somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা আজো তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি

০৯ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মা আজো তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি। ঠিক ছোটবেলার মতোই। যেমনটি তোমার আঁচল ধরে পুকুরে নামতাম। খুব বেশি দূরে যেতাম না। যদি ডুবে যাই...এই ভয়ে। এখনো বৃষ্টি হলে আমি আগের মতই বৃষ্টিতে ভিজি ঘন্টার পর ঘন্টা। কেউ আমাকে শাসন করে না। বারণ করে না। সবাই কপট ভালবাসা দেখিয়ে বলে বৃষ্টিতে ভেজা নাকি অনেক রোমান্টিক। ওরা কেউ বোঝে না মা বৃষ্টির পর আমি তোমার ভয়ে থাকি। একলাফে ঘরে ঢুকে বই পড়ার ছল খুঁজি। আজ একই শহরে থেকেও আমি তোমাকে দেখি না কতদিন! কতবার ভাবি সবকিছু ছেড়ে আগের মত তোমার কোলে মাথা রাখি। গোলপাতার ঘরে তোমার বুকে মাথা রেখে নত্রপতনের শব্দ শুনি। আমার সকল ভাবনা কংক্রিটের জালে আটকা পড়ে। আমার স্বপ্নঘুড়ি বাবংবার ধুলোয় লুটায়। রাস্তা ক্রমশ ছোট হয়ে আসে। ৮ নং বাসের ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে যাই আমি। হারিয়ে যায় তোমার ছেলে হাজারো জনতার মাঝে। যার চোখে থাকে একরাশ সোডিয়ামের আলো। নষ্ট সমাজের পচা নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে সে আসতে পার্ েনা । শত কাজের ভীড়ে সহস্র ব্যাস্ততায়-এখনো একচিলতে অবসরে তোমার কথা ভাবলে দুচোখে বেয়ে অঝোরে পানি ঝরে। হিমশীতল সন্ধ্যায়ও কষ্টে ঘেমে উঠি।

আমি জানি মা তুমি হয়ত এসব বুঝবে না। তুমি হয়তো তোমার ছেলের লোনা স্বপ্নের কান্না বোঝ না। ছেলের ভাবুক মনের উদাসীন ছবিটা তোমার কাছে বড্ড অচেনা। মা, ছেলেরা সারাজীবন একরকম থাকে না। তোমার সেই ছোট্ট ছেলেটি- যে একদিন ব্যাগ কাঁধে স্কুলে যেতো, সকাল থেকে বিকেল অবধি ছুটে বেড়াতো, সন্ধ্যা হলেই আইসক্রীমের ২ টাকার জন্য বায়না ধরত, তুমি তাকে খুব ভালো করে চিনতে। স্কুলে যাবার পথে তোমার ছেলে কত কী যে শিখেছে তা কিন্তু তুমি জানো না। পিচঢালা কালো রাস্তায় সাদা কেডস পায়ে আমি দেখেছি কত অজানা লোকের বিচিত্র মুখ, শীর্ণদেহের কতো ছেলেকে ডাস্টবিন থেকে লোহা, কাগজ কিংবা ময়লা খাবার তুলতে। তোমার চোখের অগোচরে, তোমার শাসনের আড়ালেই এতকিছু ঘটে গেছে। বড় হয়েছি আমি। কলেজ পেরিয়ে আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। অনেক বন্ধু-বান্ধবী আমার । লাগামহীন আড্ডা দিই। হাসি-গানে সময় পার করি। কিন্তু এরই ফাঁকে যখন দেখি বন্ধুরা সবাই যার যার মত। সবাই নেজ নিজ স্বার্থ নিয়ে। তখন মনের অজান্তেই তোমার মুখের ছায়া ভেসে ওঠে। হাতরে বেড়াই তোমার সব স্মৃতি। ঈশ্বর যদি হয় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল,আমার ঈশ্বর তুমি। আমার সকল ব্যাথার উপশম হয় তোমার হাতের পরশে। এখনো আমি ঘুমের ঘোরে চিৎকার করে তোমাকে খুজি।

