somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হজ্জ্ব - ইসলামের যে বিষয়টি আমার কাছে ধোঁয়াটে

০১ লা জুন, ২০১০ দুপুর ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। আমার পিতামাতা মুসলিম, তাই জন্মসূত্রে আমিও একজন মুসলিম। আমি যে মুসলিম হয়ে নিজের উপর বিরক্ত তা নয়, আবার মুসলিম হয়ে খুব বেশি গর্ববোধও করছি না। কারন পিতামাতা মুসলিম হওয়ায় ইসলাম নিয়ে যাচাই-বাছাই করার অনেক আগেই আমি মুসলিম হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হয়ে গেছি। আমি এখন তাই ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা, যাচাই-বাছাই করছি, বোঝার চেষ্টা করছি। তবে যেহেতু আমি ইসলাম সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না, তাই আমার চিন্তা ভাবনায় ভুল থাকাটাই স্বাভাবিক। আমি ইসলামের একটি বিষয় নিয়ে একমত নই, এই বিষয়টি আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ভুল-ভ্রান্তি সকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা রাখি।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি অন্যতম স্তম্ভ হল হজ্জ্ব। আমি যতদূর জানি, হজ্জ্ব হল প্রত্যেক ধনী মুসলিমের উপর ফরজ। হজ্জ্ব হল মক্কা, মদীনার নানা ইসলামিক ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন করে নির্দিষ্ট নিয়মে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রক্রিয়া।
হজ্জ্ব অতি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত। ইসলামী ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হযরত ইব্রাহীম (আ) তার পুত্রকে কুরবানী করার কাহিনী বিজড়িত স্থান গুলোকে ভ্রমণ করার মাধ্যমেই হজ্জ্বের উৎপত্তি। হযরত ইব্রাহীম (আ) এর সময় থেকেই মানুষ মক্কা ও মদীনায় হজ্জ্ব করে আসছে। তবে হযরত মুহাম্মদ (স) এর আমলে তা পূর্ণতা পায়। আমরা সকলেই জানি, মক্কা ও মদীনা সম্পূর্ণ মরুভূমি অঞ্চল, এখানে কোন রকম ফসল জন্মায় না। প্রাচীনকালে একমাত্র হজ্জের মৌসুমে আরববাসীরা যে অর্থ উপার্জন করত, সেই অর্থেই আরববাসীদের সারা বছরের ব্যয়ভার মিটত। এভাবে যখন অনেক মানুষ আরবে হজ্জ করতে আসা শুরু করল, তখন যে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জিত হত, তা দিয়েই আরবীয়রা ব্যবসা বাণিজ্য শুরি করল। আরবীয়রা হয়ে উঠল বণিক জাতি, আর্থিক ভাবে সচ্ছল।
হযরত মুহাম্মদ (স) এর ইসলাম প্রচারের ফলে হজ্জ আরো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠল। বর্তমানে ইসলামের ব্যপক প্রসারের ফলে, সারা পৃথিবী থেকে অগণিত মানুষ আরবে হজ্জ করতে যায়। এই হজ্জের সময় প্রতিবছর আরব সরকারের যে পরিমান অর্থ উপার্জন হয়, তা আরবের বাৎসরিক ব্যয়ের তুলনায়ও অনেক বেশি। এই বিপুল উপার্জনের ফলে সৌদি আরব বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম ধনী রাষ্ট্রগুলোর একটি। অনেকে হয়তো আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন, বলবেন সৌদি আরবের অনেক তেল, স্বর্ণ যা বিক্রি করেই তারা আজ এত ধনী। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই দেখবেন, আরবের এত খনিজ সম্পদ, কিন্তু এই বিপুল খনিজ সম্পদ উত্তোলনের অর্থ আরব সরকারের ছিল না। একমাত্র হজ্জে উপার্জিত অতিরিক্ত অর্থ দিয়েই তারা এসব খনিজ উত্তোলন শুরু করেছে। আর যেহেতু ইসলাম ধর্মের দিনদিন প্রসার ঘটছে, আরবীয়দের জন্য হজ্জ হয়ে উঠেছে একটি অনন্তকালের অর্থ উপার্জনের উপায়।
মানুষ হজ্জ করতে যায় তার সকল পাপ মোচনের আশায়। কোন বান্দা যদি অনুতপ্ত হয়ে হজ্জ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আমরা জানি, আল্লাহ সব দেখেন, শোনেন, বোঝেন। তিনি তার সকল সৃষ্টিকেই অনেক ভালবাসেন। তাই যদি হয়, তিনি তো তার সকল বান্দাকে যে কোন জায়গায়ই ক্ষমা করে দিতে পারেন। কবল মাত্র মক্কা মদীনায় গিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কি কোন যৌক্তিকতা আছে? আর যদি যৌক্তিকতা থেকেও থাকে, তবে কেন হজ্জ শুধুমাত্র ধনী মুসলমানদের জন্য ফরজ? তা তো সকলের জন্যই সমানভাবে ফরজ হওয়ার কথা। তবে কি হজ্জ কেবলমাত্র আরবকে পৃথিবী ধ্বংসের পূর্ব পর্যন্ত আর্থিকভাবে সচ্ছল রাখার একটি বাজে উপায় নয়?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১০ দুপুর ২:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×