somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামহীন শিরোনাম

১৮ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাত্র তিন সপ্তাহ চারদিন হলো সামহোয়ারইন ব্লগে আমার বয়স। এরই মধ্যে আমি এই ব্লগের নেশায় আসক্ত। এমনই নেশা, অফিসের বা অন্য কাজে বিজয় এর পরিবর্তে ইউনিজয়-এ লিখতে আরম্ভ করি:-/। পড়তে আমি এমনিতেই ভীষন ভালবাসি। তার উপর ব্লগারদের লেখা, সেই সাথে কমেন্টস, ভাল লাগায় পাগল হয়ে যাই। অফিসের ব্যস্ততার ফাঁকে ঢুকে পড়ি বিভিন্ন ব্লগারদের এরিয়ায়। আবার যখন অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকি, আমার মন পড়ে থাকে ব্লগে। বন্ধুরা যারা ইয়াহু বা ফেসবুকে আমার সাথে চ্যাট করে তারা ক্ষিপ্ত দেরীতে রিপ্লাই করি বলে। ব্লগে একবার ঢুকলে আমি ভুলে যাই সব। ফেসবুক এখন আর আমাকে টানেনা। অন্যদের লেখা পড়তে পড়তে আমারও ইচ্ছা করে লিখতে:P। কিন্তু লেখালেখির হাত একদম নেই আমার। যাই শুরু করি কেমন যেন প্যানপ্যানানি প্যাচাল হয়ে যায়। তবু লিখতে ইচ্ছা করে। মন চায় সিনিয়র সব ব্লগার আমার ব্লগে এসে মন্তব্য করবেন; এটা সেটা পরামর্শ দেবেন। তাই ভাবলাম কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করিনা কেন? আমি আবার যা ভাবি তাই করে ফেলি.. .. .. ..:P

২০০৫ এর ডিসেম্বরে জয়েন করি একটি সুপার মার্কেটের হিউম্যান রিসোর্স সেকশনে। সঙ্গত কারণেই নামটা বলছিনা। যেহেতু আমি সেল্স এর নই, ফ্লোরে যাওয়া হোতনা কাজ ছাড়া। ওখানে জয়েন করার পর ’চোর’ ধরার বহু গল্প শুনতাম। কোন গল্প হেসে গড়িয়ে পড়ার মত; কোনটা মন বিষন্ন হওয়ার মতো; কোনটা আবার শিউরে ওঠার মতো। গল্প শুনতে শুনতে আমার খুব ইচ্ছা হলো এর পরের বার ’চোর’ ধরা হলে আমাকে যেন ডাকা হয়।

আমার টেবিলের উপর ইন্টারকম বেজে উঠলো। ’চোর’ ধরা পড়েছে। দৌড়ে নামলাম নিচে। ওমা! এ দেখি একেবারে চ্যাংড়া পোলাX(। শুধু তাই নয়, দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভদ্র, সম্ভ্রান্ত (?) কোন পরিবারের ছেলে। যাই হোক, এখানে আমার কিছু করনীয় নেই। সেলস ম্যানেজার, ফ্লোর সুপারভাইজার সবাই মিলে বিচার করছে তাই দেখতে লাগলাম। সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে ছেলেটির সাথে একটি মেয়েও ছিল:P। আমাদের একজন সরস কলিগ ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলো ”তোমার পেয়ারী নাকি?” ছেলেটি কিছু বলেনা। যখন কঠিন করে ধমক দিল তখন স্বীকার করলো সে তার পেয়ারী। বলা হলো ”ফোন করে ওকে এখানে আসতে বলো। চুরি তো দুজন মিলেই করছিলে। তোমাকে বিপদে ফেলে সে পালালো, কেমন ভালবাসে তোমাকে বুঝতে পারছো তো?:-*” ছেলেটি মেয়েটিকে ফোন দিল- ফোন বন্ধ। ছেলেটির কাছে দামী আফটার শেভ, পারফিউম এসব পাওয়া গিয়েছে। হাতে বা শপ-এর বাস্কেটে নয়, তার কাঁধে ঝুলানো ব্যাগ এর মধ্যে। শেষমেষ আর পুলিশি ঝামেলা না করে ছেলেটিকে অনেক অপমান করে বের করে দেয়া হলো। যদিও সেটাও করা হলো তার অনেক অনুনয়-বিনয় এর পর।

