somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগার বারামদী, বন্ধু জন 'ভ্যান ড্যাম' আর আমার মহাপুরুষ তত্ব!

০১ লা মে, ২০১০ ভোর ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটকালে এক মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম, ভেবেছিলাম নিজের পায়ে দাড়িয়ে ওকে মনের কথা বলবো। যখন ইন্জ্ঞিনিয়ারিং এ ৩য় বর্ষে তখন শুনি ওর বিয়ে হয়ে গেছে, থাকে বরিশাল। যেদি পাশ করি আমি সেদিন ওর ঘরে সুন্দর একটা ছেলে হয়। একবার বরিশাল গিয়ে ভেবেছিলাম ওকে দেখে আসি একটি বার, সুখে আছে কি না জানতে ইচ্ছে করে! ওর কথা যেদিন শুনলাম সেদিন আমি আর আমার মাঝে ছিলাম না, হারিয়ে গিয়েছিলাম, মনে হয়েছিলো আমি বেচে থেকেও মৃত। ব্লগে লিখেছিলাম : আমি আসলেই বোকা ছিলাম

তারপরও প্রেম আসে আরেকবার, প্রেমে পড়ি এক রাজকুমারীর। সমস্যা হলো আমি যে নিজে খেটে খাওয়া কামলা সেটা ভুলে গিয়েছিলাম। যখন তাকে হারালাম, তখন মনে হলো আমি নাই, আসলেই আমি নাই। প্রতিদিন মিরপুর ১০ এ দাড়িয়ে থাকতাম তাকে একটি বার দেখার আসায়, তাকে ভুলবার জন্য একসময় প্যাথেড্রিন নিতে শুরু করলাম একটু ঘুমের জন্য। যে ছেলে মি বাংলাদেশ হবার স্বপ্ন দেখতো সে প্যাথেড্রিনেও ঝুকলো। তাকে ভুলবার জন্য নিজের ক্যারিয়ার পোজ করে এখন বাইরে চলে এসেছি, কামলা যেহেতু কামলাই তাই এখানেও কামলা খাটছি। মনে হয় এখনও তাকে ভুলতে পারিনি।

বারামদী:

না সে এখন এমন কেউ না। যার জন্য ব্লগে সব কিছু থেমে থাকবে না, সমাজের এতটুকু নড়চড় হবে না, কালকের সূর্য্য এতটুকু উঠতে দেরি করবে না।

তবে বারামদীর একটু সমস্যা হবে, পড়াশোনায় একটু কম মন বসবে, নিজের দেশের প্রতি কিছু করতে না পারার হতাশা আরেকটু বাড়বে, হয়তো যদি কোনো গার্ল ফ্রেন্ড থাকে তাহলে তার সাথে একটু বেশী সময় কথা বলবে অথবা ফেসবুকে চ্যাটিংটা বাড়বে!

সমস্যাটা কাদের জানেন, আপনার আমার মতো মানুষদের, যারা এখনো স্বপ্ন দেখি একদিন পারসিয়াসের মতো কেউ আসবে, যে আমাদের উপরওয়ালাদের অভিশাপ থেকে বাচাবে। আমরা সবাই অনিমেষের মতো ম্যাজিক ফিগার খুজতে ভালোবাসি যারা সমাজে বিপ্লব এনে পাল্টে দেবে। আমিও দেখেছিলাম গুজরান খা কে নিয়ে। সে চলে গেছে কাউকে কিছু না বলে। বারামদীও চলে গেছে!

জন 'ভ্যান ড্যাম':

গরুর মতো খাটছে ছেলেটা। রাতে ৫-৬ পর্যন্ত কাজ আর দিনে ১০ টায় আবার অফিস, কারন ক্লায়েন্ট তাকে ছাড়া কেউ বুঝে না। এমন না যে বাংলাদেশে এই একটা মাক্স স্পেশালিস্ট, কিন্তু হোয়াওয়ের তাকে ছাড়া চলে না। তবু সব চুপচাপ দেখছে, বরাবরই তাই করে। যখন ডিইউ এর এ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ছেড়ে বিআইটিতে চলে আসে ইলেক্টরিক্যালে পড়ার জন্য তখন কেউ একজন হাত ধরে বলেছিলো,'আরেকটু ভাবো।' তখনও কিছু বলেনি।

৩য় বর্ষে যখন সেই হাত ধরা মানুষটা দূর দেশ আমেরিকা উড়াল দেবার জন্য পারমিশন চাইলো তখনও সে কিছু বলেনি। শুধু বুকে একটা পাথর চাপা দিয়ে হেসেছিলো। তারপর সে হারিয়ে যায়, জনেরও কিছু একটা হারায়। কারো কাছ থেকে নিজের জন্য কিছু চাইবার ক্ষমতা। আর সেজন্যই যখন অন্য কারো হাত ধরে ফেসবুকে ছবি দেয় সে, জন তখন চুপটি করে রাতের ওভারটাইমের কাজ গুলো বেছে নেয়। স্বপ্ন তার একটা ছিলো অবশ্য, বিশাল বড় ডিজাইনার হয়তো টেকনিক্যাল দিকেই। তা না হলেও ও আমার কাছে বিশাল একজন মানুষ, যার বুকের সব সুখ ব্লাক হোলের মতো একটা কিছু টেনে নিয়ে গিয়েছে কিন্তু তার কোনো অভিযোগ নাই। এমন একজন মানুষকে আমি বন্ধূ হিসেবে পেয়ে ধন্য মনে করছি, কিন্তু কস্ট লাগে ওকে আমার রোগটা অনেক আগে থেকেই ধরেছে। এখনও কাউকে কাছে টানতে পারেনি, এসেছিলো অনেকে, কিন্তু সেই যে নির্বিকার হয়েছে ছেলেটা আজও মুখ খোলেনি!




এসব মানুষ চিরকাল চুপচাপ থাকে, বড্ড অভিমানী হয়। তবু আমরা কেন ভুলে যাই, মহাপুরুষেরা কারো জন্য বসে থাকে না, তারা আমাদের মাঝে আসে হারিয়ে যাবার জন্যই।

আর তাই আমরা বোকার দল, আমি কাদি গুজরান খার জন্য, কিছু দেশপ্রেমিক কাদে বারামদীর জন্য, আর কিছু মন কাদে অচ্ছুৎ মনের জন্য! আফসোস, মহামানব হতে পারলাম না। স্যালুট বস!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৮ ভোর ৪:১০
২৭টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×