somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ “দি হার্ট লকার”

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুমম......কিভাবে শুরু করব! সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এওয়ার্ড পাওয়া মুভিগুলোর মধ্যে আন্দাজ ঠিক ছিলো মাত্র দুটো মুভির ব্যাপারে; মার্টিন স্করসিসের “ডিপার্টেড” এবং "নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন"। তা এদের তুলনায় “দি হার্ট লকার” কেমন মুভি হতে পারে? ২০০৯ এ মুক্তি পাওয়া এই মুভি ইরাকে এখনও চলা যুদ্ধ(?) নিয়ে। হিসেব অনুযায়ী এইটা হল সবচে কম আয় করা মুভি যেটা একাডেমী এওয়ার্ড পেয়েছে। Mark Boal, এই মুভির স্ক্রিন রাইটার বেশ কিছুদিন বাগদাদে এক বম্ব স্কোয়াডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি তখন ছিলেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। এই ভদ্রলোকই "In the Valley of Elah" এর স্ক্রিনপ্লে লিখেছিলেন Tommy Lee Jones এর সাথে। সব মিলিয়ে পুরস্কারের হিসেব বেশ লম্বা। উইকিপিডিয়া থেকে কপি পেষ্ট মারা শুরু করি তাহলে...

একাডমী এওয়ার্ড পেয়েছে Best Picture, Best director, Best Original Screenplay, Best Sound editig এবং best Film Editing.....................এ। Directors Guild of America Award পেয়েছেন ডিরেক্টর Kathryn Bigelow; এবং প্রথমবারের মত কোন নারী পরিচালক এই সম্মান পেলেন। শ্রেষ্ঠ পরিচালনা এবং শ্রেষ্ঠ ছবি এইরকম আওয়াজ দিয়ে ফেলেছে বেশ কিছু সমালোচক এসোসিয়েশন। আরও মজার ব্যাপার হল যে প্রধান তিনটি সমালোচক গ্রুপ প্রাইজ (NY, LA এবং NSFC এর) পেয়ে গেছে এই মুভি; ইউ এস এতে ৪র্থ মুভি যেটা এইরকম কিছু ঘটালো। আগের তিনটা মুভি যেখানে Goodfellas, Schindler's List এবং L.A. Confidential(L.A. Confidential যারা দেখছেন হাত তুলেন!); বিরাট অর্জন সন্দেহ নাই। আবার দেখলাম Washington DC Area Film Critics award প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে পুরস্কার! Boston Society of Film Critics গত ত্রিশ বছরে প্রথমার কোন মুভিকে পাঁচটা(!) এওয়ার্ড দিয়েছে। Avatar-এর মত পর্বতপ্রমাণ বাজেটের মুভি শ্রেষ্ঠ মুভির পুরস্কার পায় নাই; আমি নিশ্চিত যে
James Cameron ব্যাপক হতাশ হয়েছেন এই ঘটনায় যে তার ৫০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই মুভি বাঁশ খেয়ে গেলো পুঁচকে এক মুভির কাছে(এক্স বউ এর কাছে ধরা!)।

বাপস!! বিরাট লিষ্ট! আমিও ধরা খাইলাম ত। এই মুভি নিয়া খারাপ কিছু কিভাবে বলি?

এরপর Rotten Tomatoes এর রিভিউ গুলান দেখে আমি ত আরো অবাক! গড়ে রিভিউ বেশ পজিটিভ; আগেভাগেই ধারণা ছিলো অনেকের যে এইটা অস্কারে ফাটায়ে দিবে। ইরাক যুদ্ধে এইটা হয়ত সবচে' সময়পযোগী মুভি, অসাধারণ পরিচালনা করেছেন Bigelow (তার প্রথম যুদ্ধবিষয়ক মুভি), টানটান উত্তেজনা, প্রায় বাস্তব দৃশ্য, সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে অনুভুতি তুলে ধরা হয়েছে............এইরকম আরো কত মন্তব্য পড়লাম।

