somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিন্তার ক্রমবিকাশ

০৭ ই মে, ২০১০ রাত ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেস স্টাডি প্রাথমিক কথা : ভাবনার বিবর্তন

১. আমি অথবা আমার মত একজন যাত্রী গাড়ীতে উঠে বসল। একটা কিশোরী সবার হাতে একটা করে ছোট্ট কাগজ ধরিয়ে দিল। তাতে লেখা : আমি অসহায় পিতা মাতা হারা একটা মেয়ে ঢাকায় ছোট কয়েক ভাই বোন নিয়ে খুব কস্টে আছি। আপনাদের বোন হিসেবে আমাকে সহযোগিতা করুন। কেউ দু দশটাকা করে দিল। ঐ যাত্রী নিজেও কয়েকজনকে বলে কয়ে কিছু আদায় করে দিল। পাশের দুএকজন বললো - আরে ভাই জানেন না, এরা প্রতারক চক্রের। দেখেন না ফার্ম গেটে ওখানে সেখানে এদেরকে পংগু করে কিভাবে বসিয়ে রাখা হয়। যদি এরা একসিডেন্টলি পঙ্গু হত তবে এত বিদঘুটে ভাবে আকৃতি পরিবর্তন হত না। দেখেন হাত পা শরীর কেমন ভয়ংকরভাবে দুমডে মুচডে যায়। ঐ যাত্রী চিন্তায় পড়ে গেল আসলে এভাবে করলে কি মেয়েটার উপকার আসলেই হবে। আর নাকি এরা প্রতারক চক্রের ক্রীড়নক।

২. আবার কখনো সেই যাত্রী কমলাপুরে, টংগীতে অথবা অন্য কোন ট্রেন স্টেশনে স্টেশনে দেখলে অসহায় বিপন্ন বুভুক্ষু মানুষের ভীড়। তাদের কি অমানুষিক অবস্থা। সভ্য সাধারন মানুষেরা এদের দিকে তাকাতেও বিব্রবোধ করে, দ্রুত অতিক্রম করে পাছে চোখ পড়ে। এরা পশু পাখির চেয়ে ও অসহায়, চরিত্রহীন, স্বভাবহীন। চরম অবস্থা মানুষকে কত নিকৃষ্ট করে দেয়। এজন্যে হয়তো শুধু ওরা নয়, পুরো সমাজটাই দায়ী। আমরা চাইলে বদলাতে পারি। শ্লোগান দিয়ে নয়। স্বচ্ছ সিস্টেম দিয়ে।

৩. ঢাকা নির্জন রাজপথে চলতে গিয়ে দেখে এরকম কোন মেয়ে রাস্তায় ঘুমিয়ে আছে। সাত বছর বয়স হয়তো। রাতে অবশ্যই কোন হায়েনার শিকার হবে সে। এটা তার নিয়তি হয়ে গেছে । কি করবে সে, একে বাসায় নিয়ে যাবে? কিছু খেতে দেবে। কাজের মেয়ে হিসেবে থাকবে। কিন্তু কজনকে কাজ দিয়ে পুনর্বাসন করবে? এরকম পুরো ঢাকায় আরো শত শত। বিপন্ন শিশু কিশোর কিশোরী, তেমনি বিপন্ন নেশাখোর হায়েনাও শত শত। কি করা যায়। অনেক কিছু করা যায়। আমার অনেক কিছু নেই কিন্তু সবার সব মিলে অনেক অনেক আছে আমাদের। সেই অনেক যারা তাদেরকে একমত যদি করা যায়, সিস্টেম যদি স্বচ্ছ হয় সবার ঐক্য সম্ভব

৪. এরকম আরো শতশত ঘটনা তার মধ্যে চিন্তার বিবর্তন ঘটায়। যেমন এক বৃদ্ধ বোঝা নিয়ে গাড়ীতে উঠতে পারছেনা। কয়েকজন বৃদ্ধ দাড়িয়ে আছে বাসে। হুমড়িখেয়ে পড়ছে। অনেক তরুন সিটে বসে আছে। কয়জনকে সে গাড়ীতে উঠাবে। কয়জনকে সে বসতে দেবে। অথচ বিষয়টা এরকম যে ১০জন যুবকের সিট ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছে আছে। দরকার ৫টা সিট। অনেকের মন আছে। এই মনগুলো সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদি নিত তবে সমাজটা আরেকটু ভাল হত। অনেক ভাল হত। এটাই পিএইচ সি। মানবিক চিন্তাধারাকে সম্মিলিত রূপ দেয়ার উদ্যেগ। যে উদ্যেগ সবাই কামনা করেছে।

৫. চক্ষু হাসপাতাল বা পংগু হাসপতাল আছে। কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে বা শারিরিক প্রতিবন্ধীকে হাসপাতাল রাস্তা থেকে তুলে নেয় না। সে নিজেও যেতে পারেনা। চিনে না বা যাওয়ার সাধ্যও নাই। এদেরকে হাসপাতালে নিতে বেশি টাকা লাগবে না। অথচ অনেক উপকার হবে তাদের। ৫০টাকা লাগবে হয়তো। ৫০ টাকা অনেকের আছে। খরচ করতেও পারে। তার সময়ও আছে। যেমন একজন যুুবক সপ্তাহে চারটা সিনেমা দেখে। তার ২০০টাকা ব্যয় হয়। সময় যায় ১২ ঘন্টা। সে যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে এই টাকার অর্ধেক সে মানব কল্যাণ দিবে তবে সে মাসে ২টি ছবি/সিনেমা দেখুক। আর বাকীটা দিয়ে সে একজন প্রতিবন্ধীকে হাসপাতালে দিয়ে আসুক। তার ৬ ঘন্টা সময় দুটি ছবি না দেখার কারণে বেচে যাচ্ছে। কিন্তু এসময়টা দেয়া হয়না কারণ সে একা। সেকয়জনকে এভাবে সাহায্য করতে পারবে। ১জনকে পুনর্বাসন করে তো আসলেই কোন পরিবর্তন হবেনা। এরকম আরো শতশত পড়ে আছে। তাই আর করাই হয়না। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। সভ্য মানুষের চোখের সামনে নির্মম অমানবিকতা।

অথচ এই বিষয়টাকে একটু অন্যভাবে দেখা যাক। ঐ এলাকায় ১০০০ জন লোক আছে সম্মিলিত উদ্যেগ নেয়া হলে তারা এইকাজে সামান্য সহযোগীতা করতে পারে। তাদের সামান্য সহযোগীতায় সে এলাকার অনেক সমস্যা সমাধান হতে পারে।

গ্রামে অনেকের সময় আছে আড্ডা দেয়ার। একা একা তার বসে থাকতে ইচ্ছে করে না। এই ১ঘন্টা সময় সে আড্ডা অথবা সিনেমায় না দিয়ে সে দরিদ্র ছেলে মেয়েদেরকে শিখাতে পারে। তার মত ৬জনকে একত্রিত করলে কারো বাসায় একটা ফ্রি স্কুল করা যেতে পারে। অনেক ক্লাশ এইট পর্যন্ত পড়েছে এরকম একজন লোক অবশ্যই বাচ্চাকাচ্চাদেরকে সাধারণ বর্ণমালা যোগ বিয়োগ ইত্যাদি শেখাতে পারে।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৫৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×