somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথা

১০ ই মে, ২০১০ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে ইচ্ছে পূরন হবে না!

মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে মানুষ অন্যান্য জৈবিক চাহিদার পাশাপাশি স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্ন? কোন চাওয়া, কোন বিশেষ কিছু পাওয়ার ইচ্ছা, অনেক সময় কিছু এলোমেলো চিন্তা (যা হয়ত অন্যের কাছে বোধগম্য নয়)।
কিছু স্বপ্ন, চাওয়া বা ইচ্ছা আজন্ম স্বপ্নই থেকেই যায়, কখনও হয়ত পূরন হয় না, হবে না, না হওয়াই যেন নিয়ম।
এরকম একটি অবুঝ স্বপ্নকে ভাষায় প্রকাশ করতে আমার এই প্রয়াস। নিজের কাছেই প্রশ্ন আসে স্বপ্নটা-
কিভাবে আমার মধ্যে এলো?
কখন এলো?
কেন এলো?
এ প্রশ্নগুলোর উত্তর আমি জানি না। যেন এগুলো আজন্ম আমার মধ্যে চলছিল, চলছে এবং চলবে।
আমার স্বপ্নকে নিয়ে আমি বিব্রত আমার স্বপ্নের কাছেই। এই বিব্রতবোধ থেকেই স্বপ্ন বিষয়ে আমার কলমব্যাথা এবং এখন প্রসব হচ্ছে। আমি যেটাকে স্বপ্ন বলছি চরাচরিত নিয়মে এটাকে স্বপ্ন বলে কিনা আমি জানি না। হয়ত কিছু ছিন্নভিন্ন কথা, ভাবনা, চাওয়া, ইচ্ছা বা আকাঙ্খা বলা যায়।


আমার স্বপ্ন, আমার সমাধি

একসময় মানুষ মানুষ হয়ে জন্মাতো, তার পরিচয় হত সে মানুষ, মানুষ আর শুধুই মানুষ। সহজ-সরল, সুন্দর, বিশুদ্ধ সুন্দর প্রকৃত মানুষ। ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয় গোত্র, দন্ধ, বংশ, জাত-পাত, দেব-দেবী, বার্তাবাহক, ইশ্বর, ধর্ম, স্বর্গ-নরক ইত্যাদি। এখন মানুষ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ইত্যাদি হয়ে জন্মায়। আমার কথা হচ্ছে সমাধি নিয়ে, জীবনের অন্যপৃষ্ঠার আস্তানা নিয়ে।
মানুষ যখন অখন্ড ছিলো তখন তাদের সমাধি বা তার প্রক্রিয়া এক বা অভিন্ন অথবা এই বিষয়ের উপর তাদের কোন নিয়ন্ত্রন থাকত না। এখন ধর্ম বিভিন্ন, মানুষ ছিন্নভিন্ন। আল্লাহ, ইশ্বর, খোদা, ভগবান, গড হাজার নামের হাজার বিশ্বপতি, সবাই অতিক্ষমতা সম্পন্ন। দেখা যায় একজন যা পছন্দ করে অন্যজন তা অপছন্দ করে, একজন যা ভালবাসে অন্যজন তা ঘৃনা করে, একজন যে বিষয়ে যীশু অন্যজন সে বিষয়ে শিশু। ইশ্বরদের মাঝে বিরোধ বাঁধলে আমার আলোচ্য সমাধি নিয়েও বিপত্তি দেখা দেয়। কোন ইশ্বর বলে মাটিতে পুঁতে ফেল কেউ বলে পুড়িয়ে ফেল। অনেক নিয়ম, অনেক মন্ত্র, অনেক তন্ত্র দেখা দেয়। অবশ্য তন্ত্র-মন্ত্র নিয়মগুলো যে মানুষের সৃষ্টি তা সহজেই বুঝা যায়। কারন সব নিয়মেই মৃত্যুর পর মানুষের কাছাকাছি বা দৃশ্যত বা স্মৃতিতে থাকার চেষ্টা প্রানান্ত। মানুষ মরতে চায় না। আমি আসলে বলতে যাই এক হয়ে যায় আর এক, বলতে চেয়েছি আমার সমাধি নিয়ে কিছু কখা কিন্তু মনে হচ্ছে মানুষের ইতিহাস লিখছি, যদিও ইতিহাস লেখার ইচ্ছা আমার আদৌ নেই। আমার সমাধির কথায় আসি-

মনে কখন, কিভাবে এই ইচ্ছা বা স্বপ্নের (যাকে আমি বলি সমাধিচ্ছা) বীজ বপিত হয়েছে তা আর আমার স্মৃতি থেকে উদ্ধার করা যাবে না-

কবর হব না
ছুঁবো না অগ্নিশিখা
হব না মমি
কোন সমাধি স্মৃতিবন্ধন না মানি
সাগরে হব বিলীন

হ্যাঁ তাই!‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ আমার ইচ্ছা, একান্ত ইচ্ছা মৃত্যুর পর আমার কবর না হোক, আমাকে পোড়ানো না হোক। প্রচলিত অন্য কোন নিয়ম না মেনে আমাকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়া হোক। আমি আমার কোন স্মৃতিচিহ্ন পৃথিবীর বুকে দৃশ্যত রাখতে চাই না, আমি সমাধি চাই না, চাই না চিহ্ন, চাই না পুষ্পমাল্য, চাই না অশ্রু, চাই না সমাধি নামক কোন শূণ্যস্থানে কেউ এসে দাঁড়াক। আমি চির বিলীন হতে চাই।
মৃত্যুর পর আমাকে ভারী পাথরে বেঁধে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়া হচ্ছে, আমি জল ছুঁয়ে, সমুদ্রের শীতলতা স্পর্শ করে, পৃথিবীর সকল কোমলতা গায়ে মেখে গভীর থেকে গভীরে আরও গভীরে আরও আরও গভীরে নেমে যাচ্ছি মৌন নগ্ন দেহে। সমুদ্রে মাছে ঝিনুকে অক্টোপাসে মিশে যাচ্ছি, তলিয়ে যাচ্ছি তল থেকে অতলে। এরকম একটি স্বপ্ন দেখতে দেখতে প্রায়শই আমি ঘুমিয়ে পড়ি। আমি জানি আমার অদ্ভুত ইচ্ছের কথা শুনে চমকে যাবে ধর্ম-ইশ্বর-পুরোহিত আর অন্ধ ধার্মিক। কিন্তু আমি কি করি? আমার যে এভাবেই সমাধিস্থ হতে ইচ্ছে করে একান্তভাবে এবং এ ইচ্ছে হয়ত আমার কখনো পূরন হবে না! তবু আমি স্বপ্ন দেখি। দেখবো।
আমার সমাধির কোন চিহ্ন থাকবে না।
আমার কোন সমাধি থাকবে না।
সমাধি বলে কিছু নেই।
আমি বলে কেউ নেই।
কেউ থাকে না।
সত্যিই কেউ থাকে না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১০ দুপুর ২:০৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×