পোশাক শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন চালু নিয়ে বক্তব্য ‘অনধিকার চর্চা’ বলে লুটেরা হানাদার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। এই বক্তব্য জানিয়ে রাষ্ট্রদূতকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, যে চিঠির শিরোনাম- ‘ট্রেড ইউনিয়ন প্রশ্নে আপনি বলার কে?’
পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বক্তব্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনাকে গতকাল সোমবার এ চিঠি পাঠিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
হানাদার শোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেপথ্য কুচক্রের ফাঁদে পড়া বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের দাবি দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরী পোশাক কারখানাগুলোতে প্রচলিত ট্রেড ইউনিয়ন চালু করা। সস্তায় বাংলাদেশ থেকে পোশাক তৈরি করে নেয়ার অন্যতম প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র রহস্যজনকভাবে এই কারখানাগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের কথিত অধিকার দেয়ার জন্য সুপারিশ ও চাপ দিয়ে আসছে।
হানাদার শোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মজিনা শনিবার এক অনুষ্ঠানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন চালু করতে শিল্প মালিকদের কাছে দাবি জানায়। তার ওই অযাচিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মন্ত্রী চিঠিটি পাঠান বলে তথ্য কর্মকর্তা জহিরুল গতকাল সোমবার জানিয়েছেন।
চিঠিতে মন্ত্রী বলেছেন, “ট্রেড ইউনিয়ন চালুর বিষয়ে তৈরী পোশাক শিল্পের মালিকদের ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি- তার (রাষ্ট্রদূত) কূটনৈতিক শিষ্টাচার এবং পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা; বরং তার মন্তব্য বাংলাদেশের সরকারের প্রতি অনধিকারচর্চাপ্রবণ, পীড়াদায়ক এবং উসকানিমূলক বলে মনে হতে পারে।”
বাংলাদেশে পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালুতে তোড়জোড়কারী মজিনার নিজের দেশে কয়টি অঙ্গরাজ্যে কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার রয়েছে, তাও জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকী।
চিঠিতে পাটমন্ত্রী মজীনার উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমানে আপনার নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কয়টি অঙ্গরাজ্যে উৎপাদনশীল শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন থাকা না থাকা অপরিহার্যভাবে একটি দেশের সরকারের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বাংলাদেশ সরকার তৈরী পোশাক শিল্পে শ্রমিক কল্যাণ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে এবং শ্রম আইন-২০০৬ সংশোধন করতে যাচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসও জানে বলে মন্ত্রী জানান।
সংবাদপত্রপত্রে প্রকাশিত মজিনার বক্তব্যকে ধরে এই চিঠি পাঠিয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী। সেজন্য তিনি চিঠির শেষে লিখেছেন, “যদি সংবাদপত্রে প্রকাশিত আপনার বক্তব্য সত্য না হয়ে থাকে, তাহলে দয়া করে আপনার অবস্থান ব্যাখ্যা করুন, যাতে করে অচিরেই বিভ্রান্তির অবসান হয়।”