somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাবিজ বিক্রেতা ‘দেউল্ল্যা’ যুদ্ধের পরেই হয়ে যান আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
১৯৭১ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হলেও মাওলানা হিসেবে পিরোজপুর এলাকায় ‘পাঁচ তহবিল’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। যাদের প্রধান কাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী বাঙালি এবং হিন্দুদের বাড়িঘর দখল এবং তাদের সম্পত্তি লুট করা। লুণ্ঠনকৃত সম্পদ গনিমতের মাল হিসেবে নিজে ভোগ করেছেন এবং পাড়েরহাটে লুটের মাল বিক্রির জন্য দোকানও খুলে ছিলেন। এছাড়াও তিনি লুটের আসবাবপত্র দিয়ে শ্বশুরকে ঘরও তুলে দিয়ে ছিলেন।

বর্তমানে জামায়াতের নির্বাহী সদস্য আলস্নামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর জেলার তৎকালীন ইন্দুরকানীর (জিয়ানগর) সাউথখালী গ্রামে ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ইউসুফ আলী শিকদারের ছেলেকে ‘দেউলস্না’ নামে সকলে চিনত। সংসার চালানোর জন্য পাড়েরহাটে তার একটি ছোট মুদি দোকান থাকলেও তিনি মূলত তাবিজ বিক্রি করতেন বলে স্থানীয় জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষতিগ্রসত্ম পরিবারের সদস্যসহ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই থেকে জানা গেছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ মে পিরোজপুর থানার সামনে থেকে সাঈদীর সহযোগীরা লেখক হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদকে ধরে নিয়ে যায় বালেশ্বর নদীর পাড়ে। সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি। ৭ মে আবার তাদের বাসায় সাঈদীর নেতৃত্বে লুটপাট হয়। পাকিসত্মান বাহিনীর ক্যাপ্টেন আজিজের সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকায় বিভিন্ন সময় জোর করে নারীদের পাঠানো হতো পাকিসত্মানি ক্যাম্পে। ‘পাঁচ তহবিলে’র সদস্যরা হলেন, দানেশ মোলস্না, মোছলেম মাওলানা, আব্দুল করিম, আজাহার তালুকদার ও সেকান্দার।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সাঈদীর অপকর্ম সম্পর্কে মানিক পশারী বলেন, একাত্তরে সালের ৮ মে সাঈদী আমার চোখের সামনে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। টাকা-পয়সা সব কিছু লুটে নিয়েছে। এসময় তিনি তার ঘরের পোড়া অংশ এবং টিনের গায়ে লেগে থাকা গুলির চিহ্ন দেখান। তারা যখন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তখন সাঈদী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই তাণ্ডবে উৎসাহ দিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম জানান, ১৯৭১ সালে এরা পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ী বেনিমাধব সাহা, নগরবাসী সাহা, তারক সাহা এবং উমিতপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ার চিত্তরঞ্জন তালুকদার, রবি তালুকদারসহ আরো অনেকের বাড়ি লুট করেছিল। এরাই বিনা বালীকে একাত্তরের ৪ জুন নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা করেছে।

পিরোজপুর জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতমনারায়ণ রায়চৌধুরী বলেন, বিএনপি আমলে সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নয় মর্মে স্বাক্ষর অভিযান শুরু করেছিল। আমি তখন মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম যাতে কেউ স্বাক্ষর না করে। এ বিষয়ে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা একেএমএ আউয়াল বলেন, সাঈদী যে যুদ্ধাপরাধী এর অনেক প্রমাণ আছে। জিয়ানগরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধকালীন সময় এই সাঈদী ছিল দেলোয়ার শিকদার।

মানিক পশারী পিরোজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলামের আদালতে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ এনে ১৩৫/০৯ নং ধারা ৩০২, ৩৮০, ৪৩৬ ও ৩৪ নং মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। অন্য তিন আসামি হলেন, মো. মহসীন, মমিন হাওলাদার ও হাকিম ক্বারী। মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদুরার ইব্রাহিম হাওলাদারকে ধরে হানাদার ক্যাম্পে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা অভিযোগ রয়েছে। এদিকে জিয়ানগর থানায় অনুরূপ আর একটি মামলা দায়ের করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহাবুবুল হাওলাদার। এই মামলার প্রধান আসামিও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। অন্য তিনজন হলেন- তার সহযোগী হিসেবে উলেস্নখিত মো. হাবীবুর রহমান মুনসি, মো. মোসত্মফা হাসান সাঈদী ও মাওলানা মোসলেউদ্দিন।

