somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাইভেট কোচিং ব্যবসা জমজমাট ঃ স্থানীয় প্রশাসন নীরব কিন্ডার গার্ডেন আর প্রাইভেট শিকদের হাতে জিম্মি অবিভাবক মহল

০৬ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শ্রীমঙ্গল উপজেলায় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিকরা নিজের কর্মস্থল ছেড়ে প্রাইভেট কোচিং আর কিন্ডার গার্ডেন স্কুল নিয়ে ব্যস্থ থাকায় শিার্থীরা প্রকৃত শিা গ্রহন করতে পারছে না। স্কুলের শিক, কলেজ ছাত্র, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতা মিলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তৈরী হচ্ছে কোচিং সেন্টার। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গলের শিার্থী ও অভিভাবকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন কোচিং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে। ফলে শ্রীমঙ্গলে প্রাইভেট কোচিং ব্যবসা এখন জমজমাট। ব্যাঙের ছাতার মত শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোড, মৌলভীবাজার রোড, রুপসপুর, উকিলবাড়ী সড়ক, পূর্বাশা আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি কোচিং সেন্টার ও কিন্ডার গার্ডেন স্কুলসহ ও শহরতলীতে নামে বেনামে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক কোচিং সেন্টার। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক উপজেলা ও চা শিল্পাঞ্চল শ্রীমঙ্গলের অবিভাবক মহল ও শিা ব্যবস্থা জিম্মি হয়ে পড়েছে কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট শিক আর নাম সর্বস্ব কিছু কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের হাতে। প্রতি মাসে শিার নামে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট শিকরা লুটে নিচ্ছেন কয়েক ল টাকা। অপরদিকে নামে বেনামে গড়ে উঠা এসব প্রতিষ্ঠানের তদারকি না থাকায় সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, শিা মন্ত্রনালয়ের নিয়ম নীতি উপো করে শহরের অলিতে গলিতে একের পর এক গড়ে উঠছে কোচিং সেন্টার, কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ও প্রাইভেট শিা প্রতিষ্ঠান। প্রাইমারী স্কুল থেকে শুরু করে শহরের সব কটি নামীদামী শিা প্রতিষ্ঠানের শিকরা জড়িয়ে পড়েছেন কোচিং ব্যবসায়। অধিক লাভের আশায় প্রতিদিন বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে কোচিং ব্যবসা চালানো ও প্রাইভেট পড়াতে তাদের আগ্রহ বেশী। একদিকে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের চাপ প্রয়োগ করায় বিশেষ করে নিুআয়ের শিার্থীদের অবিভাবকরা আছেন ভীষন বিপাকে। ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট শিার প্রতি মনোনিবেশ করানোর ফলে স্কুলে ও কলেজগুলোতে কমে যাচ্ছে প্রতিদিনের উপস্থিতি। অপরদিকে, প্রাইভেট পড়ায় আগ্রহ সৃষ্টির ফলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা স্কুল ও কলেজের প্রকৃত শিা গ্রহনে হচ্ছে বাধাগ্রস্থ। অপর দিকে চলতি বছরে নোট বই বিক্রি নিষিদ্ধ করা হলেও শ্রীমঙ্গলের অধিকাংশ লাইব্রেরীতে নোট বই দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। সরকারীভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও শ্রীমঙ্গলের লাইব্রেরীগুলোতে এসব নিয়মের কোন তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না। সরকারী নিয়মের পরিপস্থি ভাবে শ্রীমঙ্গলের প্রায় সবগুলো লাইব্রেরীগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে সরকারী বোর্ড বইসহ নোট ও গাইড বই। বিভিন্ন নাম সর্বস্ব কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ও প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকায় অখ্যাত প্রকাশনা ও নিু মানের বই অর্ন্তভূক্ত করা হচ্ছে। আর এই কাজে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন শহরের নামী দামী লাইব্রেরি ও এক শ্রেনীর শিকরা। প্রতি সেট বই থেকে প্রাপ্ত একটি নিদিষ্ট অংকের টাকা ভাগ বোঝাপড়ার মাধ্যমে ভাগ করে নেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক ও লাইব্রেরীওয়ালারা। