somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিরতা ও মধু : রামছাগল ও ভেড়া আমদানি ( সূত্র: পোস্টের শেষাংশে দেখুন)ইদানিং কপি পেস্ট মারার ইচ্ছা করে খালি

৩০ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অভিধানে রামছাগলের অর্থ দেয়া আছে বৃহদাকার ছাগল বিশেষ। আরও একটি অর্থ আছে, তা হলো ‘খুব বোকা’। অপর একটি প্রাণীর নাম ভেড়া। অভিধানে তার পরিচিতি হলো— মেষ। দ্বিতীয় পরিচিতিটা একটু অসম্মানজনক বলেই মালুম হয়। সেটি হচ্ছে ‘ব্যক্তিত্বহীন লোক’। অর্থগুলো একটু ঝালাই করে নিতে হলো একটা খবর পড়ে। খবরটা মহা না হলেও কিঞ্চিত্ চাঞ্চল্যকরই বটে! খবর বলছে : মহাজোট সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে উন্নত জাতের এক হাজার ভেড়া এবং ভারতের রাজস্থান থেকে এক হাজার রামছাগল আমদানি করবে। এই পশুর অর্ধেক হবে স্ত্রী প্রজাতির, অর্ধেক পুরুষ প্রজাতির।
খবরে আরও বলা হয়েছে, উন্নত জাতের মহিষও আমদানি করা হবে। তবে প্রায়রিটি পাবে রামছাগল ও ভেড়া। আমাদের এই পাঁচালি বা কাহন থেকে আপাতত মহিষ বাদ থাকুক। মোটা চামড়ার ঘোর কৃষ্ণবর্ণ মহিষকে বেকসুর খালাস দেয়া যাক এই রচনার অতি সংক্ষেপিত বিবরণে। বেচারারা মরার পর গরু হয়ে যায়। ওদের মাফ করে দিচ্ছি। আমরা রামছাগল ও ভেড়া নিয়েই এই ছেঁড়া কলামে কথার মালা গাঁথব।
নাগরিকদের এক আড্ডায় এই অভিনব আমদানি প্রসঙ্গ তুমুল ঝড় তোলে। না, কালবৈশাখী ঝড় নয়। চায়ের কাপে ঝড়। ওই নাগরিকরা স্বভাবতই প্রবল ছিদ্রান্বেষী। সবকিছুই তারা বাঁকা চোখে দেখতে অভ্যস্ত। আমরা লুকিয়ে-চুরিয়ে তাদের তর্ক-বিতর্ক শুনে দেখার চেষ্টা করেছি। মানছি, বিষয়টা ভব্যতার বিপক্ষে যায়। কিন্তু জাতিগত বৈশিষ্ট্য আমরা এড়াব কী করে? চাইলেও তো পারি না। কমলি নেহি ছোড়েগা! কয়লা ধুলেও কী ময়লা যায়? স্বভাব-চরিত্র বদলানোর জিনিস নয়। কস্মিনকালেও না। সাম্প্র্রতিক ভোলার নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল যথেষ্টই ঘোলা করেছে জল। দিনবদলের মতো স্বভাবও যদি পাল্টানো যেত, তবে ভোট নিয়ে এমন ‘সমুদ্র চুরি’ করে ফেলা সম্ভব হতো না। নাগরিকদের আড্ডায় কী হচ্ছে, শোনা যাক—
: দোস্ত খবরটা শুনেছো? বাংলাদেশ সরকার নাকি রামছাগল আর ভেড়া আমদানি করতে যাচ্ছে?
: সরকারের কী মাথা খারাপ না পেট খারাপ? আমাদের দেশে তো এই দু’টি বস্তুর কোনো আকাল নাই। বরং রফতানিযোগ্য অনেক রামছাগল বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে আশপাশে। তাদেরকে পাচারের বিষয়টাই তো সর্বাগ্রে বিবেচনা করা বাঞ্ছনীয় ছিল। কিন্তু করা হচ্ছে উল্টোটা। এইটা কোন্ ধরনের ডিজিটাল তামাশা?
