somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলুননা ঘুের আিস ( বান্দরবান ) ১- মাহমুদুর রহমান ভূইয়া

১৭ ই এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দর্শনীয় স্থান

বান্দরবান জেলার দর্শনীয় স্থান সমুহঃ
মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যের সমাহার ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সম্মিলনে গড়ে ওঠা বান্দরবান পার্বত্য জেলা -যেন শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকাবাকা এক অপরুপ ছবি। সাংগু ও মাতামুহুরী নদী বিধৌত ও সর্পিল ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট বড় পাহাড় সমৃদ্ধ এ জনপদ ১১ টি নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী ও বাংলা ভাষাভাষী মানুষের বিচিত্র জীবন প্রবাহে ঐশ্বর্য্যমন্ডিত হয়েছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে তাই এটি পরিণত হয়েছে পরম আকর্ষনীয় এক স্থানরুপে। এ জেলায় রয়েছে দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে অসংখ্য অনাবিস্কৃত গিরিশৃঙ্গ, সুউচ্চ প্রবাহমান জলপ্রপাত ও তটিনী, জলধারা বা পাহাড়ী ঝিড়ি। নিম্নে এ জেলার অনেক পর্যটক আকর্ষনীয় কেন্দ্রসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু স্থানের বিবরণ দেয়া হল।

মেঘলা পর্যটন স্পট

বৈচিত্র্যপিয়াসী মানুষের আত্মিক ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারণের অপূর্ব স্থান মেঘলা । শহরের প্রবেশদ্বার বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পার্শ্বেই অবস্থিত এই রিসোর্টে রয়েছে পাহাড়বেষ্টিত স্বচ্ছ জলের মনোরম আঁকাবাকা লেক। লেকের উপরে রয়েছে আকর্ষণীয় দুটি ঝুলন্ত ব্রিজ। বান্দরবান শহর থেকে ০৫ (পাঁচ) কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। চিত্তবিনোদনের অন্যান্য নানা উপকরণের মধ্যে রয়েছে শিশুপার্ক , সাফারি পার্ক, চিড়িয়াখানা, উন্মুক্ত মঞ্চ, চা বাগান এবং সাময়িক অবস্থানের জন্য একটি রেষ্ট হাউজ। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়। প্রবেশ ফি মাত্র ১০/- টাকা

শৈলপ্রপাত

পাহাড়ের কোল বেয়ে অবিরাম প্রবাহমান স্বচ্ছ পানির ধারা একে বেকে গড়িয়ে চলে যাচ্ছে দূরে বহুদুরে এমনি একটি মনোমুগ্ধকর স্পট শৈলপ্রপাত। বান্দরবান রুমা সড়কে চিম্বুক যাওয়ার পথেই অবস্থিত এ আকর্ষনীয় স্পটটিজেলা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮ কিঃ মিঃ । পাহাড়ী ঝর্নার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমাহার এ স্থানটিকে করেছে আরও বিশেষিত । এখানে রয়েছে আদিবাসী্বমদের বসবাস । রাস্তার পাশেই শৈলপ্রপাতের অবস্থান হওয়ায় দেশী বিদেশী পর্যটকদের ভীড় প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় । এখানে উপজাতী তরুণীরা হাতের তৈরী বস্ত্র বিক্রয় করে থাকেন। শহর থেকে জীপ গাড়ীতে ৫০০-৭০০ টাকা এবং চাঁদের গাড়ীতে ৪০০-৫০০ টাকা লাগবে।


কেওক্রাডং


তাজিংডং চিহ্নিত হবার আগ পর্য়ন্ত এটি ছিল দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা প্রায় ৪,৩৩২ ফুট। এটিও রুমা উপজেলায় অবস্থিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সৌজন্যে রুমা সদর থেকে কেওক্রাডং এর নিকটবর্তী বগালেক পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মিত হয়েছে। ফলে গাড়িতে চড়ে সহজেই বগালেক গিয়ে তারপর পায়ে হেটে এ পাহাড়ে যাওয়া যায়। দূর্গম পাহাড়ী দৃশ্য সৌন্দর্য্য পিপাসুদের মন কাড়বেই।

নীলাচল

বান্দরবান শহরের সন্নিকটে সবচেয়ে উচু পাহাড়ের নাম নীলাচল । দূর হতে দেখতে পাহাড়টি আকাশের নীলের সাথে মিশেছে মনে হওয়ায় এর নামকরন হয়েছে নীলাচল । এটির উচ্চতা প্রায় ১ হাজার ফুট। শহর থেকে প্রায় ০৪(চার) কিঃমিঃ দুরে টাইগার পাড়া এলাকায় এ পাহাড়টির অবস্থান। এ স্থান থেকে বান্দরবান শহর সহ পার্শ্ববতী এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহজেই অবলোকন করা যায়। এমনকি এ স্থান হতে সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরের আলোকসজ্জাও দেখতে পারা যায়। আর বিশেষ করে জ্যোৎস্না রাতে পাহাড়ী সৌন্দর্যের ভাল উপভোগের বিকল্প আর কোন স্থান এর চেয়ে হতে পারেনা । এখানে রয়েছে একটি রেষ্ট হাউজ ও একটি রেস্তোরা।


