somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ফারাক্কা দিবস

১৬ ই মে, ২০১০ ভোর ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির মধ্যদিয়ে নদীপ্রবাহও বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের পটভূমিতে অরুণাচল অঞ্চল ভারতের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে কৌশলগতভাবে আসাম-ত্রিপুরার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পতিত হয়। এ অবস্থায় ভারতের ভৌগোলিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টারা উপলব্ধি করেন গঙ্গার ওপর দিয়ে দ্রুত যুদ্ধসরঞ্জাম পূর্বাঞ্চলের নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে পানিপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই পরিকল্পনার আলোকেই ১৯৬৪ সালে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মিত হয়। এটা মূলত পানির নিয়ন্ত্রণ ও যুদ্ধকালীন সময়ে পানিপথে সংযোগ ব্যবস্থা চালু রাখতে গড়ে তোলা হয় ফারাক্কা বাঁধপ্রকল্প। পাকিস্তান ভারতের এই পানি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। ১৯৭২ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন সমাপ্ত হয়। এরই মধ্যে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭৪ সালে ভারত পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালু করার কথা বলে বাংলাদেশের সমর্থন নিলেও অদ্যাবধি তা অব্যাহত আছে।
আজ একজন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর খুবই প্রয়োজন। ভারতীয় পানি আগ্রাসনসহ সর্বগ্রাসী আগ্রাসন দেশের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে নিপতিত করেছে। কিন্তু কার্যকরী প্রতিরোধ আন্দোলন এখনও গড়ে উঠেনি। এর মূল কারণটিই হচ্ছে ভোগি নেতৃত্ব। যে নেতৃত্ব রাজনীতির নামে শুধু ক্ষমতা চায়, ভোগ-বিলাস চায়। এ সকল নেতৃত্বের দ্বারা আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কার্যকরী জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন ক্ষমতার মোহমুক্ত সাধারণ জীবন-যাপনকারী গণমানুষের নেতা। আসামের নবাব স্যার সা'দুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া, কাজী জাফর আহমেদ ছিলেন মওলানা ভাসানীর সেক্রেটারি। অথচ তিনি বাস করতেন সাধারণ ছনের ঘরে। ১৯৭৪ সালে ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টাঙ্গাইলের সন্তোষে যান তার রাজনৈতিক গুরু মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সাথে দেখা করতে। তিনি লক্ষ্য করলেন তাঁর রাজনৈতিক গুরু তখনও বাস করেন ছনের ঘরে- হোগলার বেরা দেয়া ঘরে। বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে বললে মওলানা ভাসানী তাকে বলেন, ‘‘আমার নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তুমি তোমার নিরাপত্তা মজবুত কর। আমার নিরাপত্তা দেবেন আল্লাহ এবং সাধারণ জনগণ।’’ একথা মওলানা ভাসানী বলতে পেরেছিলেন এ কারণেই যে, তিনি সত্যিকার অর্থেই ছিলেন গণমানুষের নেতা।
১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে ফারাক্কার বাঁধ চালু হয়। এই সময় বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন খন্দকার মোস্তাক আহম্মেদ আর ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন জগজীবন রাম। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল খান ভাসানী ১৯৭৬ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের অন্যায় পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে ফারাক্কা লং মার্চের ঘোষণা প্রদান করেন। দিনক্ষণ নির্ধারিত হয় ১৬ মে।১০ মে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে নেতৃবৃন্দ ঢাকা ত্যাগ করেন লং-মার্চ উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করার জন্য। ১৫ মে সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে গণজমায়েত। তারপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে সোনা মসজিদ অভিমুখে লং-মার্চ শুরুর প্রস্তুতি চলছিল পুরোদস্তর সকাল ১০টার মধ্যেই মাদরাসা ময়দান কানায় কানায় ভরে গেল। ব্যারিস্টার সলিমুল্লাহ হক খান মিলকী, আবু নাসের খান ভাসানী ও গাজী শহিদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ১০টা ১৫ মিনিটের মধ্যে সভামঞ্চে এসে উপস্থিত হলেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী।
মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×