somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিক্রিয়া

১৪ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয়
পাঠক, শুভেচ্ছা জানবেন।
৪মে ২০১০ এ প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম’ কলামে ‘লালদীঘিতে সুইমিংপুল!’ লেখাটির একটি প্রতিক্রিয়া প্রেরণ করি ৭মে ২০১০। আজ ১৪জুন ২০১০ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়াটি প্রকাশ করা হয়নি। এতদিন অপেক্ষা করার আরো একটি কারণ হলো, বিশ্বজিৎ চোধুরী দশ/বারদিন অন্তর ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম’ নিয়ে হাজির হন। দেখি সেখানে আমার প্রতিক্রিয়ার কোন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয় কিনা। কিন্তু সেখানেও (৪জুন প্রকাশিত ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম’ কলামে) আমার প্রতিক্রিয়ার কোন প্রসঙ্গ নেই। এতদিন অপেক্ষা করে যখন দেখলাম আমার প্রতিক্রিয়াটি প্রকাশ করা হল না, তখন বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ‘লালদীঘিতে সুইমিংপুল’ লেখাটির অসংগতি সম্বলিত আমার প্রতিক্রিয়াটি প্রকাশের জন্য ‘ব্লগ’ এর শরণাপন্ন হলাম। প্রতিক্রিয়াটি প্রকাশ করা প্রয়োজন এইজন্য যে, প্রথম আলো বহুল প্রচারিত একটি দৈনিক। ব্যাপকভিত্তিক পাঠকের হাতে পৌঁছে পত্রিকাটি। সেখানে ভুলের যদি সংশোধনী দেয়া না হয় বা ভুল চিহ্নিত করে প্রতিক্রিয়া পাঠানো না হয়, তাহলে পাঠক ভুলটাকেই সঠিক বলে ধরে নেবে।
প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা বিভাগ এখন হয়তো বলবে, আমরা জাহেদুল আলমের প্রতিক্রিয়াটি পাইনি। বছর কয়েক আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক বর্তমানে একটি ফ্যাকাল্টির ডিন ডঃ গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়ার প্রেরিত একটি প্রতিক্রিয়া (সাহিত্য সাময়িকীতে) প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের হাতে পৌঁছেনি বলে কয়েক মাস পর অন্য একটি প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছে। যা পাঠক মহলের অনেকেই বিশ্বাস করেনি। কেননা, প্রথম আলোর মত প্রতিষ্ঠানে তা-ও আবার সাহিত্য সাময়িকীর মত সাপ্লিমেন্টারির একটি লেখা কেউ গায়েব করে ফেলবে, তা অবিশ্বাস্য। বিশ্বজিৎ চোধুরীর লেখার প্রতিক্রিয়া প্রেরণের কুরিয়ার সার্ভিসের রসিদটি আমার কাছে এখনো সংরক্ষিত আছে।
জয় হোক মত প্রকাশের।
প্রতিক্রিয়াটি নিম্নে দেয়া হল.......