নীলগিরি

ঋজুক জলপ্রপাত

প্রাকৃতিক পাহাড়ী পানির অবিরাম এ ধারাটি জেলা সদর হতে ৬৬ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পূর্বে রুমা উপজেলায় অবস্থিত। নদী পথে রুমা হতে থানচি যাওয়ার পতে সাঙ্গু নদীর পাড়ে ৩০০ ফুট উচু থেকে সারা বছরই এ জলপ্রপাতটির রিমঝিম শব্দে পানি পড়ে। রুমা হতে ইঞ্জিনচালিত দেশী নৌকায় সহজেই এ স্থানে যাওয়া যায়। মার্মা ভাষায় এক রী স্বং স্বং বলা হয়। রুমা বাজার থেকে নৌকা ভাড়া করে যাওয়া যায়। নৌকা ভাড়া ৫০০ টাকা।

মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স

বান্দরবান জেলাধীন ফাঁসিয়াখালী - লামা - আলীকদম সড়কের ১৬ কিঃ মিঃ পয়েন্টে মিরিঞ্জা পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এ স্থানটিতে পর্যটন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে একটি আকর্ষনীয় টুরিস্ট স্পট হিসেবে গড়ে উঠেছে। সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ১,৫০০ ফুট উপরে এটি অবস্থিত। অনুকূল আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরসহ মহেষখালী দ্বীপ এবং সাগরে চলাচলকারী দেশী-বিদেশী জাহাজ সহজেই দেখা যায় এ স্থান থেকে। পাহাড়টির সম্মুখ ভাগ টাইটানিক জাহাজের আকৃরি মত হওয়ায় এটি ‘‘টাইটানিক পাহাড়’’ হিসেবেও পরিচিত।


বগালেক

রুমা উপজেলায় অবস্থিত সবচাইতে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটটি হচ্ছে বগালেক। রুমা নদী পার হয়ে ১৫ কিঃমিঃ পায়ে হেটে কিংবা নৌকায় করে অথবা শুকনো মৌসুমে চাঁদের গাড়ীতে করে বগালেক যাওয়া যায়। সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ৩,৫০০ ফুট উপরে অবস্থিত এ লেকটি যে কোন পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষন করবেই। পাহাড়ের উপর সান বাঁধানো বেষ্টনিতে প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে এর অবস্থান। এ লেকের পানি সাধারণত গাঢ় নীল রঙের। এখানে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের একটি অত্যাধুনিক রেস্ট হাউজ নির্মাণাধীন রয়েছে।

বৌদ্ধ ধাতু জাদী (স্বর্ণ মন্দির)


বান্দরবান চন্দ্রঘোনা সড়কের ৪ কিঃমিঃ দূরে বালাঘাটাস্থ পুরপাড়া নামক স্থানে সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় এটির অবস্থান এ স্থানটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিকট তীর্থস্থান হিসেবেপরিচিত। সোনালী রংয়ের অপূর্ব নির্মাণ শৈলী ও আধুনিক ধর্মীয় স্থাপত্য নকশার নিদর্শনস্বরুপ এ স্থানটি সবার খুবই আকর্ষনীয়। এখান থেকে সাঙ্গু নদী, বেতার কেন্দ্রসহ বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহজেই উপভোগ করা যায়।


পর্যটকগণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেলিফোন নম্বরঃ
ক্রমিক নং নাম ও ঠিকানা অফিস বাসা
১. অনুসন্ধান ১৭
২. অভিযোগ ১৮
৩. জেলা প্রশাসক ৬২৫০১ ৬২৫০২
৪. পুলিশ সুপার ৬২৫০৫,৬২৯৭৭ ৬২৩০৯
৫. সিভিল সার্জন ৬২৫২৪ ৬২৫৫২
৬. ব্রিগেড মেজর, ৬৯ পদাতিক ৬২৩০০ ৬২৪৪৪
৭. চেয়ারম্যান, বান্দরবান পৌরসভা ৬২৫৮৮ ৬২৫৭৩
৮. নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (NDC) ৬২৫০৬ ৬২৪০৯
৯. ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বন্দরবান থানা ৬২২৩৩ ৬২২৫৪
১০. সদর হাসপাতাল (RMO) ৬২৫৪৪ ৬২৪০৫
১১. ফায়ার সার্ভিস ও সিভির ডিফেন্স ৬২২২২
১২. বান্দরবান প্রেসক্লাব ৬২৫৪৯
১৩. মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স ৬২৯১৯

চিম্বুক

চিম্বুক পর্যটন স্পট ‘‘বাংলার দার্জিলিং’’ খ্যাত চিম্বুকের নাম দেশের গন্ডী পেরিয়ে আজ বিদেশেও পরিচিত। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী পর্যটন স্পট যেখানে গাড়িতে চড়ে সরাসরি পাহাড় চূড়োয় পৌছানো যায়। জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে চিম্বুকের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ট হতে এর উচ্চতা ২৩০০ ফুট। চিম্বুকের পাশে আদিবাসী মুরংদের বসবাস বেশি। জেলার সব ক’টিউপজেলার সাথে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এখানে টিএন্ডটি বোর্ড একটি বেইজ স্টেশন ও একটি টাওয়ার স্থাপন করেছে। পর্যটকদের দৃষ্টিতে এ টাওয়ারটি খুবই আকর্ষণীয়। এ স্থান থেকে বঙ্গোপসাগর দেখা যায়। এখানে প্রায়ই নাটক ও বিজ্ঞাপন চিত্রের স্যুটিং হয়। এখানে সড়ক বিভাগের একটি রেস্ট হাউস রয়েছে । ইহা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি অত্যাধুনিক রেষ্ট হাউজ এখানে নির্মিত হয়েছে। চাঁদের গাড়ীতে চিম্বুক যেতে ১৫০০-২০০০ টাকা এবং জীপ গাড়ীতে ২০০০-২৫০০ টাকা লাগবে।


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×