somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ(২য় পর্ব)

১৭ ই এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামের পরিচয়: ইসলাম আরবী শব্দ ছিল্মুন থেকে নির্গত, অর্থ শান্তি, নিরাপত্তা। শাব্দিক অর্থ আত্মসমর্পণ করা। পরিভাষায় – আল্লাহর নিকট আÍসমর্পণ করা ও তাঁর বিধানের প্রতি পরিপূর্ণ ভাবে আনুগত্য হওয়া। কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত – ইসলামের পাঁচটি স—¤¦। উক্ত পাঁচটি স—¤¦ ঠিক রেখেই ইসলামের প্রাসাদ নির্মান করতে হবে। খুটি দুর্বল হলে প্রাসাদ ও দুর্বল হয়ে যাবে। ইসলাম শুধু একটি ধর্মই নয়, এটা আল্লাহ্ প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। “আজ তোমাদের জন্যে তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম। তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।” (মায়িদাহ্ -৩)। কুরআনে কি শুধু ধর্মীয় বিধানই আছে? রাজনীতি,অর্থনীতি,ব্যবসা-বাণিজ্য, আদালত,ফৌজদারী,শাসন,বিচার,লেনদেন,যুদ্ধ,সন্ধি এক কথায় জীবনের সব বিষয়েই কুরআনে বিধান দেয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের বিশদ বর্ণনা রয়েছে কুরআনুল কারীমে।“আমি মানুষের জন্যে এ কুরআনে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বিশদভাবে বর্ণনা করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সত্য প্রত্যাখ্যান ব্যতীত ক্ষান্ত হলো না।”(বাণী ইসরাইল -৮৯)। তিনি আরো বলেন, “এমন কোন বিষয়ই নেই যা কিতাবে লিপিবদ্ধ করা হয়নী। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে।” (আন‘আম-৩৮)। “নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম এবং যাদেরকে গ্রহন্ত প্রদান করা হয়েছে তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর তারা পর¯পর বিদ্বেষ বশত বিরোধে লিপ— হয়েছিল। এবং যে আল্লাহর নিদর্শন সমূহ অস¦ীকার করে, নিশ্চয়ই অল্লাহ সত্বর হিসাব গ্রহণকারী।” (আল্-ইমরান – ১৯)। অর্থাৎ আল্লাহর নিকট মানুষের জন্য একটি মাত্র জীবন ব্যবস্থা, (জীবন বিধান) সঠিক ও নির্ভুল বলে গৃহীত। সেটি হচ্ছে, মানুষ আল্লাহকে নিজের মালিক ও মা‘বুদ বলে স্বীকার করে নিবে এবং তাঁরই দাসত্বের মধ্যে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে সোপর্দ করে দিবে। আর তাঁর দাসত্ব করার পদ্ধতি নিজে আবিষ্কার করবে না। বরং তিনি রাসূল (সঃ)-এর মাধ্যমে যে হেদায়াত ও বিধান পাঠিয়েছেন কোন প্রকার কম বেশী না করে তার পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করবে। কারণ, রাসূল (সঃ) সর্বক্ষেত্রেই মুসলিম জাতির আদর্শ নেতা। নামাযে ইমামতির সময় তিনি যেমন রাসূল ছিলেন, মদীনার ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সময়ও তিনি তেমনি রাসূল ছিলেন। এ চিন্তা ও কর্মপদ্ধতির নাম “ইসলাম”। আল্লাহ বলেন, “হে মু‘মিনগণ! তোমরা পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবিষ্ট হও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, নিশ্চয় সে তোমাদের জন্যে প্রকাশ্য শত্র“। (বাকারাহ্-২০৮)। হেদায়াত ও পথনির্দেশ লাভ করার জন্য এখন আর কোন অবস্থায়ই এর বাইরে যাবার প্রয়োজন নেই। আকীদা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যেমন মুসলিম হতে হবে, কর্মজীবনেও ঠিক তেমনি মুসলিম হয়ে থাকতে হবে। এর বাইরে অন্য কিছুই গ্রহণ করা যাবে না। যদি অন্য কিছু গ্রহণ করা হয় তাহলে পরিণামে তা ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে।“আর যে কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছু (ধর্ম ) অন্বেষণ করে তা কখনই তার নিকট হতে গৃহীত হবে না এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”(আল্ ইমরান-৮৫)।
ইসলামের নির্ভুল মানদন্ড