আমি জানি মা তুমি এসব বিশ্বাস করবে না। তুমি তো বল- শুধু টাকা শেষ হলেই আমি বাড়ি আসি। আমি নাকি অনেক পর হয়ে যাচ্ছি। তুমি আমাকে ভুল বুঝছো আসলে আমি সেই আগের মতই আছি। হয়তো সামান্য পরিবর্তন হয়েছে আমার চেহারায়। মনের বালুভূমি এখনো আগের মতই... এখনো আমি সাগরের বিশালতাকেও তোমার ভালবাসার সাথে তুলনা করার দুঃসাহস করি না। আকাশের সব রং তোমার স্নেহের কাছে ফিকে হয়ে যায়। জোছনার মায়াবী আলো এখনো তোমার চোখের কাছে অতিসামান্য। আমার জীবন-আত্মা সবই তো তোমার অবদান। আমি কী করে তোমার কাছ থেকে দূরে থাকি। নিজের অস্তিত্বকে নিয়েই সবাই বাঁচে। আমার অস্তিত্ব তুমি। তাইতো যতই দূরে থাকার চেষ্টা করি, শাসন আদরমাখা শাসন এখনো আমি স্বপ্নে খুঁজে ফিরি। কংক্রিটের নগরী ইট আর থাই গ্লাসে ঢাকা। দূবোধ্য সবাই। সবকিছুই কেমন যেন যান্ত্রিক, অতিমানবিক। কোথাও প্রেম নেই, নেই ভালবাসার ছায়া। কাঁদলেও প্রিয়জনের দেখার অবসর নেই। মহাকালের মহারথে প্রত্যেকেই ছুটছি। এতকিছুর পরেও তোমার কোলে শেষ আশ্রয় চাই মা। কৃষ্নচূড়া যত লাল হোক না কেন গাছ থেকে খসে পড়লেই রঙের ছটা হারিয়ে যায়। বিবর্ণ হয়ে য়ে য়ে নিঃশেষ হয়। আমি বিবর্ণ হতে চাই না মা।
(fakibaj sele to tai repost dilam)


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৩
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুদ্ধে নিহত মনোজ দা’র বাবা

লিখেছেন প্রামানিক, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৭১ সালের এপ্রিলের ছব্বিশ তারিখ। দেশে তখন ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়েই বেশি সমস্যা। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ধরে নিয়ে হত্যা করছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ে থেতে ভাল্লাগে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৫ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯

আমার বিয়ে বাড়ির খাবার খেতে ভালো লাগে। আমাকে কেউ বিয়ের দাওয়াত দিলে আমার খুসি লাগে। বিয়ের দিন আমি সেজে গুজে বিয়ে বাড়িতে আয়োজন করা খাবার থেতে যাই। আমাদের এলাকায় বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুর সামনের পাতার ৯টি পোষ্টে শুন্য (০ ) মন্তব্য।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৫ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০



আজকে সকালে একটু দেরীতে ( নিউইয়র্ক সময়, সকাল ৮:২১ ) সামুতে লগিন করলাম; লগিন করে আজকাল প্রথমে নিজের লগিন স্ট্যাটাস পরীক্ষা করি: এখনো সেমিব্যানে আছি। মোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

উসমানীয় সাম্রাজ্যের উসমান এখন বাংলাদেশে

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০



জনপ্রিয় ''কুরুলুস উসমান'' সিরিজের নায়ক Burak Ozcivit এখন বাংলাদেশে। বিগত কয়েক বছর ধরে তার্কির অটোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন সুলতানদের নিয়ে নির্মিত সিরিজগুলো বিশ্বব্যপী বেশ সারা ফেলেছে। মুসলিমদের মাঝেতো বটেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×