somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিস্তি : ৭৪: তোমার লাগি বন্ধু আমার প্রাণ যে কেমন করে!

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিস্তি : ৭৪:
আমার সময় যুগলবন্ধী হিসাবে এসেছিল মৌ ও রিমি। ওরা দুজনেই ভালো গান করে। আমি মৌ এর কণ্ঠে তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা এবং রিমির কণ্ঠে কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে গান দুটো পছন্দ করি। ওদের প্রায় গাইতে বলতাম। এদের পরে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল মিটি ও প্যাট্রিক ডি কস্তা। মিটিও ভালো গান করে। তবে শুরুর দিকে সে রকম গান করতে চাইতো না। পরে অবশ্য ঠিক হয়ে যায়। আরেক যুগলবন্ধী ছিল লিপি ও সাদিয়া। ওরা গান করতো না ঠিকই, কিন্তু অন্যের গাওয়াটা এনজয় করতো। পুণম ও সাম্যকেওপাওয়া যেতো মাঝে মধ্যে। ওরা অন্যদের সাথে গলা মেলাতো।

সাদিয়ার বান্ধবী সম্ভবত লুপু বা নুপু এবং লিপির বান্ধবী লামিয়াও আমাদের আড্ডায় যোগ দিতো। লাভলী, যে নাটকের ভালো স্ক্রিপ্ট লিখতো সেও ছিল এই আড্ডায়। ওর সাথে আসতো আরজু। অনেক দিন পরেও দেখা সেদিন বারডেমের সামনে। এগিয়ে এসে জানতে চাইলো- ভাইয়া কেমন আছেন। খুব ভালো লাগলো।

ওদের প্রত্যেককে আমার খুবই পছন্দ ছিল। বিচ্ছিন্ন ভাবে ছিল শান্তা। পরে অবশ্য ও আসত না। কারণ ভিন্ন। বাবুর সাথে ওর প্রেম ছিল। সেটি ভেঙ্গে গেলে ও আমাদের ত্যাগ করে! শান্তাও ভালো গান করতো। বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গী। সখি, ভালোবাসা কারে কয়...।

ছেলেদের মধ্যে বাপ্পী, শামীম, ইমাম, মীর মামুন, জনি মং আমাদের সাথে থাকতো। মিটির একটি গান আমাদের সবারই প্রিয় হয়ে ওঠে। এক জোনাকী... দুই জোনাকি ... তিন জোনাকি ওরে। এই গানের একটা প্রেক্ষাপট আছে।

আমরা সবাই তখন সেন্টমার্টিনে। সন্ধ্যার দিকে সবাইকে নিয়ে বের হলাম বিচে। অবকাশ থেকে ছেড়াদ্বীপের দিকে হাঁটছি। জোনাকির আলো জ্বলছে। আমরা অনেক দূর হেঁটে ফিরে আসার সময় নীরবতা। এর মধ্যে হঠাৎ মিটি গানটা ধরে... এক জোনাকী ... দুই জোনাকি... তিন জোনাকি ওরে... তোমার লাগি বন্ধু আমার মন যে কেমন করে। কীভাবে যেনো আমাদের সবার গানটি পছন্দ হয়ে গেলো। তবে মিটি পুরো গানটা জানতো না।

পরে এ গানটা ডাটস সঙ্গীতের মত হয়ে গেলো। আমরা সবাই কারণে অকারণে গানটি গাইতাম। সবচেয়ে বেশি গাইতাম আমি আর মীর মামুন।

ঢাকায় আসার পর আমাদের দলগতভাবে সদস্য হওয়া পাবলিক অ্যাডের ৫ তরুণীরা একজন সুফলা এ গানটির পুরোটায় গেয়ে শোনায়। সেখান থেকে মুখস্থ করে আমরা পুরো গানটি গাইতে পারতাম। সম্ভবত আমি এই একটি গানই পুরো গাইতে (!) পারি। এটি গাইতে গাইতে আমরা সবাইকে বিরক্ত করে ফেললাম। মিটির কণ্ঠে আমার আরেকটি গান প্রিয়...ও মুরশিদ ও। হাছন রাজার গান। অসাধারণ করে ও।

