somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তাজুল ইসলাম মুন্না
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ালেখা করছি। পাশাপাশি অনলাইন জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছি দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে। ব্লগে ফেরার ইচ্ছা বহুদিনের। একদিন হয়তো হুট করে আবারও রেগুলার হয়ে যাবো।

মধুর আমার মায়ের হাসি..........

০৯ ই মে, ২০১০ রাত ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"মা"। ছোট্ট একটা শব্দ। কিন্তু এই ছোট্ট শব্দটাই আমাদের জীবনে বড় কিছু করার অণুপ্রেরণা যোগায়। মা এমন একজন ব্যক্তি, যাকে না দেখে একটা মুহূর্ত থাকা যায়না। অন্তত আমি পারিনা থাকতে। অনেকে মানিব্যাগে করে প্রেমিকার ছবি নিয়ে ঘোরে। অনেকে হয়তো আমার কথা শুনে হাসবেন। কিন্তু কথাটা সত্যি। আমার মানিব্যাগে আমার মায়ের হাসি হাসি মুখের একটা ছবি। তার হাসি দেখলে মনেহয় জীবনে আর কোনকিছু চাইনা আমি। আমার জীবনটা পরিপূর্ণ। শুধু সবসময় এই হাসিভরা মুখটিকে প্রাণভরে দেখতে চাই। মা, আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি। একদিন প্রেমিকা আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, "দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি ভালবাসো কাকে?" আমি জবাব দিয়েছিলাম, "আমার মা'কে।" সে বলেছিল, "আমিও সেইটাই চাই। তুমি যদি বলতা আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসো তাহলে যতোটুকু খুশি হতাম তারচেয়ে অনেক অনেক বেশি খুশি হয়েছি তোমার এইকথাটা শুনে।"


মা এমন একজন মানুষ, যার হাসি দেখলে মনটা আনন্দে ভরে যায়।


মা'কে কাদতে দেখেছি খুব কম। যেইদিন আমার বড় ভাই বিদেশে যাচ্ছিলেন সেইদিন কাদতে দেখেছি আমার মাকে। বড় ভাইকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না! কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। কিন্তু কিছুই করার ছিলনা আমার। এয়ারপোর্টের কাচে চোখ লাগিয়ে বারবার দেখার চেষ্টা করছিলেন ছেলেকে। যদি একটিবার দেখা যায়। সেই আশায়। সন্তানকে আমার মা কতোটা ভালবাসেন তা বুঝতে পেরেছিলাম সেইদিন। আমার বড় ভাইও খুব ভালবাসেন মা'কে। বিদেশ থেকে কল করলে বারবার জিজ্ঞেস করেন, "মা, কোন সমস্যা হচ্ছেনাতো? আপনি ভাল আছেন??"


মা'কে শেষ কাদতে দেখেছিলাম দুইদিন আগে। শুধু কাদছিল। আমি জিজ্ঞেস করায় বললো, "আজকে আমার মায়ের কথা খুব বেশি মনে পড়ছেরে। মুন্না, আমার পুরোনো ডায়েরিটা দেতো। আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছে আজকে আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী।" মা কাদছিল আর আমারো কান্না পাচ্ছিল। মাকে থামানোর কোন চেষ্টা আমি করিনি। কারণ, মা হারা একজনের দূঃখ শুধু সেই বুঝবে। এই কষ্টটা আমার কল্পনার বাইরে। মা'কে সমবেদনা দেবার ভাষা আমার জানা নেই। মা খুব ভালবাসতেন তার মা'কে।


এস.এস.সি.-র পর বেড়াতে গিয়েছিলাম ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া। একাই গিয়েছিলাম। ছিলাম এগারো দিন। ফিরে আসার পরে মা জিজ্ঞেস করেছিল, "থাকতে পারলি এতোদিন আমাকে না দেখে?" আমি মানিব্যাগের ছবিটা দেখালাম আর বললাম, "কে বললো আপনাকে দেখিনি? এইতো আমার মা..." মা তার মধুর হাসিটি দিয়ে বললো, "তুই আসলে একটা পাগল।" রাতে বাবা বাসায় আসার পরে শুনলাম মা বাবাকে বলছে এই ঘটনাটা আর হাসছে। অনেকে হাসির সাথে বিভিন্ন ফুলের তুলনা করে। কিন্তু আমার মায়ের হাসির সাথে দুনিয়ার কোনকিছুর তুলনা হয়না। কোনকিছুর না...


মায়ের চোখে অশ্রু দেখলে মনেহয় সারা দুনিয়াটা বোধহয় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আজকের এই দিনে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমার মায়ের চোখে কখনো অশ্রু আসে এরকম কোন কাজ করবোনা। যদি কখনো অশ্রু আসে, তবে সেটা হবে আনন্দের অশ্রু। নিজের সন্তানের সার্থকতায় আনন্দের অশ্রু।


এখন একটা কথা বলবো, "আমার মা দুনিয়ার শ্রেষ্ট মা..." আমি জানি কথাটা শুধু আমার একার নয়। সবার....... কারণ দুনিয়ার সব মা'ই একরকম। তারা শুধু দিয়েই যান। বিনিময়ে পান খুব অল্প। নিজের সব স্বপ্নকে বিসর্জন দেন সন্তানদের জন্য। মা'য়ের সাথে আসলে কোনকিছুর তুলনা হয়না। মা একটাই হয়। যার সাথে তার সন্তানদের একটা অদৃশ্য বন্ধন থাকে। দুনিয়ার কোন শক্তি পারেনা সেই বন্ধনকে ভাঙ্গতে।।।





সবাইকে অনুরোধ করবো আজকের এই বিশেষ দিনটিতে মায়ের জন্য বিশেষ কিছু করতে। যাতে দেখতে পারেন মায়ের সেই মধুর হাসিটি। শুধু এই দিনটি নয় বছরের প্রতিটি দিন চেষ্টা করবেন মায়ের কাছে কাছে থাকতে। আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছে। বিদেশে যাবেন? মা'কে শিখিয়ে যান কিভাবে ভিডিও কলিং করতে হয়। যাতে করে সে তার হৃদয়ের মানিকের সাথে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখতে পারে। ভিডিও দেখে সেই কথাটি বলতে পারে যা দেশে থাকাকালীন বলতো, "তুই কি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস না? এক্কেবারে শুকিয়ে গেছিস..."। আর আজকে থেকে সবাই প্রতিজ্ঞা করুন কখনো এমন কোন কাজ করবেন না যা আপনার মা'কে কষ্ট দেয়...। মা কখনো কিছু না বুঝলে বুঝাবেন। একবারে না বুঝলে বারবার বুঝাবেন। তার উপরে কখনো বিরক্ত হবেন না। মা'য়ের বয়স হয়েছে। কানে কম শোনে। একটা কথা দরকার হলে দশবার বলবেন। তারপরেও কপালে ভাজ ফেলবেন না। আপনি যখন ছোট্ট ছিলেন। তখন আপনার মা হাজারবার আপনার সামনে "মা..মা" বলে আপনাকে কথা বলতে শিখিয়েছে। মা কিন্তু একটাই। মায়ের মনে কখনো কষ্ট দিলে মা হয়তো একসময় আপনাকে ক্ষমা করবে কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আপনাকে কখনোই ক্ষমা করবেন না।




আন্তর্জাতিক মা দিবসে সকল মায়ের প্রতি রইলো সশ্রদ্ধ সালাম এবং ভালবাসা..........



সবাই ভাল থাকবেন। যত্ন নিবেন নিজেদের লক্ষ্মী মা'টির।

হ্যাপি ব্লগিং...
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×