হুমায়ূন আহমেদ এর বই পড়া অল্মোস্ট ছেড়েই দিয়েছিলাম।কি মনে করে সেদিন এক ফ্রেন্ডের বাসা থেকে উনার ২টা বই নিয়া এলাম।দুটোই এবারের বইমেলায় প্রকাশিত।একটা "নলিনী বাবু B.Sc"।প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে লেখা বই।আরেকটার নাম "মাতাল হাওয়া"।ঊনসত্তরের গণভ্যূত্থান নিয়ে লেখা(লেখক এর ভাষ্যমতে)।
প্রথমে "নলিনী বাবু B.Sc" নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলি।যারা এর আগে "নিষাদ" পড়েছেন,তারা নিশ্চয়ই আমার সাথে একমত হবেন যে,হুমায়ূন আহমেদ "নিষাদ" গল্পটাকেই "নলিনী বাবু B.Sc" তে একটু ঘু্রিয়ে-ফিরিয়ে লিখেছেন।পার্থক্য এতোটুকুই,"নিষাদ" এর নায়ক এক তরুণ আর এ গল্পের নায়ক এক মধ্যবয়স্ক লোক।
সমস্যাটা আসলে আমার ই।আমি হুমায়ূন আহমেদ এর কাছে আরেকটু বেশি expect করেছিলাম।ভেবেছিলাম উনি হয়তো প্যারালাল ইউনিভার্স এর নতুন কোন থিওরী তুলে ধরবেন আমাদের সাম্নে।আমাদের লেখালখির জগত এ যারা আছেন,তাদের মধ্যে হুমায়ূন এর ই বেশি হোক কম হোক এ বিষয়ে কিছু knowledge আছে।তিনি কি চাইলেই পারতেন না একটু পড়াশোনা করে এ বিষয়ে ভালো কিছু আমাদের উপহার দিতে?
"মাতাল হাওয়া"-নামটাই শুধু আমার পছন্দ হয়েছে।কিন্তু ঊনসত্তরের ঘটনা উপন্যাসটিতে কতোটুকু এসেছে?অল্প যেটুকু এসেছে তা হুমায়ূন এর নিজস্ব জবানীতে।যেখানে লেখক ঢাকা ভার্সিটির হলে থেকে ঘটনাগুলি দেখছেন।
উপন্যাসটির প্লট গ্রামের এক প্রভাবশালী পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।এই পরিবারটির গল্পই হুমায়ূনীয় স্টাইলে পুরো উপন্যাসে উঠে এসেছে।ঊনসত্তরকে লেখক মাঝে মাঝেই জোর করে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তাদের জীবনধারায়।মানলাম যে,গণঅভ্যূত্থানের ঢেউ হয়তো গ্রাম-গঞ্জে এসে পৌঁছায়নি।এক্ষেত্রে শহুরে কোন পরিবারের প্লট নিয়ে কি উপন্যাসটি নির্মাণ করা যেত না?এত কথা বলছি,কারণ "মাতাল হাওয়া" নিয়ে আমার অনেক প্রত্যাশা ছিলো।"জোছনা ও জননীর গল্প" যেভাবে আমার প্রত্যাশা পূরন করতে পেরেছিলো "মাতাল হাওয়া"তার সিকিভাগ ও পারেনি।
আমার অনেক বন্ধুর ই ধারনা,হুমায়ূন এর লেখার ক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে।আমার কেন জানি মনে হয়,হুমায়ূন এখনও চাইলে "নলিনী বাবু Trash"র চেয়ে অনেক ভালো লেখা আমাদের উপহার দিতে পারেন।