somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিনলিপিঃ ফিরে দেখি গতকাল এইকালে এসে

২৭ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিনলিপিঃ ফিরে দেখি গতকাল এই কালে এসে
_________________________

আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার ভাবনার জগতে হঠাৎই উকি-বুকি মারে পত্র-পত্রিকা। রোজ রোজ কত নিউজ আসে আমি পড়ি সময় পেলে, না পড়লেও অন্যেরা ঠিকই পড়ে। আমার পড়া না পড়া নিয়ে কোন পত্রিকার বাণিজ্যিক জগতে কোন পরিবর্তন আসেনা/আসবে না। ব্যাপারটা নির্ভর করে এখন আমার সমইয়ের ওপর।

আমার গ্রামের বাড়ি সিলেট। কাজ করতে ঢাকা আসা। কাজ করি একটা বিদেশি ব্যাংকের কর্পোরেট ব্রাঞ্চে। পূরোদস্তুর এক কর্পোরেট চাকর। এর বাইরে এক সাদামাটা কবির, এক বেকুব মানুষ।

এখন বলবো আমি কোন এক সেমি মাঝরাতের গল্প। সেদিনের সময়টা ছিল রাতের। অফিস শেষ করে কলিগদের সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম বেইলি রোডে। উদ্দেশ্য আড্ডা আর উদরপূর্তি! এক কলিগের পকেট সাফাই করে হেল্ভেশিয়ায় খেলাম তারপর আড্ডা। ইত্যবসরে মোটামোটী ভালোই রাত হয়ে গেছে। সন্ধ্যে আটে শহর বন্ধ হয়ে গেলে রাত দশে পূরো শহরটা এক ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। বাসে খুব একটা চাপি না। নিজের ব্যক্তিগত কোন গাড়িও নেই। আর এ সময়ে বাস তো অসম্ভবই!

আমি থাকি পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া। শান্তিনগর মোড় থেকে রিক্সা নিলাম। ভাড়া মাত্র ৪০। মনে মনে ভাবলাম ঠকিয়েছি ব্যাটাকে। কারণ আগে যারাই ভাড়া চাইছিল তারা কেউই ৬০এর নিচে নামে না। কিন্তু আবাক কান্ড লোকটা চাইলোই মাত্র ৪০।

রিক্সা চড়ছি। পূরো ফাঁকা রাস্তা। মাঝে মাঝে দু’একটা রিক্সা ওভারটেক করে আমাদের আমরাও কম যাই না। ওমন পরিস্থিতিতে খুব ভালো লাগে আমার। আর আমার ওমন ভালো লাগা মুহুর্তের মনে মনে গাওয়া অবধারিত গান-“এই পথ যদি-----“। আমার রিক্সা আমাকে নিয়ে এক সময় মতিঝিল পৌছে। গেন্ডারিয়া অনেক দূর। আমার হাতে ঘড়ি থাকে না। যাদের হাতে ঘড়ি থাকে তাদের ঘড়িতে তখন পৌণে এগারো।

হীরাঝিল ছাড়িয়ে মধুমিতা। বিশাল সিনেমা হল। হলের দেয়ালে ঝুলছে বিশালাকার ব্যানার। তাকালাম। সিনেমা হলে বসে খুব ছবি একটা দেখি না। কিন্তু ব্যানার-পোস্টার দেখতে ভুল করিনা কখনো! রিক্সা চলে, চাকা ঘুরে আমিও আমাকে নিয়ে ঘুরি মনোমাঝে।

এই জীবনে আমি কখনো ছিনতাইকারির মুখোমুখি হইনি। এ নিয়ে আমার বন্ধুমানুষ বি৯ ভদ্রের সে কী আশ্চর্য্য আফসোস। ও যেমন করে এসব বিষয় দেখে আমি সেভাবে দেখবে দেখতে পারি না। এ নিয়ে বেশ ক’বার তার মোবাইল গেছে তবু তার কোন আফসোস নেই। সর্বশেষ তাকে যখন ধরেছিল ও একটা মোবাইল নিয়ে যাওয়ার পথে আরেকটা মোবাইল আছে বলে তাদের ডেকে দিয়েছিল।

এই রিক্সা থাম! আচমকা আদেশ ভেসে এলো বাতাসে। কমে আসে রিক্সার গতি। হতবাক আমি সাথে রিক্সাওয়ালাও। কেমন আছেন ভাই, তরল গলার কুশল জিজ্ঞাসা! আমার অবাক করা ভালো থাকার প্রত্যুত্তর। আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো আমি হাত মিলালাম। বড়োই নরোম হাত! এ দৃশ্যের কুশীলবদের একটা মোটর সাইকেল। ২জন আরোহি। একজন আমার ছোটখাটো একটা interview নিলো। আমিও দিলাম। ইত্যবসরে বুঝে যাই কী ঘটতে চলেছে। একজন বিনীতভাবে বললো ভাই যা আছে দিয়ে দেন। আশপাশে তাকালাম। এই নিরীহ রাতে আমাদের উদ্দেশ করে কিছু লোক এগিয়ে আসছে। বুঝলাম এটা action point ওদের। একজন বললো ওরা সবাই আমাদেরই লোক। আমিও তাই ভাবলাম। এই ফাঁকা শহরে এই সেমি মাঝরাতে কে থাকবে রাস্তায়?

একটা লোক আমাকে লোহার তৈরি একটা জিনিস দিয়ে ভয় দেখাল। গুলি করলে কেউ আসবে না এগিয়ে। যা আছে তাড়াতাড়ি দ্যা! ২টা লোক আমার সাথে কথা বলছিল। একটা অসম্ভব ভদ্র ভাষায় আর আরেকটা রীতিমতো তুই-তোকারি করে। বললাম কিছু নাই। একজন আমার পকেট চেক করলো মিথ্যে বলছি কী-না! ধরা পড়ে গেলাম। বাড়িয়ে দিলাম মোবাইল; আমার বোনের দেয়া মোবাইল সেট। আমার জন্যে Holland থেকে পাঠিয়েছিলেন। যার হাতে মোবাইল দিলাম সে খুশি হলো। ইস, মানুষ কত অল্পতেই তুষ্ট হয়! আমার ওয়ালেট নিলো। চেক করলো। টাকা-পয়সা নেই। কয়েকটা debit আর credit card. বললাম আট-দশটা ২টাকার নোট আছে নিয়ে নেন কাজে লাগবে। ওয়ালেটটা ফেরত দিয়ে দেন। ও সন্তুষ্ট হলো না। টাকা নিলো না উল্টো ওয়ালেটটাও ফেরত দিয়ে দিলো।

ভীষণ আনস্মার্ট!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×