জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
Published : 24 Aug 2013, 11:26 AM
শনিবার বিকালে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে উপাচার্য অপসারণের দাবিই তুলে ধরবেন বলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
গত চারদিন ধরে অচল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনকারী ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’।
ফোরাম পদত্যাগ চাইলেও তা মেনে নিতে নারাজ নির্বাচিত উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চাইলেই তিনি পদত্যাগ করবেন।
তার বক্তব্য, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি অযৌক্তিক এবং এতে সব শিক্ষকের অংশগ্রহণ নেই।
দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট এই অচলাবস্থা কাটাতে শুক্রবার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক হানিফ আলী শনিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনিসহ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন।
“সেখানে উপাচার্য আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের একদফা দাবি তুলে ধরা হবে,” বলেন তিনি।
প্রতিনিধি দলে সাধারণ শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান, বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ ফরিদ আহমদ, প্রীতিলতা হলের প্রাধ্যক্ষ লুৎফর রহমান থাকছেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা হুমকি দিয়েছেন, ২৬ অগাস্টের মধ্যে উপাচার্য পদ না ছাড়লে তাকে ‘বাধ্য’ করা হবে।
শুক্রবার শিক্ষক ফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দেয়া হয়। সেই সঙ্গে ধর্মঘটও চালিয়ে যাচ্ছে ফোরাম।
অন্তর্কোন্দলে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহতের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করলে গত বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয় আনোয়ার হোসেনকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের এই শিক্ষক পরবর্তীতে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে স্থায়ী হন।
অধ্যাপক আনোয়ারবিরোধী আন্দোলনে অধ্যাপক শরীফ এনামুল সমর্থকদের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছেন বিএনপি সমর্থক শিক্ষকরাও।
শিক্ষকদের দুটি সংগঠন ফোরামের কর্মসূচির সঙ্গে ভিন্ন মতের কথা জানিয়েছে।
তাদের একটি ‘শিক্ষক মঞ্চ’র মুখপাত্র রায়হান রাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উপাচার্যের পদত্যাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যার সমাধান করে দেবে না।”
সাধারণ শিক্ষক পর্ষদ নামে অন্য সংগঠনের আহ্বায়ক আহমেদ রেজা বলেন, এ ধরনের অবরোধ কর্মসুচি হাই কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্দোলনকারীদের উচিত শিক্ষকসুলভ আচরণ করা।
কয়েক মাস আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতি আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বাধা না দেয়ার নির্দেশ দিলে পিছু হটে শিক্ষক সমিতি। এরপর ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’ ব্যানারে নতুন কৌশলে আন্দোলন শুরু হয়।