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন কোন ভুমিকা নেয়নি রহস্যজনক কারণে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সরকারী বেসরকারী মিলিয়ে ৪টি কলেজ, ২টি বালিকা বিদ্যালয়, ১৬টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ১২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক থাকলেও ছাত্রছাত্রীরা বিশেষ করে জুনিয়র বৃত্তি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীার জন্য সঠিক পরামর্শ পেতে হলে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট শিকদের দ্বারস্থ হতে হয় এমন অভিযোগ শিার্থীদের। এছাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিার্থীদের কাস না করিয়ে প্রাইভেট অথবা কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে শিকতা করছেন। যা নিয়মবহির্ভূত। শ্রীমঙ্গলে কোচিং ব্যবসা ও প্রাইভেট পড়ানোর দৌড়ে যে সব শিা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম, দি বার্ডস রেসিডেন্টসিয়্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজ ও শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ। এছাড়া সরকারী নিয়ম নীতি উপো করে শহরের অলিগলি ছাড়িয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে একের পর এক গড়ে উঠছে কোচিং সেন্টার ও কিন্ডার গার্ডেন স্কুল। বিভিন্ন বাহারী নামে ও ছাত্রছাত্রীদের শতভাগ পাশের নিশ্চয়তা দিয়ে পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের রমরমা কিন্ডার গার্ডেন ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে, কোচিং ব্যবসার অন্তরালে শিার্থীদের জিম্মি করে শ্লিলতাহানী করা হয়। লোক লজ্জার ভয়ে এবং কোচিং সিন্ডিকেট সন্ত্রাসীদের ভয়ে অনেক ছাত্রীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। এসব কোচিং সিন্ডিকেট সদস্যরা বাসায় বাসায় গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার জন্য অবিভাবকদের কাছে উপটোকন নিয়ে হাজির হওয়ারও নজির রয়েছে।
অবিভাবকরা জানান, বর্তমানে জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যের কারনে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজে পড়াতে যে খরচ সেটা কুলাতে হিমশিম খেতে হয়। তার মধ্যে যদি সপ্তম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এক একটি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতে হলে নূন্যতম ৪‘শ থেকে ৫‘শ টাকা দিতে হচ্ছে। একই ভাবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে প্রতি বিষয়ের জন্য নূন্যতম ৬‘শ থেকে ৯‘শ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাইমারী ও কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের শিকরা বাসায় গিয়ে বাচ্চাদের পড়ালে নূন্যতম ১‘হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩‘হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন বলে অবিভাবক সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাইমারী স্কুলের শিকদের নূন্যতম এক বিষয়ে পড়ানোর খরচ পড়ে ৩ থেকে ৪‘শ টাকা।
কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে বাচ্চাদের ভর্তিতেও নেয়া হয় ডোনেশন কিংবা বড় অংকের ভর্তি ফি। নার্সারী ওয়ান কিংবা প্লে গ্র“পে ভর্তি হতে নূন্যতম ২‘হাজার থেকে ৪‘হাজার টাকা নেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শিকদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্নের শেষ নেই। হাতে গোনা কয়েকটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ছাড়া বেশীর ভাগ প্রতিষ্ঠানের শিকদের যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
ফলে শ্রীমঙ্গলে দিনকে দিন বাড়ছে কোচিং সেন্টার, কিন্ডার গার্ডেন আর নাম সর্বস্ব শিা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। সার্বিক ভাবে শ্রীমঙ্গলের শিার্থী ও অভিভাবকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন কোচিং ব্যবসার কাছে।এসব প্রতিষ্টান থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার টাকার রাজস্ব আয় থেকে। এব্যাপারে ভূক্তভোগী অবিভাবক, শিাথীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×