ধর্ষিত ছাত্রীর জবানবন্দি প্রকাশ করায় যুগান্তর-সমকালকে নোটিস

রুদ্ধদ্বার আদালতে দেয়া ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধর্ষিত ছাত্রীর জবানবন্দি প্রকাশ করায় যুগান্তর ও সমকালের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2013, 03:27 PM
Updated : 25 August 2013, 03:42 PM

ওই ছাত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণের তিন দিন পর রোববার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির আবেদনে নোটিস পাঠানোর এই আদেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক আরিফুর রহমান।

সংবাদপত্র দুটির প্রকাশক, বার্তা সম্পাদক ও আদালত প্রতিবেদককে আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে।

ওই আদালতের পিপি মোহাম্মদ ফোরকান মিয়ার আবেদনে আদালতের এই আদেশ হয়েছে। আবেদনে তিনি বলেন, “ক্যামেরা ট্রায়ালের এ খবর প্রকাশিত হওয়ায় শিশুর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে।”

গত ২২ আগস্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ওই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে রুদ্ধদ্বার এজলাসে সাক্ষ্য দেন। আদালতকে দেয়া তার ওই জবানবন্দি সমকাল ও যুগান্তর সবিস্তারে প্রকাশ করে।

বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার ঐশী রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তা প্রকাশ নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই দুই পত্রিকার বিরুদ্ধে আদালতের এই নোটিস যাচ্ছে।

‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ঐশীকে নিয়ে খবর প্রকাশে সংবাদ মাধ্যমগুলোর দায়িত্বহীনতা দেখিয়েছে বলে গত শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক আলোচনা সভায় মত প্রকাশ করা হয়েছে।

এর মধ্যেই শনিবার হাকিমের কাছে দেয়া ঐশীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রোববার সবিস্তারে বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে।

ভিকারুনসিনার ওই ছাত্রীর সাক্ষ্য রুদ্ধদ্বার আদালতে নিতে আইনজীবী আবেদন করলে গত ১১ জুন বিচারক তাতে সায় দেন।

নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলায় ক্যামেরা ট্রায়ালের বিধান থাকলেও আইনজীবী ও বিচারকদের মধ্যে এর চর্চা দেখা যায় না বললেই চলে।

আইনের ২০(৬) ধারায় বলা রয়েছে- “কোনো ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিংবা ট্রাইব্যুনাল স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করলে এই আইনের ধারা ৯-এর অধীন অপরাধের (ধর্ষণ মামলার বিচার) বিচার কার্যক্রম রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত করতে পারবে।”

গত ২২ অগাস্ট ওই ছাত্রী সাক্ষ্য দেয়ার সময় হাকিম ছাড়া ছিলেন আসামি পরিমল, তার আইনজীবী, ওই ছাত্রীর ব্যক্তিগত আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর।

মামলায় চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন ওই ছাত্রী।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার বাংলা বিভাগের শিক্ষক পরিমলের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর আন্দোলনের মুখে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।