প্রতিক্রিয়া
নগর দর্পন : চট্টগ্রাম
লালদীঘিতে সুইমিংপুল ও কনকর্ড
জাহেদুল আলম

গত ৩০এপ্রিল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের মুসলিম ইন্সটিটিউট (মুসলিম হল নামে পরিচিত) শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র এ, বি, এম, মহিউদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বললেন, (স্মৃতি থেকে লিখছি) কিছু লোক আছে সবকিছুতেই বিরোধিতা করবে। আপনারা গরীবরা যেখানে চিটাগাং ক্লাবের সুইমিংপুলে আপনাদের সন্তানদের সাঁতার শেখাতে পারছেন না, তাদের জন্য আমি লালদীঘিতে একটি আন্তর্জাতিক সুইমিংপুল বানাচ্ছি; আপনারা সেখানে বিনা পয়সায় আপনাদের সন্তানদের (স্কুল পড়ুয়া) সাঁতার শেখাতে পারবেন। - তাঁর এই বক্তব্যে মনে দু’টি জিজ্ঞাসা হয়েছে। প্রথমত, মুসলিম হলে সেদিন গরীব কোন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন কি? দুই একজন থাকলেও থাকতে পারেন। কিন্তু, যারা অর্ধকোটি টাকা দামের গাড়ি হাঁকিয়ে তাদের শিশু সন্তানদের পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়েছেন, তাদের তো আর গরীব বলা চলে না। দ্বিতীয়ত, গরীবদের সন্তানের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম শহরে যদি সিটি কর্পোরেশন আন্তর্জাতিক মানের সুইমিংপুল বানাতে চায়, সে লালদীঘিতে কেন? এই নগরীতে কি সুইমিংপুল বানানোর মত জায়গার এতই অভাব? - এই প্রশ্নটির প্রাসঙ্গিকতা, লালদীঘি ও লালদীঘির ময়দানের ঐতিহ্য ও অপরিহার্যতা এবং সুইমিংপুল বানানোর সম্ভাব্য চমৎকার স্থানের কথা অত্যন্ত সুন্দর ও যুক্তিনিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন গত ৪মে বিশ্বজিৎ চৌধুরী তাঁর ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম, লালদীঘিতে সুইমিংপুল!’ কলামে। তিনি ঠিকই লিখেছেন, ‘কোথায় কি করতে হবে এই ঔচিত্যবোধের অভাব থাকলে কোন উন্নয়নই জনকল্যাণে আসে না।’
কলামটিতে এক পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন তথা মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী কর্তৃক কনকর্ডের (সরকার থেকে ইজারাপ্রাপ্ত) দু’টি প্রতিষ্ঠান জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স ও ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক আয়ত্বে নেয়ার সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এর বিষয়টি নিয়ে একটু কথা বলা প্রয়োজন বোধ করছি।
মহিউদ্দিন চৌধুরী তথা সিটি কর্পোরেশন কনকর্ডের ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি ওয়ার্ল্ডের প্রতি মনোযোগী হয় মূলত কনকর্ডের ঐ দু’টি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও কনকর্ডের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে অনুরুদ্ধ হয়ে। ঘটনার সূত্রপাত বছর কয়েক আগে। মালিক পক্ষ কর্তৃক কনকর্ডের ফয়’স লেক কেন্দ্রিক শ্রমিকদের উপর নির্যাতন, শ্রমিকদের উপর গুলি চালানো (আনসার বাহিনী দ্বারা) - এসব কর্মকাণ্ডের আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে তথ্য উদঘাটিত হয়, চট্টগ্রামের ফয়’স লেকে তো দূরের কথা, দেশের কোথাও কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি ওয়ার্ল্ড নামে কোন কিছু নেই। যেটা আছে সেটা হচ্ছে, কনকর্ড এ্যান্টাটেইনমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে, যাত্রীবাহি গাড়ির গায়ে স্টিকার ও বিজ্ঞাপন লেখা হচ্ছে এবং সর্বোপরি ফয়’স লেকের প্রবেশ পথে তোরণে বড় আকারে লেখা আছে ‘অ্যামিউজমেন্ট পার্ক’ ও ‘সি ওয়ার্ল্ড’। কিন্তু, বাস্তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন দফতরে এই ধরনের নামে কোন প্রতিষ্ঠান বা বিনোদন কেন্দ্রের অস্তিত্ব নেই। আছে কনকর্ড এ্যান্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি।
একট কথা প্রচলিত আছে, বিজ্ঞাপন হারানোর ভয়ে বেসরকারী ও ব্যাক্তিমালিকানাধিন কোন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি, অসংগতি ইত্যাদি নিয়ে কোন সংবাদ মাধ্যম কিছু প্রকাশ করে না। অবশ্য দু’টি গ্রুপ অব কোম্পানির পরিচালনায় কয়েকটি সংবাদপত্রে পরষ্পর বিরোধী দুর্নীতির খবর ছাপা হচ্ছে। এসব খবরের কোন গতি প্রকৃতি ও ন্যায্যতা বোঝা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে জনাব বিশ্বজিৎ চৌধুরীর কাছে আমাদের অনুরোধ, তিনি তাঁর ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম’ কলামে বিভিন্ন সময় অনেক রহস্যাবৃত ও জটিল তথ্য, যেমন, প্রকৃত সাদা মনের মানুষ প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহদের বাদ দিয়ে অন্যদের পুরষ্কৃত করা, নগরীর পশুশালার জায়গাটিতে প্রকৃতপক্ষে মহিউদ্দিন চৌধুরী কি করতে চাচ্ছেন - যার জন্য বিনোদ বিহারী চৌধুরী প্রায় শতবর্ষে এসেও আন্দোলনে রাস্তায় নামলেন, চাক্তাই খাল খননের প্রকৃত ঘটনা ইত্যাদি অনেক সহজবোধ্য ও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে উপস্থাপন করেছেন; তেমনি কনকর্ডের অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি ওয়ার্ল্ড বিষয়ক এই ঘাপলা তুলে ধরবেন কি? ‘বাংলা সম্মিলন’ ও দৈনিক প্রথম আলোর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের (ফয়’স লেকে অনুষ্ঠিত) মাধ্যমে এটুকু উপলব্ধি করা গেছে, কনকর্ডের উর্ধ্বতন কর্তব্যাক্তিদের সাথে বিশ্বজিৎ চৌধুরীর হৃদ্যতাপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সেই সূত্রেও তিনি অনেক অজানা ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নির্বিঘ্নেই পাবেন। উপরন্তু তাঁর রয়েছে সাংবাদিক ও কলামিস্ট সত্তা। ফয়’স লেকে কনকর্ডের ‘অ্যামিউজমেন্ট পার্ক’ ও ‘সি ওয়ার্ল্ড’ এর প্রকৃত নাম, সেখানকার শ্রমিক বিদ্রোহ ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়ত্বে নেয়ার চেষ্টার নেপথ্য তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ‘নগর দর্পন : চট্টগ্রাম’ এ আপনার একটি লেখা পড়ার অধীর আগ্রহে আছে চট্টগ্রাম ও দেশের অনুসন্ধিৎসু পাঠক। জনাব বিশ্বজিৎ চৌধুরী, আশা করি, পাঠকের আগ্রহের ও কৌতুহলের প্রতি নিশ্চয়ই সম্মান জানাবেন।

জাহেদুল আলম
কাজী বাড়ি, কাজীর দেউড়ী,
চট্টগ্রাম।
০১৭১২১১০৭৭১
















০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×