পরিচয় পত্র
মাহমুদ দারবিশ
লেখ!
আমি একজন আরব
এবং আমার পরিচয়পত্রের নাম্বার হচ্ছে পঞ্চাশ হাজার
আমার আটটি সন্তান
এবং আগামী গ্রীষ্মের পর নবমটিও আসছে
তুমি কি রাগান্বিত হচ্ছ?
লেখ!
আমি একজন আরব
সহকর্মী শ্রমীকদের সাথে পাথর কোয়ারীতে কাজ করি
আমার আটটি সন্তান
আমি ওদের রুটি, কাপড় ও বইয়ের যোগান দেই
পাথর থেকে......
আমি তোমার দোয়ারে সাহায্যের জন্য দাঁড়াইনা
অথবা তোমার অফিসে পা রেখে নিজের মর্যাদা হানী করিনা
অতএব তুমি কি রাগান্বিত হবে?
লেখ
আমি একজন আরব
আমার একটি নাম আছে পদবিবিহীন
একটি দেশের সহিষ্ণু বাসিন্দা
যেখানে মানুশগুলো ক্রুদ্ধ।
সময়ের সৃষ্টির পূর্বেই প্রোথিত হয়েছিল
আমার শেকড়,
যুগ সুচনার পূর্বে,
পাইন এবং জলপাই বৃক্ষেরও আগে
যখন ঘন ঘাস জন্মায়নি।
আমার পিতা... একটি কৃষক পরিবার থেকে এসেছিলেন
কোন সুবিধাভোগী শ্রেণী থেকে নয়
এবং আমার পিতামহ ছিলেন একজন কৃষক
না ছিলেন উচ্চ বর্ণ, না সচ্ছল জন্ম!
আমাকে পড়তে শিখানোর আগেই সূর্যের অহঙ্কার শিখিয়েছিলেন।
এবং বাড়িটি প্রহরীদের ছাউনির মতো
বৃক্ষশাখা ও বেতের তৈরী
তুমি কি আমার স্ট্যাটাস সম্পর্কে সন্তুষ্ট?
আমার একটি নাম আছে পদবিবিহীন,
লেখ
আমি একজন আরব
তোমরা আমাদের আবাদি জমি
এবং আমার পূর্বপূরুষদের খামার চুরি করেছো
আমাদের সন্তান্দের যন্য তোমরা
এই পাথর ছাড়া কিছুই রেখে যাওনি
অতএব রাষ্ট্রকি তা গ্রহণ করবে?
যা বলা হলো?
সুতরাং
প্রথম পৃষ্ঠার উপরের দিকে লেখঃ
আমি জনতাকে ঘৃণা করিনা
পরের সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপও করিনা
কিন্তু আমি যিদি ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ি
দখলদারদের মাংসই হবে আমার খাদ্য
সাবধান...
সাবধান...
আমার ক্ষুধায়
এবং আমার ক্রোধে।
আমি সবসময়ই যারা দেশের পক্ষে কিছু করে বা করতে চায় তাদের ভালোবাসি। মাহমুদ দারবিশের এই কবিতাটি আমার খুব ভালো লাগে।
ভাষান্তর করেছেন জামাল উদ্দিন বারী, নয়া দিগন্তে ২০০৮ সালের অগাষ্ট মাসের কোন একদিন প্রকাশিত হয়েছিলো এটি। আমি ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৮