somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামের কি ছিরি:P:P:P

১৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাষ্টার্সে পড়ার সময় যে স্যারের কাছে পড়তাম উনার মত গোবেচারা আর ভালো স্বভাবের স্যার আর দ্বিতীয়টি পাইনি। পুরা শ্বশুরবাড়ির গোষ্টীর সবাইরে ভরণপোষণ করত+একসাথেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। তাও স্যারকে দেখলে কেন জানি মনে হত শ্বাশুড়ী আর বউয়ের ভয়ে সবসময় অস্হির । স্যারের কাছে একটানা প্রায় তিনমাসের মতন প্রাইভেট পড়েছি। প্রথমদিকে স্যারের যে বাসাতে আমরা পড়তে যেতাম সেটা ছোট দু'রুমের একটা বাসা ছিল। সেই ছোট বাসাতে স্যার শ্বশুর,শ্বাশুড়ী,২শ্যালক আর বউ-বাচ্চা নিয়ে থাকতো:| ....পড়ার দেড়মাসের মাথায় দেখলাম স্যার উনার ছোট দু'রুমের বাসা ছেড়ে বড় একটা ফ্ল্যাটে উঠে গেল। উনি এতগুলো ব্যাচ পড়াতো যে আমরা বলাবলি করতাম স্যার যদি তার শ্বশুড়বাড়ীর গোষ্টীরে না টানত তাহলে আরো অনেক আগেই এরকম ফ্ল্যাটে উঠে যেতে পারতো।

ফ্ল্যাটে উঠার পর থেকেই স্যারের শ্বাশুড়ীর আসল রুপ দেখতে পেলাম। আমরা পড়তে গিয়ে হাসাহাসি করলে কিংবা জোরে কথা বললে একটু পর পর স্যারের সামনে এসেই ধমক দিত আর মনে করিয়ে দেয় এটা ফ্ল্যাটবাড়ী... চিৎকার করে যাতে কথা না বলি। আবার রুমে ঢোকার সময় স্যান্ডেল এলোমেলো করে রাখলে শ্বাশুড়ী আম্মা দারোয়ানের মতন বলত স্যান্ডেল সুন্দর করে রাখবেX(.....স্যারের ২ শ্যালক তো আরো দুই ডিগ্রি এগিয়ে ছিলো । পড়ার পর আমরা যদি সিঁড়িতে কিংবা নিচে গ্যারেজে দাঁড়িয়ে গল্প করতাম তাহলে দৌঁড়ে এসে বলে যেত বাড়ীওয়ালা নাকি আমাদের আড্ডাবাজি নিয়ে তাদের কাছে অভিযোগ করবে। প্রথমে এমন উৎপাতে রাগ লাগলেও পরে অনেক মজা পেতাম আর হাসাহাসি করতাম এটা ভেবে যে নয়া ফ্ল্যাটের বাসিন্দা হয়ে কয়েকদিন ভাব নিচ্ছে। আমাদের গ্রুপের যে ৮ জন ছিলাম পড়ার সময়ে সারাটাক্ষণই এদের নামে বদনাম করতাম। স্যারের সামনে ও যাতে বদনাম করতে কোন সমস্যা নাহয় সেজন্য তাদেরকে আসল নামে না ডেকে নয়া নয়া ছদ্মনাম দিয়েছিলাম....শ্বাশুড়ী আম্মার নাম দিয়েছিলাম চুমকি:P(উনি কপালে বড় করে একটা টিপ পড়ত সবসময় আর মাথায় উঁচু করে খোঁপা করত বলেইআমাদের গ্রুপের ছেলেরা বলতো উনার নাম চুমকি দিয়েছিলো)। ২ শ্যালকের বড়টার নাম ছিলো বড় পায়জামা আর ছোটটার নাম ছোট পায়জামা:P(সবচেয়ে বেশী হাসাহাসি হত যখন তাদেরকে দেখতাম লুঙ্গি পরে ঘোরাফেরা করছে আর আমরা তাদেরকে দেখলেই পায়জামা বলে ডাকছি)। স্যারের বউয়ের নাম দিয়েছিলাম টেপি:P(আমাদের সমবয়সী আর ক্লাশমেট হওয়া সত্ত্বেও সবসময় টোপামুখ করে রাখত)। খোসা :P নাম ছিল স্যারের শ্বশুরের নাম(বেচারাকে বউ,ছেলে,মেয়েরা কেউ পাত্তা দিতনা,ফলের খোসার মতন অবহেলা করত)।আমাদের যে ফ্রেন্ডের সাথে শ্বাশুড়ী আম্মার খিটিমিটি বেশী হত ও প্রাইভেটে এসেই উল্টাপাল্টা কিছু হলে বলত"চুমকিরে ধরে একটা আছাড় মারতে মন চায়"। আবার কেউ হ্য়ত বলছে"ছোট পায়জামার কালার(কাজ-কারবার) দেখলে রাগ লাগে,কুঁচি কুঁচি করে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিব"।স্যারের বউ সেমিস্টারের সময় সাজেশন নিজে না চেয়ে স্যারকে দিয়ে আমাদের কাছ থেকে কালেকশন করত তখন বিরক্ত হয়ে বলতাম"টেপির কান্ড দেখ হাড়ির মতন মুখ করে সে কি ভাব দেখায়"। মাঝে মাঝে বলতাম"পচা খোসারে কই ফেলবো,বেচারার জীবনে শান্তি নাই"। স্যারকে কোন নাম দিইনি কারণ বেচারা বউ-শ্বাশুড়ীর চাপে এমনিতেই কোণঠাসা হয়ে আছে। তাও আমাদের গ্রুপের ছেলেরা উনার বউয়ের টেপী নামের সুবাদে স্যারকে মাঝে মাজে টেপা বলত।

এখনো আমাদের ফ্রেন্ডদের মাঝে এইরকম নাম দেওয়ার অভ্যাস আছে। বেস্ট ফ্রেন্ড কেয়ারে যখন ওর শ্বাশুড়ী কথা শোনায় তখন ও ফোনে সেটা শেয়ার করে। সেখানেও কারো আসল নাম বলে না। কেয়া তার হাজব্যান্ডরে ডাকে খাড়া শয়তান,শ্বাশুড়ীকে খাড়া শয়তানের আম্মা আর ননদটা সমবয়সী হওয়াতেও খোঁচানি অভ্যাসের জন্য ডাকে উকুনওয়ালী(মাথায় হালকা পাতলা উকুন নাকি আছে)। এসব আজব আজব নামের ছিরি দেখে ২ বান্ধবীতে বদনাম করবো কি,শুধু হাসতেই থাকি.....:P:P:P
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:১০
৭১টি মন্তব্য ৭২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×