somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের স্থান আর বউয়ের স্থান সম্পূর্ণ পৃথক! তুলনা করবেন না প্লিজ!

১১ ই মে, ২০১০ রাত ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জে আই সাগরের ব্লগ থেকে নেয়া মূল গল্পটি‍ :
"হয়তে অনেকেই জানে, তবুও লিখছি, শুনেছিলাম আর মনে লালন করি সযতনে সব সময়"
এক সুন্দরী স্ত্রীর ভালবাসায় উম্মাদ হল । তাকে বার বার ভালবাসি বলেও বিশ্বাস করাতে পারেনা। একদিন বলল সত্যিই তোমাকে পৃথিবীর সব কিছুর চাইতেও বেশি ভালবাসি। যথা উত্তর করল প্রিয়তমা স্ত্রী... কী প্রমান দেবে। প্রতি উত্তর তুমি যা বল। ঠিক আছে যদি তুমি সত্যিই আমাকে ভালবাস তবে তোমার মায়ের কলিজা এনে দেখাও। উম্মাদ হয়ে চলে গেল মায়ের কাছে। মা'কে হত্যা করল। এবং কলিজা খুলে হাতে নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটল ভালবাসার প্রমান করতে। হঠাৎ পাথরের সাথে হোচট খেয়ে বলল.. উহ! মা! মায়ের কলিজা থেকে আওয়াজ এল বাবা তুই ব্যথা পেয়েছিস। কর্ণপাত না করে মেয়েটির কাছে গিয়ে বলল এই নাও আমার মায়ের কলিজা। মেয়েটি তখনি বলে উঠল যে ছেলে আমার ভালবাসার প্রমান দিতে নিজের মাকে হত্যা করে, কি করে মেনে নেব যে অন্য কারো ভালবাসা প্রমান করতে সে আমাকে হত্যা করবেনা। এই বলে তাকে ফিরিয়ে দিল, ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সত্যিকারের পাগল হয়ে গেল।


“ মা'কে নিয়ে লিখতে গেলেই মনে পড়ে যায় সেই ছেলেটির কথা, যে প্রিয়তমাকে উপহার দেবে বলে মা'র হৃৎপিন্ডটা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। পথে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে মা'র হৃৎপিন্ড বলে ওঠে - "বাবা, ব্যাথা পেলি?"

অন্য সবার মতো এই অংশটুকু পড়ে ধাক্কাটা আমিও খেলাম। সেই পুরাতন বউ-শ্বাশুড়ী কলহের পরিনিতিতে উ‍পন্ন গল্প । যে গল্পে কোন এক যুবকের প্রিয়তমা কে অনেক নিষ্ঠুর আর হিংস্র দেখানো হয়েছে। সেই নারী তার প্রেমিক প্রবর কে বলেছে যে তার মায়ের হৃৎপিন্ড কেটে নিয়ে আসতে পারলে সে বুঝতে পারবে যে যুবকটি সত্যি সত্যি তাকে ভাল বাসে!

এ কেমন গল্প? কেন একটি নারীকে বড় করতে গিয়ে অন্য একটি নারীকে খাটো করা!? অশিক্ষিত আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামাঞ্চলে যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই গল্পটিকে আর কেউ ব্যবহার করবেন না, প্লিজ! এটা কোন ভাল উদাহরণ হতে পারেনা।

এক জন মা যেমন তার সন্তানকে অনেক ভালবাসেন তেমনি সন্তানও তার মাকে কম ভালবাসে তা মনে করার কোন কারণ নাই।মমতার অসীম বাধনে বাধা তাদের সম্পর্ক।

এক জন পুরুষের জীবনে দুই জন নারী আসেন। দুই জনই আসেন অনেক নিবিড়ভাবে কিন্তু সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন রূপে, ভিন্ন পরিচয়ে। কারো সাথেই কারো তুলনা করা উচিত নয় বলে আমি মনে করি। এক জন পুরুষের জীবনে মা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি তার কাছে তার স্ত্রীও অনেক গুরুত্বর্পূণ। কেবল মাত্র নির্বোধ ব্যক্তিরাই এই দুই জনের তুলনা করে। মায়ের স্থান মায়ের কাছে। স্ত্রীর স্থান স্ত্রীর কাছে। তাই অহেতুক তুলনা করে এই দুই জন রমনীর মাঝে বিভেদের দেয়াল তুলে দেয়াটা অসমীচীন বলেই আমার কাছে প্রতীয়মান হয়। আজ যিনি স্ত্রী ,ক'দিন পরেই তিনি মা হবেন। তিনি তার সন্তানের জন্য অপার মমতা বক্ষে লালন করবেন এটাই স্বাভাবিক। এ কজন নারী একই সাথে কন্যা, জায়া, জননী। খাটো করবেন কাকে?

লোক মুখে প্রচলিত একটি গল্পের রেশ ধরে তাই মাকে বড় দেখাতে গিয়ে প্রিয়তমা তথা স্ত্রীকে খাটো দেখানোর মাঝে কোন কৃতিত্ব আছে বলে আমি মনে করি না। এক জন পুরুষ যেমন তার মাকে ভালবাসে তেমনি তার প্রিয়তমা স্ত্রীকেও ভালবাসে। এই ভালবাসাকে খাটো করে দেখার কোন কোন সুযোগ নেই। সুযোগ নেই দুই রমনীর মাঝে বিভেদের দেয়াল তুলে দেয়ার। আজ যে প্রিয়তমার আসনে কাল সে স্ত্রী হবে। পরশু সে মা হবে। এই ভাবেই তো যুগ যুগ ধরে চলছে পৃথিবী। চলবে আজীবন।

আমি বিশ্বাস করি না কোন মেয়ে তার প্রিয়তমাকে তার ভাল বাসা পরীক্ষা করার জন্য তার মায়ের হৃৎডপিন্ড কেটে বের করে নিয়ে আসতে বলবে। আমি আরো বিশ্বাস করি না যে, এমন কোন কুপুত্র নেই যে একটি মেয়ের কথায় ভালবাসা প্রমাণ করার জন্য তার জন্মদাত্রী মাতার হৃৎপিন্ড কেটে বের করে নিয়ে ঐ মেয়েকে উপহার দিবে। ভালবাসা কি এতোই ঠুনকো যে এই ধরনের নিষ্ঠুরতার মধ্যে দিয়ে তার প্রমাণ দিতে হবে? ভালবাসা প্রমাণ দেয়ার বিষয় নয়। একান্তই অনুভবের একটি বিষয়। এই অনুভূতি সবার মাঝে থাকতে হবে। শুধু শুধু কেবল মেয়েদের দোষ দিয়ে বাহাদুরী দেখিয়ে কি লাভ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×