somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভবিষ্যতে যোগাযোগ প্রযুক্তিতে এগুচ্ছে বাংলাদেশ।

০৯ ই জুন, ২০১০ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীতে দিন দিন বাড়ছে জনসংখ্যার চাপ। সেইসঙ্গে প্রতিদিনের অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যোগাযোগের প্রকট এক সমস্যা। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারি তরফে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়াও হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প আলোর মুখও দেখেনি আবার বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দাঁড়িয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা শহরকে পরিছন্ন নগর হিসেবে গড়ে তুলতে, যানযট কমাতে এবং নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হলে বর্তমান সরকারের নেয়া বেশ কিছু কর্মসূচি সফলভাবেই সম্পন্ন করতে হবে। সরকারের গৃহীত এসব কর্মসূচির মধ্যে যেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন আছে তেমনি রয়েছে প্রযুক্তির উৎকর্ষতাও।

বর্তমান সরকারের ‘ভিশন ২০২১‘ কার্যকর করতে গত অর্থবছরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এসব প্রকল্প প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দিক থেকে বাংলাদেশকে বড় স্বপ্ন দেখাতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এইসব প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে দেশ অনেকটাই এগিয়ে যাবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটির প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরুও হয়েছে। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা বৃত্তাকার উড়াল সড়ক বা ফ্লাইওভার এবং মেট্রোরেল। এছাড়াও আছে হাইটেক পার্ক ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনবৃদ্ধিসহ বেশকিছু প্রকল্পও

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরঃ
রাজধানীর অন্যতম এয়ারপোর্ট শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ওপর চাপ কমাতে বর্তমান সরকার নতুন একটি এয়ারপোর্ট স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। জানা গেছে, ঢাকার অদূরেই তৈরি হবে এ এয়ারপোর্ট। এর নাম ঠিক হয়েছে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।


সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের তথ্য থেকে জানা গেছে, নতুন এ এয়ারপোর্টই হবে দেশের প্রধান এয়ারপোর্ট। ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের সব ধরনের সুবিধাই নিশ্চিত করা হবে। আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার আর সমন্বয়ে এ এয়ারপোর্টকে গড়ে তোলা হবে যথেষ্ট মানসম্পন্ন করেই।

জানা গেছে, আধুনিক জাম্বো এয়ারক্রাফট এয়ারবাস ৩৮০ সহ সবরকমের প্লেন উঠানামার ব্যবস্থা থাকবে নতুন এই এয়ারপোর্টে।

আধুনিক এই এয়ারপোর্টে থাকবে এনার্জি সেভিং পদ্ধতি, ভবিষ্যতে সুবিধা বৃদ্ধির ব্যবস্থা, সর্ব্বোচ নাগরিক সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এতে দুইটি প্রধান রানওয়ে ছাড়াও জরুরী কাজে ব্যবহারের জন্য থাকবে তৃতীয় একটি রানওয়ে। এছাড়াও এতে যোগ হবে ট্যাক্সি ওয়ে, আধুনিক ও সফিসটিকেটেড প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল কমপ্লেক্স এবং কন্টোল টাওয়ার সহ নানারকম ব্যবস্থা।

জানা গেছে, বিমান বন্দর তৈরিতে ব্যয় হবে সাড়ে সাতশো কোটি মার্কিন ডলার বা সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, ২০২১ সালের মধ্যে এই এয়ারপোর্ট তৈরির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতুঃ
দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো হতে যাচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু তৈরির পর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরিতে এই সেতুর বিকল্প ছিল না। জানা গেছে, সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে জমি অধিগ্রহণ। আর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরেই শেষ হবে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ এই সেতু তৈরির কাজ। এ সেতুর নকশা তৈরির বিষয়টি ক্যাবিনেটে অনুমোদন পায় ২০০৯ সালের ১৯ জানুয়ারি। আর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মনসেল একোম লিমিটেড এর সঙ্গে চুক্তি হয় ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি।


