বাধারণত আর বৃদ্ধি পায় না, এর কারন গোথ হরমনের নি:সরণ কমে যাওয়া। বৃদ্ধ বষসে এর নি:সরণ পুরোপুরি থেমে যায়, ত্ই এসময় কোন কোষ মারা গেলে তা পূরণ হয় না। তাইতো বৃদ্ধ বয়সে শরীরের চামড়া কুঁচকে যায়, কারন তখন শরীরের চামড়ার নিচের পেশী কোষগুলো মরে যায়। শিশু বয়সে গ্রোথ হরমন নি:সরণ কম হলে বামন দশা আর বয়স্ক অবস্থায় নি:সরণ বেশি হলে গরিলা দশা হয়। সুতরাং যুবক বয়সে যে পরিমান গ্রোথ হরমন নি:সরন হয় তা দেহের জন্য কনস্ট্যান্ট করতে হবে। গ্রোথ হরমনের প্রভাব কমতে থাকে সেকেন্ডারী সেক্সুয়াল ক্যারেক্টারের প্রভাবে বলে ধারনা করা হয়; বিজ্ঞানীরা যার সঠিক কারন নির্ণয়ের চেস্টা করে যাচ্ছেন। গ্রোথ হরমনের নি:সরন স্বাভাবিক রাখলে দেহ স্বাভাবিক থাকবে। তারপর আরো বিষয় আছে; বয়স্ক অবস্থায় যখন ইমিউনো সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ে এবং গ্রোথ হরমনের নি:সরন কমে যায় তখন সাথে সাথে আরো অনেক ধরনের হরমনের নি:সরন কমতে থাকে। আর মৃত্যু এগিয়ে আসতে থাকে ধিরে ধিরে।

তাই অমরত্বের জন্য দরকার প্রতিটি হরমন সমন্ধে বিষদ জ্ঞান; কোন জীন কোন হরমন নি:সরণ করে এবং কোন জীন তাতে বাধা দেয়, তা নির্ণয় করতে হবে সঠিকভাবে। এরপর দরকার প্রতিটি হরমনের মাঝে কি ধরনের ইন্টার-অ্যাকসান হবে তা সঠিক ভাবে নির্ণয় করা। যেমন গ্লুকাগন হরমন রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বাড়ায়, আর ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের পরিমান কমায়। এদের নি:সরন স্বাভাবিক না থাকলে যে রোগটি হয় তার নাম ডায়াবেটিস!

এরপর জানা দরকার প্রতিটি জীন সমন্ধ্য এবং তাদের বেজ সিকোয়েন্স সমন্ধে। দেখতে হবে কোন জীন লীথ্যাল জীনকে এক্টিভেট করে, বা সে সমস্ত হরমন নি:সরন করে যা জীবের জীবনী শক্তি কমিয়ে দেয়; এবং জীবটিকে নিয়ে যায় মৃত্যুর পথে। মৃত্যুতে আসলেই যদি হরমন দায়ি থাকে হবে ডায়াবেটিসের মত মৃত্যুকেও বেধে ফেলতে পারবে বায়োটেকনোলোজি। আর ডায়াগনোসিস শেষে যদি দেখা যায় এর জন্য দায়ি কোন জীন, তবে তার জন্য আছে জীন থেরাপি। যেখানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে একটি জীন অপর একটি সুস্থ জীন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। তাহলে কি বায়োটেকনোলোজি মানুষকে অমরত্বের স্বাদ দিতে পারবে?

(কিছুটা ফিকসান হয়ে গেল :) )

আগের লিখাগুলো
১। জীবনের সূত্রপাত

২।জীবনের বৈশিষ্ট্য

৩। মৃত্যুর কালো হাত

আসছে >>> জীন থেরাপি
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫৭
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×