বেঁচে থাকা এই শহরে
আমি জন্মান্তরের কথা জানিনা
তবে মরে বেঁচে থাকার ইতিহাস জানি।
ইট-বালি-সিমেন্টের এই শহরে
মনের আর্তিগুলো ডানা ঝাপটিয়ে মরে।
কেমন আছি বন্ধু দেখে যা।
রাত পোহালেই থলি হাতে
ছুটে চলি বাজারের দিকে
সুখের টুকরোগুলো তখন
পায়ের তলায় ম্রিয়মাণ ইতিহাস।
চাল-ডাল-তেল-নুন
সব বাজারেই জলছে আগুন
পকেটের অক্ষমতা নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো
তারপর বেরিয়ে আসা।
যন্ত্রদানবের চাকায় পিষ্ট হতে হতে
কোনমতে ঘরে ফেরা,
সে এক অন্য অধ্যায়।
নোনা বাতাসের গন্ধে সবকিছু ভেসে যায়।
আমার অফিসে যাবার তাড়া,
গিন্নীর কুঞ্চিত কপাল,
দাঁতের তলায় রুটির চর্বিত চর্বণ,
মাথায় ধারালো চিরুণির অবিরাম ঘর্ষণ,
অবশেষে রাস্তায়।
বাসের হ্যান্ডেল ধরে ঝুলতে ঝুলতে
অফিসের সারাদিনের হিসাব কষি।
ঘড়ির কাঁটার দিকে সতর্ক দৃষ্টি
হঠাৎ দেখি অফিস সময় পার।
চোখের সামনে নিত্য দিনের চিত্র
বসের রাগত দৃষ্টি
অপ্রিয় কথার অবিরাম বৃষ্টি
হাতের বাঁধন শিথিল হয়ে যায়
ব্যস্ ধপাস।
টুকরো সময়গুলো থমকে দাঁড়ায়
চারতলা ফ্ল্যাটের দোরগোড়ায়।
ঘরের বাতাসে বিধ্বস্ত বিলাপ,
হাসপাতালের বিছানায় নানা চিন্তার প্রক্কালাপ
গিন্নীর চোখেমুখে দুশ্চিন্তার বলিরেখা
কোথা থেকে আসবে চিকিৎসার টাকা
এই কি বন্ধু বেঁচে থাকা?