আজ বিকেল থেকে আবার চলছে বিড়াল-কুকুর বৃষ্টি। ঘর থেকে বের হবার কোন উপায় নেই। বৃষ্টির ছটা একটু কমতেই বের হলাম রাজপথের অবস্থা দেখতে। কেননা, আজ দোকানীদের ফুটপাতে ছেড়ে দেবার শেষ দিন ।
পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হয়েছে শ্রীলংকায়। আর এরই মাঝে ঘোষণা করা হল এখন থেকে রাজপথে কোন হকার দোকান বসাতে পারবে না। পুলিশের এই ঘোষণা শুনে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানীরা তাদের দোকান-পাট খুলে মালামাল নিয়ে চলে যেতে ব্যস্ত ছিল। গতকালও আমি হেটে হেটে দেখেছি। আজ সকালে পুলিশ ও কলম্বো মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল একত্রে দোকানের অবশিষ্ট অংশ যা রাজপথে পেয়েছে তা তুলে নিয়ে ফেলে দিয়েছে। ফলে রাজপথ আজ ঝক ঝক তকতক করছে যেন।
কলম্বোর প্রাণকেন্দ্র ফোর্ট, পেটা থেকে শুরু করে বরেল্লা, বাম্বালাপিট্টিয়া পর্যন্ত সর্বত্রই এখন পরিস্কার। মানুষ শান্তিতে হেঁটে যেতে পারছে ফাঁকা রাস্তায়।
আমি বেশ কয়েক জন দোকানী যারা আয়ের ব্যবসা করার সুযোগ হারিয়েছে তাদের সাথে কথা বল্লাম। বরেল্লা-র রাজপথে ফলও সবজি বিক্রি করতেন মিঃ অমারাদাসা। তিনি প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের এক জন মহাসমর্থক। দু'টি নির্বাচনে( প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট)ই সরকারী দলকে ভোট দিয়েছেন। দারুণ খুশী ছিলেন তারা। কাল দোকান উচ্ছেদ করায় তারা খুবই মনোক্ষুন্ন। আমি জিজ্ঞেস করতেই বললেনঃ আমরা গরীব মানুষ যারা ছোট খাট ব্যবসা করে খেতাম এখন আমরা কোথায় যাব? আমি প্রশ্ন করার আগেই বললেনঃ প্রেসিডেন্ট খুব খারাপ মানুষ। অথচ এই ব্যক্তি এই কিছুদিন আগেও কত প্রশংসা করতেন প্রেসিডেন্টের।
আমাদের দেশেও তো ফুটপাতে দোকান বসে। আজ পর্যন্ত পুলিশ দিয়ে পিটিয়েও তাদের উচ্ছদ করা যাযনি। অথচ কলম্বোতে পুলিশের ঘোষণা শুনেই সবাই দোকান তুলে নিয়ে বেকার হয়ে ঘরে বসে রইল।