সুফলাদের গ্রুপে অনেকেই ছিল। তার মধ্যে জিসান, ফারাহ-’র নাম মনে আসছে। বাকি দুজনের নাম এখন মনে পড়ছে না। ওদের সমস্যা ছিল ওরা ঢাকার বাইরের ট্যুরে যেতে পারতো না । বেচারাদের জন্য এ জন্য আমাদের বহু দু:খ ছিল। বাসা থেকে তাদের পারমিশন হলো সকালে বের হবে, সন্ধ্যার আগে আগে বাসায় ঢুকে যাবে।

মজার ব্যাপার হলো ওরা ৫ বান্ধবীর সবাই প্রথম শ্রেণীতে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছে । খুবই মেধাবী। হাসতো প্রচুর। আমি নিজেও প্রচণ্ড হাসতে পারি! তাই আমরা মাঝে মধ্যে হাসির আয়োজন করতাম। লাফিং ক্লাব খোলাও একটা পরিকল্পনা সে সময় হয়েছিল। পরে সেটি আর বেশি দূর এগোয়নি। আমরা এক জোনাকী গানের ভেতর একটা শব্দ চেঞ্জ করে সুফলার নামটা যুক্ত করে গাইতাম। আসলে মজা করা আর কি।

ওই লাইনটা হলো এক ফসলা, দুই ফসলা.. তিন ফসলা ... সেখানে মাঝখানে আমরা বলতাম দুই সুফলা। ব্যাপারটা সুফলা খুবই এনজয় করতো। ওদের সাথে এখন আর যোগাযোগ হয় না । নাম্বারও হারিয়েছি। ওরাও বিয়ে শাদী ও চাকুরী নিয়ে ব্যস্ত। একজন দেশের বাইরে, সম্ভবত জাপানে। যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল!

তবে এর মধ্যে বছর কয়েক আগে জিসানের সাথে কক্সবাজারে দেখা। বিয়ের পরে বেড়াতে গেছে। আমি একটা ট্যুর নিয়ে নিয়ে গেছি। হিমছড়ি পাহাড়ের সামনে বসে আছি। হঠাৎ দেখলাম জিসানকে। জোরে ডাকলাম। ওর স্বামী মনে হয় অবাক হলো। পরে আলাপ হয়েছে। জানালো সেন্টমার্টিন যেতে চায় কিন্তু টিকিট ও পরিবহন সমস্যা। আমি আমার গ্রুপের সাথে ওদের পাঠিয়ে দিলাম সেন্টমার্টিন। তারপরেও যোগাযোগ ছিল।

ডাটসের সদস্য নির্বাচনটা আমরা খুব এনজয় করতাম। সদস্য নেয়ার জন্য পোস্টারের শব্দমালাও বদলেছিলাম। আগের ফরমেট থেকে কেবল স্লোগানটা (পর্যটন শিল্পের জন্য চাই সামাজিক আন্দোলন) নেয়া। বাকিটা চেঞ্জ। ফটোগ্রাফি, ফিচার রাইটিংয়ের মত কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করলাম। এটি এখনো আছে। তবে এখন আর কোর্সগুলো করানো হয় না। কেবল পোস্টারে উল্লেখ থাকে। আমার সময় করানো ফটোগ্রাফি ও ফিচার রিপোর্টিং কোর্স নিয়ে এক পর্ব লিখবো পরে।

বলছিলাম সদস্য নির্বাচনের কথা। আমরা যখন সদস্য হই, সে সময় অনেক কড়া কড়া প্রশ্ন করা হতো। দল বেঁধে আসলে সেখান থেকে দু একজনকে বাদ দেয়া হতো। আমি এর বিপরীতটা করলাম।। দলবেঁধে আসলে তাদের বেশি প্রায়েরিটি দিতাম। যারা গান বাজনা কবিতা করতো তাদের আরো বেশি এগিয়ে রাখতাম। তাছাড়া দিনে অন্তত শ দুয়েক সাক্ষাৎকার নিতে হতো, তাই সবার সাথে গল্প করেই বুঝে নেয়ার চেষ্টা করতাম, তার আগ্রহ কতখানি। আগে পলিটিক্যাল ছেলেদের ব্যাপারে ভয় ছিল। আমি সেটাকে গোনায় ধরলাম না।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×