আল্লাহ তা‘আলার ঘোষণা হচ্ছেঃ “(হে মুহাম্মাদ !) তুমি বলে দাওঃ আমার নামায, আমার যাবতীয় ইবাদত অনুষ্ঠান এবং আমার জীবন ও মৃত্যু সব কিছু বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।”(আন‘আম-১৬২)। অর্থাৎ জীবনের সকল স্তরে আল্লাহর হুকুম ছাড়া মানুষ অন্য কারো হুকুম মানতে পারে না। এটাই হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তির কাজ। কেবলমাত্র আল্লাহর হুকুম পালন করে চলা এবং আল্লাহর দেয়া পবিত্র কুরআনের বিপরীত যে নিয়ম, যে আইন এবং যে আদেশই হোক না কেন তা অমান্য করাকেই বলা হয় ইসলাম। জীবনের কোন স্তরে আল্লাহর হুকুমের লংঘন যাতে না হয় সে জন্য আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছেঃ “হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসূলের আর সেই সব লোকের যারা তোমাদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী। এরপর যদি তোমাদের মধ্যে কোন ব্যাপারে বিরোধ দেখা দেয় তাহলে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তিত হও। যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান এনে থাকো। এটিই একটি সঠিক কর্মপদ্ধতি এবং পরিণতির দিক দিয়েও এটিই উৎকৃষ্ট।”(আন্ নিসা-৫৯)। এ আয়াতটি ইসলামের সমগ্র ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনের বুনিয়াদ।এ আয়াতে নিুলিখিত মূলনীতিগুলো স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়া হয়েছে। এক ঃ একজন মুসলমানের জীবনে সকল স্তরে আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে। এর বিপরিত কিছু করা যাবে না। দুইঃ আল্লাহর আনুগত্যের একমাত্র বাস্তব ও কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে রাসূলের আনুগত্য করা। রাসূলের সনদ ও প্রমাণপত্র ছাড়া আল্লাহর কোন আনুগত্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তিনঃ মুসলমানদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি যে কোন পর্যায়েই মুসলমানদের নেতৃত্বদানকারী হবেন তার আনুগত্য করা। তবে শর্ত হচ্ছে তাকে মুসলিম হতে হবে এবং তাকেও আল্লাহ্ ও রাসূলের আনুগত্যকারী হতে হবে এবং এর বিপরিত কোন হুকুম করবে না। এব্যাপারে রাসূলের বাণী হচ্ছে, “নিজের নেতৃবৃন্দের কথা শোনা ও মেনে চলা মুসলমানের জন্য অপরিহার্য, তা তার পছন্দ হোক বা না হোক, যে পর্যন্ত না তাকে স্রষ্টার নাফরমানির হুকুম দেয়া হয়। আর যখন তাকে স্রষ্টার নাফরমানির হুকুম দেয়া হয় তখন তার কিছু শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না। বুখারী ও মুসলিম।“ আল্লাহ্ ও রাসূলের নাফরমানির ক্ষেত্রে কোন আনুগত্য নেই, আনুগত্য করতে হবে শুধুমাত্র ‘মারূফ’ বা বৈধ ও সৎকাজে।” বুখারী ও মুসলিম। চারঃ ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় মুসলিম সরকার ও প্রজাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তার মীমাংসার জন্য কুরআন ও সুন্নাহর চুড়ান্ত ফয়সালা অবনত মস্তকে মেনে নিতে হবে। তাহলেই কেবল অধপতনের জীবন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। অন্যথায় যখন কোন জনগোষ্ঠী কুরআন ও সুন্নাহর হেদায়েত অমান্য করে এমন সব নেতা ও নেতৃত্বের আনুগত্য করতে থাকে, যারা কুরআন ও সুন্নাহর হুকুম মেনে চলেনা এবং বৈধ ও অবৈধের তোয়াক্কাও করে না। ফলে তারা বিপদগামী হতে থাকে যার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব নয়। আল্লাহ্ পাক বলেনঃ “হে নবী তুমি কি তাদেরকে দেখোনি, যারা এই মর্মে দাবী করে চলেছে যে, তারা ঈমান এনেছে সেই কিতাবের প্রতি যা তোমার ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা নাযিল করা হয়েছিল: কিন্তু তারা নিজেদের বিষয়সমূহের ফয়সালা করার জন্য ‘তাগুতে’র দিকে ফিরতে চায়, অথচ তাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করার গুকুম দেয়া হয়েছিল?-শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে সরল সোজা পথ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।”(নিসা-৬০)। ‘তাগুত’ বলতে এখানে এমন শাসককে বুঝানো হয়েছে যে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে অন্য কোন আইন অনুযায়ী ফায়সালা করে এবং এমন বিচার ব্যবস্থাকে বুঝানো হয়েছে যা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার আনুগত্য করে না এবং আল্লাহর কিতাবকে চূড়ান্ত সনদ হিসেবে স্বীকৃতিও দেয় না।“অতএব (হে মুহাম্মাদ!) তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু‘মিন হতে পারেনা যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে বিচারক হিসেবে মেনে না নেবে,তৎপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করে এবং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে।”(নিসা-৬৫)। এছাড়াও দেখে নেয়া যেতে পারে সূরা মায়েদার-৪৪,৪৫,৪৭ ও সূরা নূরের ৪৭-৫০ আয়াতে আল্লাহ্ পাক কতো কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন।

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×