somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সারাদেশে কত পতাকা উড়ছে, আজও কত পথশিশু খালিগায়ে হাঁটছে....

১৩ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা দুনিয়া জুড়ে এখন ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি। আমাদের দেশও কম যাচ্ছেনা। ঘর থেকে বের হলেই অথবা ছাদে উঠলেই দেখা যায় হাজার হাজার পতাকা পতপত উড়ছে। প্রজেক্টর দিয়ে কোথাও খেলা দেখানো হচ্ছে। প্রিয় দল জিতলে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে। সেদিন পত্রিকায় তো পড়লাম নারায়ণগঞ্জের এক ব্যক্তি তার বাড়িটিকে ব্রাজিলের পতাকার রংয়ে রাঙ্গিয়েছেন। সবার কাছেই ব্যাপারটা অনেক মজার এমনকি আমার কাছেতো অবশ্যই। আমি ব্রাজিলের অন্ধভক্ত। প্রতিবারই আমাদের দেশে ব্রাজিলের পতাকা কম দেখা যায়। এবারও তাই। চারিদিকে শুধু আর্জেন্টিনা আর আর্জেন্টিনা। তাই ভাবলাম আমিও একটা পতাকা কিনব। যেই কথা সেই কাজ।
বাসার সামনেই পেয়ে গেলাম এক ফেরিওয়ালা। ৩০০ টাকা দিয়ে কিনে ফেললাম ব্রাজিলের এক বিশাল পতাকা। আমিতো পতাকা কিনে খুশিতে গদগদ। এখন লাগানোর পালা। অস্থির হয়ে গিয়েছি কখন পতাকা লাগাবো। ভাবছি কোথায় লাগানো যায়? রাস্তার একটা টোকাই ছেলেকে নিয়ে আসলাম নাম জাকির। ঠিক করলাম ওকে দিয়ে বাসার গেইটের উপরে লাগাবো যাতে পুরো গেইট জুড়ে পতাকা দেখা যায়। জাকিরকে উঠিয়ে দিলাম গেইটের উপরে। উঠতে উঠতে জাকির বলল
-মামা কত লইছে এইডা?
আমি দাম বললাম।
জাকির- খেলা শেষ হইলে এইডা খুইল্লালাইবেন?
আমি- কেন?
জাকির- আমারে এইডা দেওন যাইবো?
আমি- খেলা শেষ হয়ে গেলে তুই এটা দিয়ে কি করবি?
জাকির- বেনরাইতে(মাঝরাত) অনেক শীত করে, গাও দেওনের কিসু নাই। এইডা দিলে আমি গাও দিতাম।
কিছুক্ষনের জন্য আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। নিজেকে অনেক অপরাধী মনে হল। ব্যাপারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমরা আসলে কি করছি? কি হবে এত কিছু করে? আমাদের দেশের হাজারো জাকির আজ খালিগায়ে হাঁটছে। জামাকাপড়তো অনেক পরের ব্যাপার ওদের তিনবেলা খাবারই জুটছেনা। শীতে, বৃষ্টিতে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। আর এদিকে আমরা অযথাই টাকা খরচ করছি। কি দরকার এত মাতামাতি করার। ওদের জন্য কিছু করি আমরা। পতাকা লাগালেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হবেনা। অথচ পতাকা কেনার টাকা দিয়ে ওদেরকে সাহায্য করলে ওদের মুখের হাসিটা দেখা যাবে। এই একটু হাসি বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে কম কিসে?

পতাকাটা আমি খুলিনি। জাকিরকে দিয়ে লাগিয়েছি। আর আমি বাসা থেকে জাকিরের জন্য একটা কাঁথা, কিছু খাবার এনে ওকে দিলাম আর বললাম “খেলা শেষ হলে তুই এসে পতাকাটা নিয়ে যাস”। ও খুব সুন্দর একটা হাসি দিল আর সালাম দিয়ে চলে গেলো। ওর হাসিটা আমি কিছুতেই ভুলতে পারছিনা। অসাধারণ একটা হাসি।

আমি জানিনা জাকিরের জন্য আমি কতটুকু করতে পেরেছি। আমি একাও পারবোনা সব জাকিরের মুখে হাসি ফোটাতে। তবে আমরা সবাই পারি ওদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১০ রাত ১১:২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×