এই সেতুর নকশায় রয়েছে নদী শাসন, সংযোগ সড়ক ও তীর সংরক্ষণের ব্যবস্থাও।

জানা গেছে, অর্থনৈতিক ও কারিগরি বিষয়ে চূড়ান্ত সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকা)। এছাড়াও এই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট।

জানা গেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু এশিয়ান হাইওয়ের (এএএইচ-১) সঙ্গে যুক্ত হবে। বলা হচ্ছে, এতে দেশের জিডিপি বাড়বে ১.২ শতাংশ । সড়ক ছাড়াও এতে থাকছে রেল যোগাযোগও।

সেতুর নির্মাণকাল হবে সেপ্টেম্বর ২০১০ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩ সাল নাগাদ। এই প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বা ২.৪০ বিলিয়ন ডলার । সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৬.১৫ কিলোমিটার। এই সেতুটিতে যুক্ত থাকবে ৩.৮০ কিলোমিটার সড়ক এবং ৫.২৭ কিলোমিটার রেলপথও। সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক থাকছে ১২.৫০ কিলোমিটার। জানা গেছে, সেতু তৈরিতে নদীশাসনের প্রয়োজন পড়বে ১৪ কিলোমিটার।

ঢাকা বৃত্তাকার উড়ালসড়ক বা সার্কুলার ফ্লাইওভারঃ

ঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান যানজট নিরসনে এই নগরের চারপাশে ফ্লাইওভার নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জানা গেছে, ৩২.২ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বর্তমান সরকারের। ২০০৯ সালে বুট পদ্ধতিতে এই ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকোনোমিক অ্যাফেয়ার্স (সিসিইএ)-এর অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক সমীক্ষাও চলছে বলেই জানা গেছে। এই বিষয়ে দরপত্র চাওয়া হয়েছিলো ১৯ ডিসেম্বর ২০০৯। আর দরপত্র খোলা হয়েছিলো ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১০।


ফ্লাইওভারের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৩২.২ কিলোমিটার। প্রথম ধাপে নির্মাণ করা হবে ১০.৮ কিলোমিটার। আর এর রুট হবে তেজগাঁও পুরোনো এয়ারপোর্ট থেকে সোনারগাঁও হোটেল, মগবাজার রেলওয়ে ক্রসিং, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী হয়ে শনির আখড়া। দ্বিতীয় ধাপে নির্মাণ করা হবে ১০.১ কিলোমিটার। এর রুট হবে সোনারগাঁও হোটেল থেকে কাঁটাবন, টিকাটুলী হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপে নির্মাণ করা হবে ১১.৩ কিলোমিটার। এর রুট হবে শাহজালাল এয়ারপোর্ট থেকে তেজগাঁও পুরোনো এয়ারপোর্ট।

ফ্লাইওভার নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।

মেট্রোরেলঃ
রাজধানীর মেট্রোরেল স্থাপনের প্রাথমিক সমীক্ষা শেষ করেছে জাইকা। জানা গেছে, প্রস্তাবিত মেট্রোরেলের রুট হবে উত্তরা থেকে পল্লবী, মিরপুর ১০, ফার্মগেট, শাহবাগ, বুয়েট, কাপ্তানবাজার হয়ে সায়েদাবাদ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৮ সালেই মেট্রো রেলের টিকেট কেটে ভ্রমণ করা যাবে।


জাইকার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে ১৮ টি স্টেশন থেকে প্রতি ঘন্টায় ৪০ হাজার যাত্রী বহন করা সম্ভব হবে। এ রেলের গতি হবে ঘন্টায় ৩৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

জানা গেছে, মেট্রোরেল বা পাতাল রেল মাটির নীচে স্থাপন করার সিদ্ধান্ত হলেও বেশিরভাগ স্থানে মাটির ওপরেই রাখা হবে এই রেললাইন।

অন্যান্যঃ
এসব ছাড়াও হাইটেক পার্ক, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, বিদ্যুত উৎপাদনের একাধিক প্রকল্পসহ অনেক প্রকল্পই বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এইসব প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পড়বে প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব

সূত্রঃ বিডি নিউজ ২৪
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:০১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×