somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উনিশ শতকের উপমহাদেশের উপন্যাস : একটি তালিকা

১৯ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতীয় উপমহাদেশের উপন্যাসগুলি উনিশ শতকের দ্বিতীয় পর্বে একের পর এক বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় তৈরি হয়ে উঠছিল। সারা পৃথিবীর সাহিত্যের এই নবীনতম শিল্পরূপটির ভারতীয় আদলটির নির্মাণে ইউরোপীয় সাহিত্য ও ভারতে ইউরোপীয় উপনিবেশের শাসনের প্রতিবেশে তৈরি হওয়া যুগটির বিশেষ প্রভাব ছিল। নিশ্চিতভাবে বঙ্কিমচন্দ্রই শুধু বাংলা বা পূর্ব ভারতীয় নয়, সমগ্র ভারতীয় উপন্যাস সাহিত্যেরই প্রথম সার্থক স্রষ্টা। সেইসঙ্গে এটাও বিশেষ উল্লেখযোগ্য অনেক সমকালীন ভারতীয় উপন্যাসকার তাঁর দ্বারা নানাভাবে প্রভাবিত। আবার বঙ্কিমি পথকে এড়িয়ে গিয়ে উপন্যাসের নিজস্ব আদল নির্মাণের সচেতন প্রয়াসও আছে। আমরা মনে করি উনিশ শতকের ষাটের দশক থেকে শেষ দশক অবধি সক্রিয় বঙ্কিম ও তাঁর সমকালীন ভারতীয় উপন্যাসের তুলনামূলক অধ্যয়ন আসলে ভারতীয় উপন্যাসের প্রথম পর্বের ইতিহাস পর্যালোচলার অন্যতম অধ্যায়। এই কাজে বঙ্কিমের সমসাময়িক বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যের তুলনামূলক আলোচনার জন্য ভাষাগুলিকে তিনটি আঞ্চলিক বিভাগে বিভক্ত করেছি। বঙ্কিমের সমসাময়িক অন্যান্য বাংলা ভাষার স্রষ্টারা ছাড়াও হিন্দি,উর্দূ, অসমীয়া ও ওড়িয়া উপন্যাসকাররা আলোচিত হয়েছেন পূর্ব ও মধ্যভারতীয় ভাষার বিভাগে। পশ্চিম ও উত্তর ভারতীয় ভাষার বিভাগে আলোচিত হয়েছেন মারাঠী গুজরাতী পাঞ্জাবী সিন্ধি ভাষার স্রষ্টারা। তেলেগু, তামিল, কন্নড় ও মালয়লম ভাষার রচনাকাররা আলোচিত হয়েছেন দক্ষিণ ভারতীয় ভাষার বিভাগে। একটি স্বতন্ত্র বিভাগে আলোচিত হয়েছেন বিভিন্ন অঞ্চলের সেইসব স্রষ্টারা যারা ইংরাজী ভাষাকে ব্যবহার করেছেন তাঁদের রচনার মাধ্যম হিসেবে। বঙ্কিম এক্ষেত্রেও অগ্রবর্তী নাম।

পূর্ব ও মধ্য ভারতীয় ভাষা

বাংলা – প্যারীচাঁদ মিত্র, বঙ্কিমচন্দ্র, রমেশচন্দ্র দত্ত, সঞ্জীবচন্দ্র, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, দামোদর মুখোপাধ্যায়, শিবনাথ শাস্ত্রী, স্বর্ণকুমারী দেবী, মীর মশররফ হোসেন প্রমুখ (বাঙালি পাঠকেরা এদের লেখার নাম জানেন, তাই উল্লেখ করলাম না।)

ওড়িয়া
উমেশচন্দ্র সরকার (পদ্মমালী -১৮৮৮),
রামশঙ্কর রায় (বিবাসিনী-১৮৯১/৯২),
গোপাল বল্লভ দাস (ভীমা ভুইনা- ১৮৯৮),
ফকীরমোহণ সেণাপতি (দু মাণ আঠ গুণ্ঠ-১৮৯৭, মামু-১৯১৩, লাছামা-১৯১৪, প্রায়শ্চিত- ১৯১৫)

অসমীয়া
এ কে গার্ণি (কামিনীকান্তর চরিত্র – ১৮৭৭),
পদ্মাবতী দেবী ফুকোনোনি (সুধর্মার উপাখ্যান-১৮৮৪),
লক্ষীনাথ বেজবড়ুয়া (পদুম কুনওয়ারী-১৮৯০),
পদ্মনাথ গহৈন বড়ুয়া (ভানুমতী-১৮৯১, লাহোরি-১৮৯২),
রজনীকান্ত বরদোলুই (মিরি জিয়োরি-১৮৯৪, মনোমাটি-১৯০০, তাম্রেশ্বরীর মন্দির- ১৯২৬, রোহদোই লিগিরি-১৯৩০),