১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেলোয়ার শিকদার পিরোজপুর থেকে পালিয়ে যান। ১৯৮৫ সালের আগস্ট পর্যনত্ম তিনি পলাতক ছিলেন।
১৯৭১ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হলেও মাওলানা হিসেবে পিরোজপুর এলাকায় ‘পাঁচ তহবিল’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। যাদের প্রধান কাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী বাঙালি এবং হিন্দুদের বাড়িঘর দখল এবং তাদের সম্পত্তি লুট করা। লুণ্ঠনকৃত সম্পদ গনিমতের মাল হিসেবে নিজে ভোগ করেছেন এবং পাড়েরহাটে লুটের মাল বিক্রির জন্য দোকানও খুলে ছিলেন। এছাড়াও তিনি লুটের আসবাবপত্র দিয়ে শ্বশুরকে ঘরও তুলে দিয়ে ছিলেন।

বর্তমানে জামায়াতের নির্বাহী সদস্য আলস্নামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর জেলার তৎকালীন ইন্দুরকানীর (জিয়ানগর) সাউথখালী গ্রামে ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ইউসুফ আলী শিকদারের ছেলেকে ‘দেউলস্না’ নামে সকলে চিনত। সংসার চালানোর জন্য পাড়েরহাটে তার একটি ছোট মুদি দোকান থাকলেও তিনি মূলত তাবিজ বিক্রি করতেন বলে স্থানীয় জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষতিগ্রসত্ম পরিবারের সদস্যসহ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই থেকে জানা গেছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ মে পিরোজপুর থানার সামনে থেকে সাঈদীর সহযোগীরা লেখক হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদকে ধরে নিয়ে যায় বালেশ্বর নদীর পাড়ে। সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি। ৭ মে আবার তাদের বাসায় সাঈদীর নেতৃত্বে লুটপাট হয়। পাকিসত্মান বাহিনীর ক্যাপ্টেন আজিজের সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকায় বিভিন্ন সময় জোর করে নারীদের পাঠানো হতো পাকিসত্মানি ক্যাম্পে। ‘পাঁচ তহবিলে’র সদস্যরা হলেন, দানেশ মোলস্না, মোছলেম মাওলানা, আব্দুল করিম, আজাহার তালুকদার ও সেকান্দার।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সাঈদীর অপকর্ম সম্পর্কে মানিক পশারী বলেন, একাত্তরে সালের ৮ মে সাঈদী আমার চোখের সামনে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। টাকা-পয়সা সব কিছু লুটে নিয়েছে। এসময় তিনি তার ঘরের পোড়া অংশ এবং টিনের গায়ে লেগে থাকা গুলির চিহ্ন দেখান। তারা যখন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তখন সাঈদী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই তাণ্ডবে উৎসাহ দিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম জানান, ১৯৭১ সালে এরা পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ী বেনিমাধব সাহা, নগরবাসী সাহা, তারক সাহা এবং উমিতপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ার চিত্তরঞ্জন তালুকদার, রবি তালুকদারসহ আরো অনেকের বাড়ি লুট করেছিল। এরাই বিনা বালীকে একাত্তরের ৪ জুন নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা করেছে।

পিরোজপুর জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতমনারায়ণ রায়চৌধুরী বলেন, বিএনপি আমলে সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নয় মর্মে স্বাক্ষর অভিযান শুরু করেছিল। আমি তখন মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম যাতে কেউ স্বাক্ষর না করে। এ বিষয়ে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা একেএমএ আউয়াল বলেন, সাঈদী যে যুদ্ধাপরাধী এর অনেক প্রমাণ আছে। জিয়ানগরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধকালীন সময় এই সাঈদী ছিল দেলোয়ার শিকদার।

মানিক পশারী পিরোজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলামের আদালতে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ এনে ১৩৫/০৯ নং ধারা ৩০২, ৩৮০, ৪৩৬ ও ৩৪ নং মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। অন্য তিন আসামি হলেন, মো. মহসীন, মমিন হাওলাদার ও হাকিম ক্বারী। মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদুরার ইব্রাহিম হাওলাদারকে ধরে হানাদার ক্যাম্পে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা অভিযোগ রয়েছে। এদিকে জিয়ানগর থানায় অনুরূপ আর একটি মামলা দায়ের করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহাবুবুল হাওলাদার। এই মামলার প্রধান আসামিও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। অন্য তিনজন হলেন- তার সহযোগী হিসেবে উলেস্নখিত মো. হাবীবুর রহমান মুনসি, মো. মোসত্মফা হাসান সাঈদী ও মাওলানা মোসলেউদ্দিন।

১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেলোয়ার শিকদার পিরোজপুর থেকে পালিয়ে যান। ১৯৮৫ সালের আগস্ট পর্যনত্ম তিনি পলাতক ছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×