somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় গল্প-উদ্বাস্তু ঘুঘু : পর্ব-২

০৫ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

** মনে হয়, কেউ কেউ বড় গল্প শুনেই ভয় পেয়েছে। যাহোক যারা সাথে আছেন তাদেরকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তাদেরকেও-যারা সাথে নাই। দিল্লী অনেক-ই দূর। আশা করি বন্ধুরা সুবিধা মতো আমাদের সাথে যোগ দেবেন।

পর্ব-১ :http://www.somewhereinblog.net/blog/AshiqueReja007/29127283(যদি কেউ আগ্রহী হন)

প্রস্তাবনা

ধারণা করা হয় প্রথম প্রজন্মের জতুগৃহবাসী ছিল শুদ্ধাচারী। তাদের জীবনাচার ছিল অমলিন। তাদের ছিল প্রচন্ড গতি। নিবেদনে ঐকান্তিকতা। প্রচন্ড পরিশ্রমী এ প্রজন্মের বুদ্ধিবৃত্তিক জীবেরা কর্মে প্রায় নির্ভুল এবং নিপুন।

তারা ব্যবহৃত হয় সবুজ সারের মত।

দ্বিতীয় প্রজন্মে তারা আত্ম-কেন্দ্রীক ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে পড়ে। কর্মে নির্ভুল, দক্ষতায় দক্ষতার সমার্থক। যোগ্যতায় গুণের প্রতিশব্দ এবং তারা বিশ্বাস করতো যে ঈশ্বর তাদের ভিতরেই বর্তমান এবং নিজেকে সন্তুষ্ঠ করে আত্মপ্রসাদ লাভই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করবার একমাত্র সঠিক উপায়। তারা উপযুক্ত ক্ষেত্র হয়েছিল।

পরবর্তী প্রজন্মে তাদের জীবন থেকে আলো তিরোহিত হয় আর তারা হয়ে ওঠে অন্ধকারের প্রতীক। শিল্পীত মিথ্যা, লোভনীয় প্রবঞ্চনা, চমৎকার শঠতা, স্থুল অশ্লীলতার মহিরুহ অথবা কাঙ্খিত ফসলের আশাপ্রদ বীজ।

পরা সে সময় জন্মেছিল।

প্রকৃত নিঃশ্ছিদ্র অন্ধকারের বুক চিড়ে বেড়িয়ে যাওয়া এক চিলতে আলোর ফলা ছিল সে। পদতলে ছিল সন্দেহমুক্ত খাঁটি অজৈব। বৃক্ষের কান্ড সিনথেটিক না হবারও কোন কারণ ছিল না। পাতায় রান্না অসম্ভব, বাতাস সালোক সংশ্লেষনের অনুপযুক্ত। তবু সেই বৃক্ষেই কখনও ফলে ফল। মহান অপরিহার্য পরম অস্তিত্বের ইচ্ছায় কড়কড়ে শুকনা পাতা চিপে বের করা এক ফোঁটা ঔষধের মত কিংবা কাল অমাবস্যার রাত্তির শেষে লাল সুর্যোদয়ের আশার মত সে ফলে। ধ্বংসাত্মক আগুনের কোন লেলিহান লোল জিহ্বা নয়। তার ছিল দিপ্তি। তীব্র, বজ্রচেরা গতির উত্তরাধীকারী হওয়ার বদলে সে ছিল ধীর, স্থির। বাক সংযত। দৃষ্টি নত। হৃদয় স্পর্শকাতর। ভক্তি অন্তপ্রাণ। অবশ্যই পরমেশ্বরের ইচ্ছাই সর্বশেষ কথা, যার পরে আর কিছু নেই।

