somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপিকা, ষষ্ঠ পর্ব ।

১৩ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পঞ্চম পর্ব Click This Link

সাপ্তাহিক ছুটি শেষে যথারীতি ক্লাস শুরু । দীপুকে প্রতিদিন সবার আগে ক্লাসে ঢুকতে দেখা যায় । বন্ধুরা বলে ওকে ঝাড়ুদারের চাকরী যোগাড় করে দেবে । বেচারা এত সকাল সকাল ক্লাসরুমে ঢোকে ঝাড়মোছ করবার সময় । বাসায় দীপু মাকে নানা কাজে সহযোগীতা বেশী করছে ইদানীং । বড়ভাইয়ের আদেশ অনুরোধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে । ছোট ছেলের এহেন পরিবর্তনের কোন কারন খুঁজে পায় না তার মা ।

আর লীনা ? তার সবকিছুতে চমকে ওঠা বিনা কারনে ! আগে থেকে দীপুকে তার ভাল লাগে । কই তখন তো এমন অনুভূতি কাজ করেনি ! ভালবাসলে পরে মেয়েদের চোখে চেহারায় আচরনে প্রজাপতির রঙীন পাখার আলতো স্পর্শের শিহরন জাগে শুনেছে সে । কিন্তু তাকে দেখে এমন মনে হবার কথা কি অন্যদের ? সেদিন একটা কলম দিল দীপু আর ও সেটা নিল । যা কথা হয়েছিল সেদিন সে কি বিশেষ কিছু ছিল ? কই মনে পড়ে না লীনার ! মনে পড়ে সেদিন তাদের কথার সূর ছিল অচেনা , দূর আকাশের গায়ে ছড়ানো ছিল যা এতদিন । কচি পাতায় কুঁড়িতে নব বসন্ত বাতাসের মত নি:শব্দ কথা ছিল তাদের চোখে সেদিন । যা কিছু বলেছিল তার চেয়ে বেশী না বলা কথারা উঁকি দিয়ে গেছে , দোলা দিয়ে গেছে সেদিন । সে কথা জানে দীপু , সে কথা অস্বীকার করতে পারেনা লীনা ।

ক্লাসে আসতে তার সাজতে ইচ্ছে করে মনের মত দীপুর জন্য , সাজতে পারে না দীপুর জন্য লজ্জায় । এ অনুভূতির নাম কি ? কেন এমন হয় ?

লেখা পড়া , এসাইনমেন্ট , আসা যাওয়া এসবে সময় কেটে যায় । দীপু একদিন জানতে চেয়েছিল লীনাকে বাসায় থাকবার সময় ফোন করায় কোন অসুবিধা আছে কিনা । লীনা বলেছে , " খুব প্রয়োজন না হলে না করাই ভাল " ।

এর মাঝে একদিন ইউনিভার্সিটি বাস মিস করে লীনা , সি এন জি পেতে দেরী হয়ে যায় তার । একটা পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে বসে । ওদিকে দীপু লীনার ক্লাসে আসতে দেরী দেখে কল করে । কল লিসিভ করছে না লীনা । লীনার সাথে একই বাসে আসে তৌহিদ তাকে ক্লাসে ঢুকতে দেখে উৎকন্ঠা বেড়ে যায় দীপুর । রবি কে বলে , ' কি হোল , লীনা ফোন ধরছে না , ক্লাসেও আসছে না । কোন বিপদ হলো নাকতো ?'

ক্লাস শুরু হয়ে যায় । দীপুর অস্থির লাগে । কি হোল লীনার ? অসুস্থ ? বাসায় সমস্যা ? রাস্তায় কোন দুর্ঘটনা ? আর ভাবতে পারে না মাথা ঝিমঝিম করে ।
এমন সময় হনহনিয়ে লীনাকে ক্লাসে ঢুকতে দেখে দীপুর সব উৎকন্ঠা অস্থিরতা মূহুর্তে ভীষন অভিমানে রূপান্তরিত হোল । রাগ হোল নিজের ওপর এমন একটা মেয়ের জন্য কষ্ট পাওয়ায় ।
ক্লাস শেষে রবি ডেকে নিল লীনাদের চা খাবার জন্য । চা খেতে গিয়ে মোবাইলে দেখে লীনা মিসড কল , এসএমএস অনেক । দীপুর পাঠানো । সি এনজিতে আসবার সময় রাস্তায় বিভিন্ন শব্দে আর সি এন জি তে ওঠার অনভ্যাসে অতি সতর্কতায় মোবাইলের কোন শব্দ বা চিন্তা তার কাছে পৌছে নি ।
দীপুকে দেখে বোঝে ওর কারনে দীপুর কতটা খারাপ কেটেছে সময় । শান্ত বলে , ' লীনা তোমার দেরী দেখে , ফোন ধরছো না দেখে চিন্তায় চিন্তায় দীপুর মাথার অর্ধেক চুল ঝরে গেছে । ক্লাসে আসবার সময়ও ছেলেটার মাথায় কত ঘন চুল ছিল । এখন খুব রেগে আছে দীপু ।'

রবি দীপুকে বলে , ' রাগ করেছো দোস্ত ? '
দীপু হেসে ফেলে । রবি বলে , ' এ যে দেখছি অনু পরিমান রাগ ! অনুরাগ ! কি হবে এখন ? এ রাগ ভাঙ্গানোর ক্ষমতা আছে কার ? '
সবার হাসি তামাশার মাঝেও লীনার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে একটা ব্যাথার মত ঠিক ব্যাথা নয় , দীপুর জন্য । দীপুর দিকে তাকাতে পারে না সরাসরি । রবির দিকে তাকিয়ে বলে , " স্যরি" ।
রবি অবাক হবার ভান করে , বলে ,' কার কথা কাকে ডেলিভারী !'

সেদিন বিকেলে দীপুর একটা এসএমএস পায় লীনা , ' আমার ফিলিংস কি তুমি বুঝতে পারো , আমার ভাল লাগা ? পারো না মনে হয় '।

লীনার ইচ্ছে করে বলতে , ' তোমাকে দেখবার আগে থেকে চিনতাম । তুমি পুরোন আমার সত্ত্বার মত । চেতনার অতন্দ্র প্রহরী আমার । একরাশ সুখ সাজানো ভেলায় সাথী তুমি আমার , শুধু তুমি । আমার দু:খবীণার ছেড়া তারের সূর কখনো দিক ভোলেনা তুমি আছো বলে । তোমাকে বুঝতে চাওয়ার সময় কোথায় ? নিজেকে বুঝে উঠতে পারি না ।'

এসবের কিছুই বলা হয় না । সে এস এম এস করে , ' জানি না ' ।

চলবে..........
পরের অধ্যায় Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪০
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×