somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাঁদে কলংক আছে যেমন...........!!!

২১ শে মে, ২০১০ সকাল ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"সব ক'টা জানালা খুলে দাও না
আমি গাইবো, গাইবো বিজয়েরই গান
ওরা আসবে চুপি চুপি
যারা এই দেশটা ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রান"

সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া খুবই বিখ্যাত একটা গান। বহুল প্রচারিত এই গানটির পিছনে কিছু ঘটনা জড়িয়ে আছে যা অনেকে হয়তো জানেন না। ১৯৮৪ সালে গানটি যখন প্রথম বারের মত প্রচারিত হয়, তখন চমৎকার বাণী ও সমৃদ্ব গানটি শুনে মুগ্ধ হয়ে সাধারন শ্রোতা তো বটেই ; অনেক সঙ্গীত বিশারদরাও নড়েচড়ে বসলেন, যার হাওয়া মানচিত্র পেরিয়ে ভারতে গিয়েও পৌছালো।যার ফলে, ভারতের বিখ্যাত HMV কোম্পানী গানটির স্বত্ব কিনে নিতেও চাইল।মূহুর্ত দেরী না করে গানটির সুরকার জনাব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আর সাবিনা ইয়াসমিন যোগসাজসে গানটি পূনরায় HMV'র জন্য রেকর্ড হয়ে LP বন্দীও হল। কাহিনীর সূত্রপাত এখানেই।এমন একটা গান যা আবার দেশাত্ববোধক, সেটা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল অন্য একটা দেশে বিক্রী করলেনইবা কি করে! এ নিয়ে শুরু হল পত্র-পত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি।আত্মপক্ষ সমর্থন করে বুলবুল নিজেকে গানটির গীতিকার ও সুরকার দাবী করে জানালেন, তার নিজের গান যেখানে খুশী সেখানে বিক্রী করতেই পারেন।তখন পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসলেন অন্য আর একজন। গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু (প্রয়াত)। উনি বললেন তার লেখা গানকে বুলবুল নিজের লেখা বলে দাবী করেন কি করে? শুরু হল গান নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া।উভয়ই গানের দাবীদার। কোর্ট-কাছারি গড়ানোর অবস্হা। নজরুল ইসলাম বাবুর ভাষ্যনুযায়ী, দেশপ্রমে উদ্বুদ্ব হয়ে তিনি গানটি লিখে বিটিভি কে দান করে দেন যা প্রতিদিন জাতীয় সংবাদের আগে প্রচার করা হয়। কিন্তু বিটিভি সেটা দান হিসেবে না নিয়ে উপযুক্ত সম্মানী হিসেবে মাসে মাসে রয়্যালটিও দিয়ে থাকে ।যোগাযোগ করা হল বিটিভির কাছে। তারা উত্তর দিলো গানটি লিখে বাবু-ই বিটিভি কে দেন। আর লিস্টেড সুরকার হিসেবে বিটিভি কর্তৃপক্ষ বুলবুলকে দেন সুর তুলার জন্য। থলের বেড়াল বেরিয়ে গেলে প্রমাণিত হয়ে গেল গানটির মূল গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু-ই।বলাবাহুল্য, বুলবুলের মুখে আর 'রা' শব্দটিও বের হলনা। যাইহোক, এমন খবরের জন্যই তো পত্রিকাওয়ালারা তো মুখিয়ে থাকে। এগিয়ে এলো তখনকার "পাঠক হট কেক" যায় যায় দিন। বের করে আনলো আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের নাড়িভূড়ি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করলো "আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্বা হিসেবে দাবী করেন। কিন্তু তার বয়সের হিসেব কষলে দেখা যায় যুদ্বের সময় তার বয়স ছিল মাত্র চৌদ্দ। এই ১৪বছর বয়সে একজন লোকের মুক্তিযুদ্বে অংশগ্রহনটাও কতটা স্বাভাবিক এবং যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।তবে তর্কের খাতিরে না হয় মেনে নেয়া যায় উনি সত্যি সত্যিই অংশগ্রহন করেছিলেন। যেহেতু ব্যাতিক্রম সর্বত্রই বর্তমান।কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্বা হয়েও একটা দেশাত্ববোধক গান বাইরের একটা দেশে বিক্রী করে দিলেন, তাহলে তিনি কেমন মুক্তিযোদ্বা ! নাকি রাজাকার?"
যাই হোক, বুলবুল অনেক প্রতিভাবান লোক।সুরকারের পাশাপাশি তিনি পার্টটাইম গীতিকার ও বটে।এখনোও শ্রোতারা নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয় তার লেখা গান "আমার সারাদেহ খেয়ে ওগো মাটি, "আমার বুকের মধ্যখানে,আমি তোমার দুটি চোখে দুটি তারা হয়ে থাকবো"কিংবা অতি সাম্প্রতিক কালের সামিনার গাওয়া "আমার দুই চোখে দুই নদী" সহ আনেক চমৎকার গান।সুরও দিয়েছেন অনেক কালজয়ী গানের।ব্যাক্তিগতভাবে অসংখ্য লোকের মত আমিও উনার ভক্ত।তবে সেই কবেকার ঘটনাটা মনে পড়লো, যখন দেখলাম এবার তাকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান "একুশে পদক" দেয়া হয়েছে।ভাবলাম,এটা কিভাবে সম্ভব হল?
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×