somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামে বেনামে ঢাবিতে এখনও সক্রিয় হিজবুত তাহরীর

১৮ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নামে বেনামে এখনও সক্রিয় হিযবুত তাহরীর। গোপনে বা প্রকাশ্যেই প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে তাদের কার্যক্রম। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের শক্ত ভিত গড়ে তোলার চেষ্টায়ও মরিয়া তারা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের টার্গেট করে দল ভারী করার কাজও চলছে তাদের। এ কাজে বিপুল অর্থও ব্যয় করছে সংগঠনটি। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের ২০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে দলে যোগ দিতে ডাকযোগে প্রচারপত্র পাঠায় তারা। শুধু তাই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি দিয়ে ক্যাম্পাসের প্রশাসন বিভাগে প্রায় ২০০ কর্মী সক্রিয় বলে প্রচার চালায় তারা। নিষিদ্ধ হওয়ার পর নাম পরিবর্তন করে ছাক্রমুক্তির নামে তাদের কার্যক্রম চলছে বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হিযবুত তাহরীরের লন্ডন অফিস থেকেই পরিবর্তিত পরিস্থিতে এ পরিকল্পনা তৈরী করা হয়েছে। আর আর্থিক সুবিধার লোভে ছাত্রছাত্রীরা এ ফাঁদে পা দিচ্ছেন। তাদের নতুন এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সংগঠনের লন্ডন অফিসের নেতাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে রাজধানীর মাঠপর্যায়ের পাঁচ শতাধিক কর্মী তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, এসব কর্মীরা মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক কাজে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। আর এ কর্মীদের সিংহভাগই ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের মেধাবী ছাত্র। ঝামেলামুক্ত কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের প্রধান আস্তানা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ মেধাবীদের চারণত্রে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট ও ব্যবসায় শিা অনুষদের ছাত্ররাই এ সংগঠনে সবচেয়ে সক্রিয় কর্মী।
ঢাকা বিশবিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হিযবুত তাহরীরের বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপ খুব চিন্তিত। এছাড়া হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করছে প্রশাসন। হিজবুত তাহরীরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতার ব্যবহৃত এক ডায়েরি থেকে জানা গেছে, ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট ও বিবিএ’র প্রায় ২৫ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে তাদের সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা করেন। এর মধ্যে মধ্যে গত ৯ এপ্রিল গভীর রাতে সূর্যসেন হল থেকে আবদুল হাই রাজু (ফিন্যান্স, তৃতীয় বর্ষ, ক-২৫১), মুহসীন হোসেন (হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ, ক-৬৩৭), ফাহাদ বিন রশিদ নয়ন (ব্যবস্থাপনা বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ, ক-১০৬) ও রাকিবুল ইসলাম পরশ (ফিন্যান্স, প্রথম বর্ষ) গ্রেফতার হয়েছেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে বই, ম্যাগাজিন ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা বইয়ের মধ্যে ছিল খেলাফত একমাত্র সমাধান, পাকি ম্যাগাজিন মুক্ত আওয়াজ এবং সরকারবিরোধী লিফলেট।
এরা বিভিন্ন দর্শন ও তত্ত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করত। প্রতি রাতেই বিভিন্ন হলে গোপন সভা করা হত। সংগঠনের লিফলেট তৈরি ও বিতরণের কাজের সঙ্গেও তারা জড়িত ছিল। গ্রেফতারের দিনও তারা ব্যবসায় অনুষদে লিফলেট বিতরণ করেছিলেন।
ঢাবির প্রক্টরিয়াল বডির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ে রয়েছেন মাসুম ও শিবলী। অনুষদের ১২তম ব্যাচ তত্ত্বাবধান করেন মাসুম। তার সঙ্গে রয়েছেন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের জনি ও হিমেল। শিবলীর তত্ত্বাবধানে কর্মী রয়েছেন ব্যবসায় শিা অনুষদের ১৪তম ব্যাচের বেশ ক’জন ছাত্র। তারা হলেন সেলিম (ফিন্যান্স), মাসুম (হিসাববিজ্ঞান) আল আমিন (মার্কেটিং), গিয়াস উদ্দিন (হোটেল ম্যানেজমেন্ট), কৌশিক (ফিন্যান্স) ও খালিদ (ফিন্যান্স)।
ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেকটা আক্রোশী হয়ে রাজধানীতে তারা সক্রিয় হচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে গোপনে প্রকাশ্যে হিযবুত তাহরীরের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। জড়িত ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিল বা স্থগিত চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা।
এর আগে গত কয়েকমাস আগে ঢাবি উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে পরিবারসহ হত্যার হুমকি দেয় হিজবুতের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ইউনিট। চিঠিতে প্রশাসনিক বিভাগে প্রায় ২০০ জন সক্রিয় কর্মী রয়েছে বলে উল্লেখ করে তারা। এ মাসের শুরুতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে উড়ো চিঠি দেয় তারা। সর্বশেষ গত ১৬ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক নবীরুজ্জামান বাবুকে প্রচারপত্র ও চিঠি পাঠায় তারা। চিঠিতে তাদের দলে না দিলে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়। হিজবুতের এসব কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ঢাবি প্রক্টর শিক্ষার্থীদের লোভে না পড়ে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×