অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল প্রথম বাংলা ব্যাকরণ (নাথানিয়েল ব্রাসি হেলহেডের লেখা) এবং বাংলী কর্তৃক(রাজা রাম মোহন রায়) রচিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ টা পড়ব। ভাবলাম পাবলিক লাইব্রেরীতে মনে হয় থাকবে। তাই গত বৃহস্পতিবার গেলাম লাইব্রেরীতে ইচ্ছা পূরন করতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলল বইদুটো পাওয়া যাবে না। কী আর করা পরে সেলফ থেকে চারটা বই নিলাম পড়ার জন্যে। তার মধ্যে একটা ছিল ধ্বনি পরিবর্তনের উপর বই, যাতে বিভিন্ন যুগে ধ্বনি পরিবর্তনের কিছু নমুনা দেখানোর জন্যে কিছু কাব্য ছিল। যদিও পুরোপুরি বুঝি নাই তার পরেও ৩টা বেশ ভাল লাগল। ভাবলাম ব্লগে দেওয়ার মত একটা টপিক পাওয়া গেল লিখে নিয়ে যাই তো পড়ে দেখেন কী আনলাম, ভাল লাগতেই হবে এমন না কিন্তু
১। চন্ডী মন্গল কাব্য: মুকুন্দরাম(ষোড়শ শতাব্দী)
বৈশাখে বসন্ত ঋতু সুখের সময়
প্রচন্ড তপন তাপ তনু নাহি সয়
চন্দনাদি তৈল দিব হয়্যা সহচরী
সামলী গামছা দিব সুবাসিত করি
এটার প্রথম লাইন: বৈশাখে বসন্ত ঋতু হয় কীভাবে!
শেষ লাইনে: সামলী মানে কী বুঝলাম না। (কেউ জানলে একটু আওয়াজ দিয়েন)
২। অন্নদা মন্গল কাব্য: ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর(অষ্টাদশ শতাব্দী)
কথায় হীরার ধার হীরা তার নাম
দাঁত ছোলা মাজা ছোলা হাস্য অবিরাম।।
গাল ভরা গুয়া পান গাথি মালা গলে।
কানে ঝড়ি রাঁড়ী কথা কয় ছলে।।
এটার দ্বিতীয় ও শেষ লাইন বুঝি নাই
৩। বোধ: জীবনানন্দদাশ(১৮৯৯-১৯৫৪)
ভালবেসে দেখিয়াছি মেয়ে মানুষেরে
অবহেলা করে আমি দেখিয়াছি মেয়ে মানুষেরে;
ঘৃণা করে দেখিয়াছি মেয়ে মানুষেরে,
আমারে সে ভালবাসিয়াছে,
আসিয়াছে কাছে;
উপেক্ষা সে করেছে আমারে,
ঘৃণা করে চলে গেছে যখন ডেকেছি বারে বারে---
ভালবেসে;
এটা আমার কাছে সবচেয়ে জটিল মনে হয়েছে। প্রথম তিন লাইনে দেখা যায় ভালবেসেছে, অবহেলা করেছে, ঘৃণা করেছে। পরের দুই লাইন যদি এর বিনিময় ধরি তাহলে ভালবাসার বদলে ভালবাসা পেয়েছে, অবহেলা করলে কাছে এসেছে এবং ঘৃণার বদলে ভালবেসে কাছে এসেছে।
আবার শেষ তিন লাইনে ভালবেসে ডাকলে উপেক্ষা এবং ঘৃণা করে চলে গেছে!
প্রথম দিকেই দেখা যাচ্ছে কবি ভালবাসলে ভালবেসেছে এবং ঘৃণা করলে কাছে এসেছে তাহলে পরে আবার কেন ঘৃণা করে চলে যাবে কেন(!) (মজা করছি না, যদি কেউ সঠিক ভাবে এর ভাবার্থ বুঝিয়ে দিতে পারেন তাহলে কৃতজ্ঞ থাকব)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১০ রাত ৯:০৫