ধূমপান একটি জনপ্রিয় কাজ না অজনপ্রিয় কাজ? এ বিষয়ে দুপক্ষেই লোক পাওয়া যাবে। তবে ধূমপান যে ক্ষতিকর কাজ এ বিষয়ে ধূমপায়ীরাও একমত। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে ইহা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।
গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপানের কোন ভাল দিক নেই। ক্ষতি আর ক্ষতি...
আমাদের কলোনীর এক চেইন স্মোমারকে বলেছিলাম,‘আপনি এত ধূমপান করেন কেন?’
উত্তরে বললেন, মজা লাগে!
কিন্তু ধূমপানে তো ক্ষতিও হয়!
এমন কী কোন মজা আছে যেটার কোন ক্ষতিকর দিক নাই?
আমি বুঝলাম এর সাথে কথা বাড়ানো বৃথা!
লেখক হুমায়ূন আহমেদ সিগারেটের একটি উপকারী দিক বের করেছেন। তিনি লিখেছেন,‘অধূমপায়ীরা সুস্বাস্থ্য উপভোগ করে কিন্তু তারা দু আঙুলের ফাঁকে সিগারেট ধরার যে আনন্দ সেটা পায় না!’
আমি এরপর একটি সিগারেট কিনেছি। তার আগে বলা দরকার আমি সিগারেট তো খাই ই না বরং এটার বিরুদ্ধে আমার অতি ক্ষুদ্র পরিসরে আমি ক্যম্পেইন করি। ছাত্র-ছাত্রীদের আমি বলি,‘মিথ্যা যেমন সকল পাপের জননী সিগারেট তেমনি সকল নেশার জননী।’
সিগারেটটা কিনে আমি দু আঙুলের ফাঁকে রাখলাম অনেকক্ষণ। হ্যাঁ একটু কেমন কেমন যেন লাগছে! এটাই কী সেই মজা? কী জানি!
ঠিক তখনই আমার ইয়ে কল দিল। এবং অতি তুচ্ছ এক কারণে আমার ভবিষ্যত গৃহকর্ত্রী আমাকে ধোলাই করা শুরু করেছে! এখনো বিয়ে হয়নি কিন্তু তাঁর অভিযোগের শেষ নেই! বিয়ের পরে যে কী হবে আল্লাহই মালুম!
সে যখন আমাকে জিহ্বা নামক হুইল পাউডার লাইট হোয়াইট দিয়ে ধুচ্ছিল তখন আমার সামনে হাজির হয়েছিলেন সক্রেটিস। তিনি বলছেন,‘যাই হোক বাছা! জীবনে অন্তত বিয়েটা করো! তোমার বউ যদি ভালো হয় তবে তুমি সুখী হবে আর তোমার বউ যদি দাজ্জাল হয় তবে তুমি দার্শনিক হবে! সেটাও কম কথা নয়! [সক্রেটিসের বউ দাজ্জাল প্রকৃতির ছিলেন]
আমার দার্শনিক হবার একমাত্র আশার প্রদীপ তখনো আমার কান জ্বালা (!) পালা করে দিচ্ছিলেন! এরকম সে প্রায়ই করে তো তাই আমি প্রতিবারই তাকে কোন না কোন হুমকি দিয়ে ঠান্ডা করতে হয়। এবার হুমকির বিষয় একেবারে আমার হাতের মধ্যে ছিল বা বলা যায় দু’ আঙুলের ফাঁকে! আমি তাকে শোনালাম হিন্দি এক শায়েরী...
বেওয়াফা সনমসে তো সিগারেট আচ্ছা হ্যায়
দিল জ্বালাতা হ্যায় লেকিন হোটোসেতো (ঠোঁটে) লাগতি হ্যায়!
-তুমি এরকম করলে কিন্তু আমি সিগারেটে আগুন দেব!
-আগুন দেবে মানে?
-সিগারেট আমার দু’আঙুলের ফাঁকে!
-ও এর মধ্যে কেনাও হয়ে গেছে?
-আরো আগেই কেনা উচিত ছিল! রাখবো না এই বুক এই মন! বানাবো পোড়া বুক পোড়া মন! আজ থেকেই সিগারেট ধরব!
- এটা তোমার হুমকি নাম্বার ৪৯!
- এই নিলাম ম্যাচবাক্স!
-পরে ছাড়বে কীভাবে শুনি?
[পাঠক খেয়াল করে দেখুন ভয় পেয়েছে!]
-ছাড়া কঠিন কোন ব্যাপার না!
-একবার ধরলে আর ছাড়া যায় না!
-সিগারেট তো আর তোমার মতো না যে একবার ধরলে আর ছাড়া যাবে না! শোন মার্ক টোয়েন বলেছেন,‘সিগারেট ছাড়া খুব সহজ! আমি নিজেই অনেকবার ছাড়ছি!’
------------------------------------------