নাহ! এইভাবে গেলে তো আর হবে না। আমি প্রত্যেক বাক্যেই সারকাষ্টিক সুর তুলতেছি আর কোন নেগেটিভ জিনিশ খুজে পাইতেছি না। অনেক ভেবেচিন্তে পেয়ে গেলাম একটা বুদ্ধি, যারা এই মুভি দেখেছে এবং ব্যক্তিগত জীবনে সার্ভ করেছে তাদের বক্তব্য কি? কতটুকু রিয়েলিস্টিক এই মুভিটা সেই দর্শকরাই বলতে পারবে। এইটা কি টিপিকাল আমেরিকান যুদ্ধবিষয়ক মুভি নাকি অন্য কিছু এইটা জানা দরকার। এবং এইজাতীয় কিছু কমেন্ট এবং রিভিউও পেয়ে গেলাম। সেগুলার ভিত্তিতে কিছু ইন্টারেস্টিং আইডিয়াও পেলাম। কয়েকটা উল্লেখ করার মত,

"This movie was utter crap and was nothing like an actual EOD unit. I’ve been to Iraq as EOD and not once did we go any where without escorts. If the main character would have done those things in real lifethat he did I’m the movie he would have been kicked out and never let back into an EOD unit! The EOD comunity finaly gets a movie made and it’s a piece of garbage. Robo cop was more realistic then this steaming pile of crap."
কমেন্টের লিঙ্ক।


"...........This movie was insulting to the the EOD soldiers i served with (easily one of the most valuable assets in any combat operation). I was there for the invasion when it was the wild west and again with the surge. Granted, it was a completely different war by 2006 but I can not find any way to relate to this movie. Its like someone overheard several drunken privates telling war stories and tried to mash them together to make a movie......"
কমেন্টের লিঙ্ক।

"-----------As an OIF veteran having worked alongside EOD countless times, I found this movie to be completely ridiculous. EOD techs don’t walk up to IED’s with bomb suits and cut wires.First of all, it takes hours for the EOD guy to actually get to the suspected IED. Second, it takes
hours for the EOD guys to get their little robot ready to go up to the IED. Then finally, hours later after the guys who find the IED have called EOD, it is blown in place. Hardly exciting I know, but it pisses me off that Hollywood makes heroes out of these guys when the real heroes are the guys on patrol every day finding these things, sometimes getting fragged in the process. EOD doesn’t roll around Iraq in a humvee by themselves without 2 or 3 truck escorts. Soldiers don’t leave a cal .50 mounted humvee unoccupied in the streets of Iraq. RANGERS AREN’T
FREAKIN’ EOD TECHS. EOD TECHS DON’T KNOW HOW TO OPERATE A BARRETT, MUCH LESS DRILL A GUY IN THE HEAD WHILE RUNNING FROM A THOUSAND METERS. BUCK SERGEANTS DON’T PUNCH A SERGEANT FIRST CLASS IN THE FACE
AND STAY AROUND TO TELL THE STORY! I’m sorry, but .............."
কমেন্টের লিঙ্ক।

"....................................This main character would have been court-martialed after some of the stunts he pulled. ......movie has received. Besides the cowboy antics, improper procedures and the constant disrespect of how the uniform is worn (The American flag is worn on the
wrong shoulder in some of the shots and in one shot a LTC is wearing the flag on both shoulders), the acting is horrible and the plot is silly. I understand what the movie was trying to say...War is a Drug. I can relate with that but this movie could have done SO much more to portray this........................."
কমেন্টের লিঙ্ক।