আরেকটি ঘটনা আমাকে ভীষন অবাক করেছিল, আহত করেছিল:((। একদিন বাচ্চা একটা ছেলে-কে ধরে আনা হলো। তার কাছে পাওয়া গিয়েছে সেক্স উত্তেজক একটা লোশন, যার দাম ১০০০ টাকার উপর:|। ছেলেটির বয়স খুব বেশি হলে ১২ বছর। ওকে ধরে আনার পর থেকে ও যে মাথা নিচু করে বসে আছে আর মাথা তোলেনা। বাচ্চা ছেলে, তাকে কে কি বলবে? তারপরও আমাদের সেই সরস কলিগ ওকে জিজ্ঞেস করলো ”বাবু, এটা দিয়ে কিভাবে কি করে তুমি আমাকে বুঝাও;)। যতক্ষন পর্যন্ত না বুঝাবা তোমাকে ছাড়া হবেনা।” ছেলেটা মাথা তোলেনা। ছেলেটির মা-বাবা কে ডেকে আনা হলো ফোন করে। মা-কে আমার সাথে বাইরে পাঠানো হলো। ভেতরে বাবা। ভদ্রমহিলা বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছেন ”মা, আমার ছেলে কি করেছে?” আমি কিছু বলতে পারিনা। উনি নিজ থেকেই বলেন ”আমাদের একটাই ছেলে। আজ পর্যন্ত ওকে চোখ গরম করে একটা কথা বলিনি, ধমক বা মার তো অনেক পরের কথা। তুমি ছাড়া তুই বলে কোনদিন ডাকিনি। সেই ছেলে আমার কি করতে পারে?” উনি জোড় করেন আমাকে বলার জন্যে। আমি বলতে পারিনা। সেলসের আরেকটি মেয়ে ছিলো সাথে। সে তখন একটু রাগ নিয়েই মহিলা-কে বলে ”ধমক দিয়ে কথা বলেননি বলেই আপনার ছেলে আজ এতখানি নিচে নামছে।” ভদ্রমহিলা ঘটনা শুনে আমাদের দিকে এমনভাবে তাকান যেন উনি বুঝতে পারছেন না আমরা কি বলছি। ভিতরে থাই দরজার এপাশ থেকে আমরা দেখি ছেলেটির বাবা মাথা যতখানি নীচু করা যায় তার থেকেও নীচু হতে চাচ্ছেন। কোন কথা বলছেন না তিনি। যা বলার আমাদের ম্যানেজার একাই বলছেন। একটু পর ভদ্রলোক বের হয়ে এলেন। পেছনে ছেলেটি। তার অতি আদরের একমাত্র ছেলে, যার দিকে তিনি একটিবারও ফিরে তাকাচ্ছেন না। অন্যদিন হলে হয়তো ছেলের কাঁধে বাবা-র একটি হাত থাকতো। তাঁরা চলে গেলেন। আমরা তাদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বস ফেললাম। :-/

এরকম বহু চোর ওখানে আমি দেখেছি। পুলিশের আইজি-র বউ, যে চুরি করে ধরা পড়ে আবার আমাদেরকেই শাষায় তাকে ধরা হয়েছে বলে। অনেক বড় ঘরের বয়স্ক কোন মহিলা, যাকে দেখলেই মা-এর রুপ চোখে পড়ে তাকেও দেখেছি গরম মসলা, আনাজপাতি চুরি করে ব্যাগের মধ্যে ঢুকাতে। অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। চোর ধরার পরে ওখানে বিভিন্ন রকমের শাস্তির ব্যবস্থা ছিল। সেসব আর বলছিনা। তাহলে ধরা খেয়ে যেতে পারি কোন সুপারশপ এর কথা বলছি। :P:)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:০৬
২১টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×