: আরে দোস্ত, বিষয়টা হাসি-তামাশার না। রীতিমত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ মোতাবেক এই আমদানি যজ্ঞ ঘটতে চলেছে। গত ১৭ অক্টোবর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দেশে মাংসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে এই দুটি প্রাণী আমদানির চিন্তা-ভাবনা ও সিদ্ধান্ত।
: হঠাত্ ভেড়ার মাংস, রামছাগলের মাংস নিয়ে টানা-হেঁচড়া কেন করা হচ্ছে? বলি, কারণটা কী?
: এই জন্যে করা হচ্ছে যে, এখন দিনবদলের মওসুম। দিশি ছাগল, দিশি ভেড়ার মাংসে জুত নাই। খেয়ে আরাম পাওয়া যায় না। ফরেন মিটের মজাই আলাদা। একটু পরকীয়া পরকীয়া এফেক্ট আসে। জিভের সোয়াদস্বস্তির কথাটাও সদাশয় সরকারের বিবেচ্য। আফটার অল, এটা জনবান্ধব সরকার। বিদ্যুত্, পানি, গ্যাস দেয়ার মুরোদ না থাকলে কী, নাকের ডগায় রামছাগল ও ভেড়ার সুস্বাদু মাংসের রংচংয়ে মুলো তো ঝুলোতে পারছে। ওই যে কথায় বলে না, ভাত দেয়ার মুরোদ নাই কিল মারার গোঁসাই! তোমার মনে নাই ভারত থেকে ছয় ঘোড়া উপহার পাওয়া জে. মইন উচ্চকণ্ঠে জাতিকে আলু খাওয়ার জন্যে নসিহত করেছিলেন? বলেছিলেন, বেশি বেশি আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান। সেই আলু ব্যাপকভাবে ফলিয়ে চাষীদের মাথার তালু এখন যে চৈতালি রৌদ্রের মতো গরম হয়েছে, তা কিছুতেই ঠাণ্ডা করা যাচ্ছে না বাপু। লোডশেডিংয়ের বিশ্বরেকর্ডে সব হিমাগারের তেরোটা বেজে সারা। পচে গেছে যাবতীয় আলু।
: জে. মইনকে আবার এর মধ্যে টানছ কেন? বেচারা গলফ খেলে ক্যান্টের বাসায় আরামে এলপিআর কাটাচ্ছে। রামছাগল ও ভেড়ার সঙ্গে তার কী সম্পর্ক?
: আছে আছে। এই সরকার তো মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারেরই এক্সটেনশন। পরিণতিও বলতে পারো। সরকার নিজেও বুক চিতিয়ে বলে ওয়ান ইলেভেন তাদের আন্দোলনেরই ফসল। ইনারা মানে বর্তমান সরকারও তো দিন বদলানির কথা কইতেছেন।
: তা বুঝলাম। রামছাগল ও ভেড়া আমদানির টাকা আসবে কোত্থেকে?
: ক্যান, ফরেন রিজার্ভ উপচে পড়ছে না? টাকার জোগান হবে সেখান থেকে। সরকারের যে অতি আগ্রহ,তার আরও একটি গুপ্ত কারণ আছে বলে মনে হয়।
: সেটা কী? একটু খোলাসা করে বল। মানে, ঝেড়ে কাশো দোস্ত।
: আমদানি হলে টেন্ডার হবে—তাতে কাঁচা পয়সার মাদকতা আছে। ভোলা নির্বাচনের মতো নিরঙ্কুশ লুটপাট করা যাবে। ফরেন কারেন্সি বলে কথা।
: ও তাই বল। তাহলে তো এ ধরনের আমদানি কর্ম আরও আরও বেশি করা উচিত। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই। তাতে আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মওকা বেড়ে যায়! দিনবদলের পাশাপাশি কিছু লোকের ভাগ্যেরও বদল ঘটে।
সূত্র:[email protected]
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
( আমার দেশ) ইদানিং কপি পেস্ট মারার ইচ্ছা করে খালি
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ৯:১৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×