somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভাগার শেষ সংলাপ : (আত্মোপলব্ধি)

১৪ ই মে, ২০১০ বিকাল ৩:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :














জানি। উপরের কথাটা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে, অভাগার শেষ সংলাপ। নামটা দেখেই মনের মাঝে অনেকেরই স্নেহ জাগে, ভালবাসা জাগে। একজন অভাগার শেষ সংলাপ জেনে অনেকে উপকৃত হবে। আমি অবশ্য একজন অভাগা। অভাগা যেদিকে চায়, সাগরও শুকিয়ে যায়। ব্যর্থ এ জীবন আর বয়ে কিইবা লাভ হবে। সেতো আমাকে ভুলে আজ হয়েছে অন্য একজনের ঘরনী। তাকে আমি মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসতাম। আমার ভালবাসার মাঝে ছিলনা কোন খাঁদ।

কতোবার চেষ্টা করেছি অতীতের স্মৃতিণ্ডলো ভুলে যেতে। কিন্তু পারিনি, জানিনা বার বার তা কেন জানি আমাকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে আমার অন্য মনস্কতার সুযোগ নিয়ে। আমি যেন পাগল হয়ে যাই। মনে পড়ে যায় হেমন্ত মূখোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত গান - মুছে যাওয়া দিনণ্ডলি আমায় যে পিছু ডাকে ...............................।

তার সংগে প্রথম যেদিন পরিচয় হয়েছিল, সে কথা আজ মনে পড়ে যায়। কলেজে সে নতুন ভর্তি হয়েছে, আমিও। প্রথম দর্শনেই তাকে আমার ভাল লেগে গেল। সেও আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল। আস্তে আস্তে তার সংগে আলাপ করলাম। সে ছিল খুবই সুইট। যেমন চেহারা তেমনি রূপ। আকাশের চাঁদও যেন লজ্জা পাবে তার রূপের কাছে। এভাবেই ধীরে ধীরে মন দেওয়া নেওয়া চলল। তাকে ভালবাসলাম, সেও আমাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসল। দু-জন দু-জনকে একদিনও না দেখে থাকতে পারতাম না। কলেজ থেকে গেলাম বিশ¡বিদ্যালয়ে। সেও এল। শুধু পাশাপাশি দুটোই চালাতে লাগলাম - লেখাপড়া ও প্রেম।

তারা ছিল খুবই বড়লোক। কিন্তু তার মনে কোন অহংকার ছিল না। কোন ধনী-গরীব ভেদাভেদ ছিল না। কিন্তু তার বাবা ছিল খুবই রাগী মানুষ। গরীব - ছোট লোকদের তিনি দু-চোখে দেখতে পারতেন না।

আমি আর সে সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা পালিয়ে বিয়ে করব। সেও আমার কথায় রাজী। দিনক্ষন ঠিক।

হঠাৎ করে এতদিনের আশা ভেংগে চুড়ে শেষ হয়ে গেল। তার পিতার হার্ট এ্যাটাক হয়েছে। মৃত্যু শয্যায় শায়িত। যে কোন সময় চলে যেতে পারে ওপারে। তার শেষ ইচ্ছা তার মনোনীত তার বন্ধুর ছেলেকে বিয়ে করতে হবে।

সাথী তার পিতার কথা মেনে নিল। একবারও আমার কথা ভাবল না যে আমি তাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসি। তার অপেক্ষায় আছি। তাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।

তার পিতা তাকে বিয়ে দিলো। আবারও তিনি সুস্হ হয়ে উঠলেন। দিব্যি এখনও বেঁচে আছেন। পরে জেনেছি তার পিতা মিথ্যা অভিনয় করে ঘটনা সাজিয়েছিলেন। সামান্য একটু ভুলের জন্য আজ আমি মৃত্যুপথযাত্রী এক হতভাগা প্রেমিক।

সে আমাকে এখন আর পছন্দ করে না, আমার সংগে দেখাও করে না। আমাকে ভুলে স্বামী-সন্তান নিয়ে সে মহাসুখেই আছে। মৃত অতীতকে এই কয়বছরে কতো উপায়ে ভুলে যেতে চেয়েছি। কিন্তু কেন জানি তাহাই আবার দ্বিণ্ডন বেগে প্রজ্জলিত হয়ে আমাকে করে দিশেহারা, করে অহরহ দগ্ধ। একটু ঘুমোতে আজ অনেকদিন পারিনি, একটু হাসতে অনেকদিন পারিনি, পেয়েছি শুধু একবুক জ্বালা আর দুঃখের নদীর জল।

আমার জীবনে সাথীই ছিলো প্রথম প্রেমের প্রথম ফুল। শেষ প্রেমও সে। কবিতার ছন্দ। আমার গানের সুর সে। তাই কিছুতেই তোমাকে ভুলতে পারিনি সাথী। না পারবো না কোনদিন। আমার নিঃসঙ্গ জীবনে তুমিই যে ছিলে চির উজ্জ্বল স্বর্ণ প্রদীপ।

দেখা যদি হয় তোমাতে-আমাতে কভু অচেনা জগতে কিংবা সীমাহীন পরপারে - হয়তোবা তুমি চিনে নিবে আমাকে একদিন যার সাথে ছলনা করেছিলে সেই জীবনকে।

মানুষের জীবনতো একটাই। এ জীবনের শত চাওয়া-পাওয়ার মাঝেও একটি চাওয়াই যুগ যুগ ধরে সকলকে বিমোহিত করে। সে চাওয়া টাকে তুমি নিয়ে গেলে সাথী।

আমার শেষ সংলাপের একটি কথাও যদি তোমার মনে কখনো সাড়া জাগায়, তোমাকে উদ্বেলিত করে, বিচলিত করে, চোখ দিয়ে যদি দু-ফোটা অশ্রু কখনো ঝরে তবে সেটাই হবে আমার পরম চাওয়ার পরম পাওয়া। সেদিনের অপেক্ষায়।

সাথী, তুমি যেখানে আছো, যার ঘরনীই হয়েছ সুখে থেকো। এই কামনায় হতভাগা একজন সেই আমি।
ইতি, জীবন।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১০ বিকাল ৩:৫১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×