আছে সব নাটকের যবনিকা। সব ফসলের মাড়াই, পদার্থ, অপদার্থ নির্বিশেষে স্বীয় সংজ্ঞা বহির্ভূত হওয়ার সীমানা। কুশিলব কি জানে, নাট্যকারের ইচ্ছা কি ? কিংবা কোন মহৎ সৃষ্টির উপকরণও কি স্রষ্টার মহত্ত্বকে ধারণায় আনতে সক্ষম ? দ্রষ্টা স্রষ্টার আছে চারজন প্রপ্রজ্ঞা বা বুদ্ধিবৃত্তি আর অগণন ইচ্ছাপূরণ পরিতোষক। একদিন মাড়াই অথবা জতুগৃহে বইত্* নামে(পবিত্র গ্রন্থ অনুসারে ডকট্রিন অব নেসেসিটি তত্ত্বের প্রথম প্রাক্টিস করা হয় তখন এবং স্বঘোষিত উদ্ধারকর্তার প্রেরিত ফ্রিডম ট্রুপ অসামান্য দক্ষতায় সে দায়িত্বপালন করেছিল। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ও অসমর্থিত একটি সূত্র মতে, সেটি ছিল প্রকৃত মাৎসন্যায় এবং এথিক্স, বিধি ও ক্ষমতা নীতির একটি মালপ্রাক্টিস)। বইতের শিঙ্গা বাজে, উজানে, সৃষ্ট স্পেস, পরিতোষক আর পদতলে জতুগৃহবাসী বুদ্ধিবৃত্তিক জীবদের অন্তরের বাহিরে হাওয়ায় হাওয়ায় করুণ শোকের সুর নয়। উৎসব, উচ্ছ্বাস কিংবা এবংবিধ সুরে গিনিপিগের অবোধ আত্মীয়দের দৈনন্দিন দূঃখ, যাতনা, লোভ, হিংসা, দ্বেষ, ঈর্ষা, শেরেক-বেদাত, কৃতি, কুকৃতি, ভুল, অপরাধ, নিরবতা, সাহসিকতা, স-ব মোহন বাঁশির কেমন সূরে পেজা তুলা মত উড়তে থাকে দিগ্বিদিক। সঙ্গীত পরিচালক পরম প্রজ্ঞার ইচ্ছা অনুসারে গীত যায় বদলে আর সেই আবহ সঙ্গীতে সূর মুর্চ্ছনায় ভাসতে ভাসতে বিপুল বইত জলে নামে কাঙ্খিত সত্য আহরণে কিংবা মাৎসন্যায়ে। অগণন নারী, শিশু,বৃদ্ধ, বির্যবান, বির্যবতী, গর্ভবতী, অভিসারী, মিলিত, কর্মী আর ভোগীদের অজ্ঞাত, নিশ্চিত মৃত্যুর ভয়ে ছুটোছুটি। একজন চিত্র পরিচালক অনিমেশ দৃষ্টিতে মৃত্যু নয়, আর্ত মুখচ্ছবি নয় বরং দৃশ্যচিত্রের অসম্পূর্ণতার কথা ভাবেন। তাই গগণবিদারী নিস্ফল আর্তরবের জন্য থাকে আঘাতের আয়োজন। শৃঙ্গারের চুড়ান্ত মুহুর্তটাকে ভরিয়ে তুলতে শীৎকারের প্রয়োজনে থাকে প্রহরণ।


স্খলনে মিলনের, মরণে জীবনের, সূর্যাস্তে দিনের, সুর্যোদয়ে রাত্রির শেষ। প্রতিশ্রুত অমোঘ কেয়ামতের নিদারুণ রাত্রিরও আছে অবসান।
অবসানে ?
ইতস্তত পড়ে থাকে মৃতবৎস, কন্যারা, অঙ্কুরে বিনষ্ঠ অমিত সম্ভাবনারা, পদতলে পৃষ্ট প্রাণহীন শিশু, নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ, গর্ভবতী হোক আর প্রসূতি; স্বাদু, ওষধী বা অমৃতগন্ধী হোক; যদি সে স্বীয় অভ্যস্ত স্কেলের মাপে উদ্দিষ্ট না হয়। আস্ত একখানা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ পকেটে নিয়ে নিঃসঙ্কোচে, অবলীলায় নশ্বর অজ/ইতর বিশেষদের পায়ে দলে ডেরায় ফেরে ঈশ্বরের প্রতিভূ বিমূর্ত শিকারী বা ফ্রিডম ট্রুপ। কাঁধের পলোতে বাতাসের লুকোচুরির শব্দ অথবা শোকার্ত দীর্ঘশ্বাস।

হাতে ? ধ্বংস, ভস্মের ছাইয়ের উত্তরাধীকার আর আপ্লুত এক বায়ু পরাগী প্রাপ্ত বয়স্ক বীজ।

* বিল/হাওর/বাওরে গণহারে মাছ শিকারের দল(শব্দটি উত্তরাঞ্চলে ব্যবহৃত হয়)
চলবে.............

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×