এইজাতীয় সব কমেন্ট বা রিভিউ পড়েন এইখান থেকে movies.yahoo.com
behindthehype.com

বহুৎ রিভিউ পেয়ে গেলাম যেগুলো করেছে ইরাক বা আফগানিস্থানে যুদ্ধ করা ভেটেরানেরা। আর ধরে নেই মন্তব্যকারীরা তাদের পূর্ববর্তী বা বর্তমান পেশা নিয়ে চাপা মারে নাই। নাহ, ভাবতেছেন যে মুভিটা যুদ্ধ নিয়া রিয়েলিষ্টিক কিছু দেখায় নাই তাই এইটাকে ফালতু মুভি বলব। কিংবা চিন্তা করতেছেন যে সকল এওয়ার্ড পাওয়া মুভিরই নেগেটিভ রিভিউ আছে। তাছাড়াও উন্নতমানের মুভি হতে গেলেই যে রিয়েলিস্টিক হতে হবে এমন মানে নাই। কিন্তু যুদ্ধ নিয়ে মুভিকে কিছু বাস্তবানুগ হতেই হবে, যদি সেটা এতগুলো এওয়ার্ড পেয়ে যায়। দর্শকেরা এসব মুভি সিরিয়াসলিই নেয়। Rotten Tomatoes এর ফাউল রিভিউ গুলোর কথা বাদই দিলাম। এইটা হয়ত ইউ এস আর্মির ইরাক যুদ্ধের শক্তিশালী কোন প্রপাগান্ডা নয়, কারণ ইরাক যুদ্ধের চেয়ে এখানে সাধারণভাবে যুদ্ধ, মৃত্যু, পেশাদারিত্ব, সিনেম্যাটিক বী্রত্ব, যুদ্ধ নিয়ে সৈন্যদের অবসেশন, ভয়, আতংক এইসব বেশি ফুটে উঠেছে। বম্ব স্কোয়াডের Sgt. William James, এই মুভির প্রধান চরিত্র। তার এই বিপদজনক পেশা এবং একাজে তার বিশেষ দক্ষতা, বম্ব ডিফিউজে করার প্রত্যেকটা দৃশ্য টানটান উত্তেজনা খোরাক দেয়। তার টীমের বাকি দু'জন সদস্য যারা আছে তাদের চরিত্রও খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তোয়াল হয়েছে এখানে। একভাবে বলা যায় Sgt. William James এর গল্পটাই প্রধান এখানে, ইরাক যুদ্ধ নয়; যুদ্ধটা মুভির গল্পের জন্য প্রয়োজনীয় একটা পটভূমি এনেছে মাত্র।
শুরুতেই মুভিটা খানিক যুদ্ধবিরোধী মনোভাব দেখায়। “war is a drug.” উদ্ধৃতিটি Chris Hedges এর, যিনি The New York Times এর সাবেক war correspondent।-নিউয়র্ক টাইমস রিভিউ । কিন্তু এটা খুবই সামান্য ব্যাপার। ইরাকে যে হারে নিরীহ লোকজন মারা যাচ্ছে...... এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা নিয়ে শুরু থেকেই অসংখ্য প্রশ্ন। এইসবের পরেও এই মুভি দেখলে মনে হয় ইউ এস সৈন্যরাই ভিক্টিম এখানে, এইসব ফাইজলামি আর কত? তার উপর এই মুভি এতো এওয়ার্ড পায়, রিভিউ পড়ি যে ইরাক যুদ্ধের পরিস্থিতি- সবচে' ভাল ফুটে উঠেছে এপর্যন্ত এই মুভিতে। লোকজন তাদের দেখা সেরা মুভির তালিকায় রাখে এই মুভিকে!! "Black Hawk Down"-এরও এতো সমালোচনা দেখি নাই।


শেষ কথা......
মুভি বের হবার কয়দিন পরেই দেখেছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমার এক দোস্তর কাছে গাই রিচির "শার্লক হোমস" আর টারান্টিনোর "ইনগ্লোরিয়াস বাষ্টার্ডস"- নিয়ে হতাশ হয়ে হাউকাউ করছিলাম। তখন তাকে "হার্ট লকার" দেখার কথা বললাম। বলেছিলাম যে মুভিটা বাকী দশটা আমেরিকান যুদ্ধবিষয়ক মুভি থেকে আলাদা, একটু আলাদা। কিন্তু এই জিনিশ পাঁচ ক্যাটাগরীতে এওয়ার্ড পেয়ে গেলে টেনশনে পড়ে যাই। ১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই মুভি আড়াই কোটি ডলারের উপর আয় করুক, সমস্যা নাই। কিন্তু লোকে এই মুভি দেখে ইরাক যুদ্ধের প্রকৃত অবস্থা আন্দাজ করার চেষ্টা করলেই সর্বনাশ।









তথ্যসূত্রঃ
wikipedia.org
the Daily Telegraph
The New york Times
"'Hurt Locker': American Bomb Squad In Baghdad'
Rotten Tomatoes
Chicago Sun-Times
"The Hurt Locker as Propaganda"
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:১৩
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×