হিন্দি
শ্রী নিবাস দাস (রণধীর প্রেমকাহিনী – ১৮৭৪, পরীক্ষাগুরু-১৮৮২),
ঠাকুর জগমোহন দাস (শ্যাম স্বপ্না-১৮৮৫),
বালকৃষ্ণ ভট্ট (নূতন ব্রহ্মচারী-১৮৮৬),
অযোধ্যা সিং উপাধ্যায় (ঠেঠ হিন্দি কা ঠাঠ-১৮৯৯)

উর্দূ
নাজির আহমেদ (মিরাজ উল উরুস-১৮৬৯, বানাত উন নাস-১৮৭২, তাবাত উন নুশো-১৮৭৪, ইবন উল ওয়াকত-১৮৮৮),
সৈয়দ আহমেদ (খুরশেদী-১৮৮৬),
আব্দুল হালিম শারার (মালিক আল আজিজ ভারজানা-১৮৮৮, হাসান ঔর অ্যাঞ্জেলিনা-১৮৮৯),
মানসুর মোহানা-১৮৯০, কোয়াইস ঔর লুবনা-১৮৯১, ফ্লোরা ফ্লোরিন্দা-১৮৯৯),
মহমদ মির্জা রুসভ (উমরাওজান আদা-১৮৯৯)


পশ্চিম ও উত্তর ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে

মারাঠী
বাবা পদ্মনজী (যমুনা পর্যটন-১৮৫৭),
সদাশিব রিসবুড় (মঞ্জু ঘোষ – ১৮৬৮),
জর্ভেকর (বিচিত্রপুরী -১৮৭০),
গুঞ্জিকর (মোচনগড় – ১৮৭১),
পট্টবর্ধন (হাম্বির রাও আনি পুতলাবাঈ – ১৮৭৩),
রহাল কর (নারায়ণ রাও আনি গোদাবরী – ১৮৭৯),
নাগেশ বাপ্ট (শম্ভুজী মহারাজ-১৮৭৯),
শিরভলকর (পাণিপথচা মোকাবলা-১৮৯৩)

পাঞ্জাবী
ভাই বীর সিং (সুন্দরী-১৮৯৮, শতরম্ভ কাউর-১৯০০)

সিন্ধি
প্রীতম দাস (আজীব বাত-১৮৯২)

গুজরাতী
নন্দশঙ্কর (করণ ঘেলো-১৮৬৬),
তালিয়ার খান (রত্নলক্ষী -১৮৮১),
রামনায়ক মেহতা (ভানুমতী-১৮৮২),
গোবর্ধন ত্রিপাঠী (সরস্বতীচন্দ্র – চার খণ্ড – ১৮৮৭ থেকে ১৯০০),
ইছারাম (টিপু সুলতান-১৮৮৮),
জ ব মরিহবান (নিমক হারাম-১৮৯৬)


দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা

তামিল
বেদনায়কম পিল্লাই (প্রতাপ মুদালিয়র চরিত্রম – ১৮৭৯, সুগুন সুন্দরী-১৮৮৭)),
মুত্তেস্বামী পিল্লাই (পদ্মিনী চপা-১৮৮৬),
গুরুস্বামী শর্মা (পিরেম কলাবতীয়ম-১৮৯৩),
রাজম আইয়ার (কমলামপাল চরিত্রম – ১৮৯৬),
এ মাধবাইয়া (পদ্মাবতী চরিত্রম-১৮৯৮),
অরুণাচল আইয়ার (নীলা-১৯০০)

তেলেগু
নরহরিশেট্টি গোপালকৃষ্ণমা (শ্রী রঙ্গরাজ চরিত্র-১৮৭২),
কাণ্ডুকুরী বীরাসলিঙ্গম (রাজশেখর চরিত্র-১৮৮০),
অ পন্ধ কমু (মঞ্জুরাণী বিজয়ম-১৮৯২),
শুভারাভু লেক (প্রণয়মহিমা-১৮৯৪),
গোপালরাও (ত্রিবিক্রম বিলাসম-১৮৯৫),
লক্ষ্মী নরসিমহা (হেমলতা-১৮৯৭)

কন্নড় – গ ল ভীমরাও (চন্দ্রপ্রভা হল কাদম্বরীয়ু-১৮৯৬), গুলবাত্তি বেঙ্কটরাও (ইন্দিরা বাঈ-১৮৯৯), বোলারু বাবু রাও (বাগদেবী – ১৯০৫)

মালয়লম – অজ্ঞাত লেখকের ঘাতক বধর্ম(১৮৭৭), র র নাইক (কালপুরুষ-১৮৮৬), সি ভি রমন পিল্লাই (মার্তণ্ড বর্মা-১৮৯১, ধর্মরাজা -১৯১৩, রামরাজা বাহাদুর-১৯১৮-১৯), চান্দু মেনন (ইন্দুলেখা-১৮৮৯, সারদা-১৮৯২), পোথেরু কুনহামবু (সরস্বতী বিজয়ম-১৯৯৩), যোশেফ মুলিইল (সুকুমারি-১৮৯৭)

ইংরাজী ভাষার ভারতীয় উপন্যাসকাররা -
বঙ্কিমচন্দ্র (রাজমোহন’স ওয়াইফ -১৮৬৪)।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ১২:১৮
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×